খুলনা | শনিবার | ১৭ মে ২০২৫ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পুলিশের হাতে মরণাস্ত্র না রাখার সিদ্ধান্তে দ্রুত বাস্তবায়ন কাম্য

|
১২:৪৮ এ.এম | ১৫ মে ২০২৫


পুলিশের হাতে চায়নিজ রাইফেল, সাবমেশিনগান, ৯ এমএম পিস্তলের মতো মারণাস্ত্র না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের (আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন) কাছে। পুলিশ তাদের কাছে থাকা মারণাস্ত্র জমা দেবে। সোমবার আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির নবম সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। পুলিশের হাতে কোন্ কোন্ ধরনের অস্ত্র রাখা যাবে, কীভাবে তা কাজ করবে, সেসব বিষয়ন্তুুুুুুুঠক করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র না রাখার সিদ্ধান্ত যৌক্তিক বলে মনে করি আমরা। উলে­খ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আ’লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন মহল থেকে পুলিশের হাতে প্রাণঘাতী অস্ত্র না রাখার দাবি ওঠে। গত ফেব্র“য়ারিতে অনুষ্ঠিত ডিসি সম্মেলনেও একাধিক জেলা প্রশাসক পুলিশের হাতে এ ধরনের অস্ত্র না রাখার সুপারিশ করেছিলেন। 
পুলিশের প্রধান দায়িত্ব হলো নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, ভীতি সৃষ্টি করা নয়। মারণাস্ত্র নিয়ে টহল দিলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কবোধ করতে পারে এবং পুলিশের প্রতি তাদের আস্থা কমে যেতে পারে। তাছাড়া পুলিশ যখন সহজেই মারণাস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, তখন তারা অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় বা অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে থাকে, বিশেষ করে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ বা গ্রেফতারের সময়। এতে অনাকাক্সিক্ষত প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে, গত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালে যা আমরা দেখেছি। অনেক সময় পুলিশ সন্দেহবশত নিরপরাধ কাউকে ধরে ফেলে। মারণাস্ত্র থাকলে এর পরিণতি মারাত্মক হতে পারে, এমনকি নিরপরাধ ব্যক্তিটি প্রাণ হারাতেও পারেন। তাই পুলিশের হাতে নন-লেথাল (অমারণাস্ত্র) অস্ত্র থাকাই যথেষ্ট, যেমন-টেজার, পিপার স্প্রে, রাবার বুলেট ইত্যাদি। এছাড়া তাদের আত্মরক্ষার কৌশলের প্রশিক্ষণ থাকাও জরুরি। এগুলোর মাধ্যমে প্রাণঘাতী ক্ষতির আশঙ্কা ছাড়াই অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
গণতান্ত্রিক সমাজে পুলিশ বাহিনী হওয়া উচিত জনগণের সেবক, শাসক নয়। মারণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত পুলিশ বাহিনী অনেক সময় সামরিক বাহিনীর মতো আচরণ করে, যা গণতান্ত্রিক মানসিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাই পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র না রাখার সিদ্ধান্তের দ্রুত বাস্তবায়ন কাম্য।