খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৯ মে ২০২৫ | ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সংস্কার-নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা হলে সংশয় কেটে যাবে : জামায়াত

খবর প্রতিবেদন |
১১:৩৩ পি.এম | ২৪ মে ২০২৫


নির্বাচন কবে হবে, সেটা স্পষ্ট করা দরকার বলে মনে করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে জনগণের বড় ধরনের ভোগান্তি ছাড়া একটি স্বস্তিজনক সময়ে নির্বাচন হতে পারে। দলের আমির ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, সংস্কার-নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা হলে সংশয় কেটে যাবে।
শনিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে জামায়াতের আমির এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন সময় আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন।
এর আগে শনিবার রাত ৮টার দিকে জামায়াতের আমির ডাঃ শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির ডাঃ সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করেন। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রেস ব্রিফিং করেন।
জামায়াতের আমির মনে করেন, সময়টি কখন, সেটির একটি রোডম্যাপ (পথনকশা) দরকার। পাশাপাশি সংস্কারেরও রোডম্যাপ প্রয়োজন। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান হতে হবে। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে সেটা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না। আবার সব সংস্কার এই সরকার করতে পারবে না। মাত্র পাঁচটি সংস্কারে সরকার হাত দিয়েছে। সেগুলো সন্তোষজনক ভাবে নিষ্পত্তি হওয়া উচিত।
শফিকুর রহমান বলেন, সবাই এগিয়ে এলে অর্থবহ সংস্কারের মধ্য দিয়ে অর্থবহ নির্বাচন হতে পারে। সবাই সেই দিনের অপেক্ষায়।
সমাজে যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল, আপাতদৃষ্টিতে কিছুটা কেটেছে উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, জামায়াত এর স্থায়ী নিষ্পত্তি চায়। দু’টি রোডম্যাপ ঘোষণা করলেই সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়ে যাবে সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ। এ দু’টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে কিছুটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। তার ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের একটা বৈঠক হয়। সেই বৈঠক থেকে প্রধান উপদেষ্টা একটি মেসেজ জাতিকে দিতে চেয়েছিলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) সেটা দেননি। কিন্তু এটা খুব দ্রুত সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। যে কারণে এক ধরনের আশঙ্কা বিরাজ করে। আমরা সেটাকে আমলে নিয়েছি। একই সময়ে একজন রাজনৈতিক নেতা তার জনপ্রতিনিধিদের দাবি নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। আরেক জায়গায় অন্যরা গুরুত্বপূর্ণ দাবি নিয়ে অবস্থান নিয়েছে। সব মিলিয়ে বিষয়টা কিছুটা কষ্টের ও বিরক্তির। যে কারণে তিনি তার দায়িত্বের ব্যাপারে বিবেচনা করবেন এমনটি প্রকাশ করেছিলেন।
ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, দেশ ভালো থাকলে আমরা সবাই ভালো থাকবো। দেশে একটা পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু এই পরিবর্তনে এখন যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে সরকারের তাদের পরিচয় হলো তারা কোনো দলকে ধারণ করবে না। এটাই হওয়া উচিত নয়। আমাদের সবার দাবি ছিল অর্থবহ একটি সংস্কার হবে। এই সংস্কার ও বিচারের মধ্য দিয়েই একটা অর্থবহ নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনের সুস্থ মাঠ থাকবে, যারা অংশগ্রহণ করবে তারা ষড়যন্ত্রের শিকার হবে না, পেশী শক্তির প্রবণতা থাকবে না। সাড়ে ১৫ বছর জনগণ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে, এবার তারা ভোট দিতে পারবে সেটা নিশ্চিত হবে এটাই ছিল আমাদের দাবি।
তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে কয়েকবার বলেছেন, নির্বাচন তিনি দিতে চান এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ দেননি। দিন মাস ঘোষণা করেননি এটাকে কেন্দ্র করে। আমরা বলেছি, দু’টি বিষয় স্পষ্ট করা দরকার- গ্রহণযোগ্য সংস্কার হতে হবে, এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। আমরা মনে করি, সংস্কার ও নির্বাচনী রোডম্যাপের ঘোষণা হলে অনেকটাই সংশয় কেটে যাবে।
নির্বাচন নিয়ে কী আলাপ হয়েছে, এমন প্রশ্নে জামায়াতের আমির বলেন, আমরা শুধু নয়, সবাই সংস্কারের পর নির্বাচন চায়। তবে আমরা সময় বেঁধে দিইনি। সংস্কার শেষ হলে আগামী ফেব্র“য়ারির মধ্য কিংবা তা না হলে রোজার পরপরই হতে পারে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির জানান, তাঁরা কোনো উপদেষ্টার পদত্যাগ চাননি।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের আমিরের সঙ্গে ছিলেন নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। এ ছাড়া জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।