খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২২ মে ২০২৫ | ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মণিরামপুরে ভূমি অফিসে দুদকের অভিযান ফেঁসে যেতে পারেন ভূমি কর্মকর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর |
১২:৫৭ এ.এম | ২২ মে ২০২৫


যশোরের মণিরামপুর নেহালপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার এ অভিযান চালায় দুদক যশোরের একটি টিম।
অভিযানে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ মলি­কের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে যশোর জেলা দুদকের সমন্বিত (এনফোর্সমেন্ট) টিম। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে দুদকের মহাপরিচালক বরাবর প্রতিবেদন পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন দুদক যশোরের সহকারী পরিচালক আল আমিন হোসেন।
অভিযোগে জানা যায়, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ মলি­কের গ্রামের বাড়ি মণিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়নের গাবরডাঙ্গা গ্রামে। অভিযোগ রয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সাবেক স্থানীয় সরকার পল­ী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের আস্থাভাজন হওয়ায় এলাকায় বিঞ্চুপদ মলি­কের ছিল বেশ আধিপত্য। ফলে তিনি কোনো নিয়মনীতির ধার ধারতেন না। জমির খাজনা দিতে গেলে তাকে প্রতি শতাংশ জমির জন্য একশ টাকা হারে ঘুষ দিতে হতো। ঘুস ছাড়া তার কাছ থেকে এলাকার অধিকাংশ লোক কোনো সেবা পাননি। টাকা দিলেই সব অনিয়ম তিনি নিয়মে পরিণত করে থাকেন। দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে মনোহরপুর ইউনিয়নের খাকুন্দি গ্রামের মৃত কিংকর সরকারের একমাত্র মেয়ে জয়ত্রী রানী সরকারের ওয়ারিশ বাদ দিয়ে সুফল নামে এক ব্যক্তির নামে প্রায় দুই বিঘা জমি নাম পত্তন করে দেন বিষ্ণুপদ মলি­ক।
নেহালপুর ইউনিয়নের বালিধা গ্রামের নুর মোহাম্মদ গাজী পাঁচ শতক জমির ওপর পাকাবাড়ি নির্মাণ করে দুই ছেলে কামরুজ্জামান ও মঈনুল ইসলামকে নিয়ে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু বাড়িসহ জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিবাদ দেখা দেয়। একপর্যায়ে তারা আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালতের নির্দেশে দুই ভাইয়ের দখলস্বত্ব নিয়ে প্রতিবেদন দিতে দায়িত্ব দেওয়া হয় সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ মলি­ককে। কিন্তু ছোট ভাই মঈনুল ইসলাম অভিযোগ করেন, দেড়লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে বিষ্ণুপদ বড় ভাই কামরুজ্জামানের পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
অপরদিকে, আলাল উদ্দিন নামে এক ভুক্তভোগীর কাছে জমির নাম পত্তনের জন্য ৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন বিষ্ণুপদ মলি­ক। কিন্তু ঘুষের টাকা না দেওয়ায় তার নাম পত্তন এখনও হয়নি। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কাজে সহায়তার জন্য একজন আউটসোর্সিংয়ের লোক নেওয়ার কথা থাকলেও বিষ্ণুপদ নিয়েছেন চারজন।
অভিযোগ রয়েছে, এসব আউটসোর্সিংয়ের লোক দিয়ে তিনি এলাকার ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ঘুষের টাকা আদায় করতেন।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক সমন্বিত যশোরের এনফোর্সমেন্ট টিমের সদস্যরা বুধবার দুপুরে নেহালপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অভিযান চালিয়ে অধিকাংশ অভিযোগের সত্যতা পান।
অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন দুদক যশোরের সহকারী পরিচালক আল-আমিন হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক কৃষ্ণপদ বিশ্বাস, তাওহিদুল ইসলামসহ অন্যান্যরা।