খুলনা | শনিবার | ২৪ মে ২০২৫ | ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তুরস্কে ফের ধরপাকড়, ৬৫ সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফতার

খবর প্রতিবেদন |
০৫:১৪ পি.এম | ২৩ মে ২০২৫


তুরস্কে বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ফেতুল্লাহ গুলেন সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ফের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে শুক্রবার সকালে ৬৫ জন সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গুলেনকে ২০১৬ সালের ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে দায়ী করে আসছে আঙ্কারা।

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর ৫৬ জন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আরও সাতজন পলাতক রয়েছেন।

অন্যদিকে হালক টিভি জানায়, ইস্তাম্বুলসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ৯ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আনাদোলুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘ইস্তাম্বুলকে কেন্দ্র করে ৩৬টি প্রদেশে চালানো অভিযানকালে ৬৩ জন সক্রিয় সেনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়, যার মধ্যে ৫৬ জনকে ইতোমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে’।

হালক টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে এই অভিযান শুরু হয়। যার আওতায় বিমান বাহিনী, জেন্ডারমারি, স্থল ও নৌবাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল তথাকথিত ‘FETO’ – অর্থাৎ ফেতুল্লাহ সন্ত্রাসী সংগঠন। এই এফইটিও বলতে তুরস্ক সরকার গুলেনের হিজমেত আন্দোলনকে চিহ্নিত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা ফেতুল্লাহ গুলেন একটা সময় প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। তবে পরে তাদের সেই সম্পর্ক চরম তিক্ততায় পৌঁছায় এবং গুলেনকে ২০১৬ সালের ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে দায়ী করে তুর্কি সরকার।

গুলেন ২০২৪ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুবরণ করেন। যদিও তিনি জীবনভর অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে গেছেন।

গুলেনের মৃত্যুর পরও তুরস্ক সরকার ঘোষণা করে যে, তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযান ‘বিশ্বজুড়ে অব্যাহত থাকবে’।

২০১৬ সালের অভ্যুত্থানচেষ্টার পর থেকে তুর্কি সরকার লক্ষাধিক সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক, বিচারক, সেনা এবং পুলিশকে গ্রেফতার বা বরখাস্ত করেছে। এরদোগান প্রশাসনের দাবি, এসব কর্মচারী গুলেনপন্থি ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন।

তবে সমালোচকরা মনে করেন, এ অভিযান অনেকাংশেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তুর্কি সরকার একে বিরোধী কণ্ঠ দমন করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

সর্বশেষ এই গ্রেফতারের ঢেউ দেখায় যে, গুলেনের মৃত্যুর পরেও তার আন্দোলনের ওপর তুর্কি সরকারের দমননীতি কোনোভাবেই শিথিল হয়নি।