খুলনা | সোমবার | ২৬ মে ২০২৫ | ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চার সীমান্ত দিয়ে আরও ১৫৩ জনকে পুশইন বিএসএফ’র

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪৪ এ.এম | ২৬ মে ২০২৫


সিলেটের বিয়ানীবাজার, মৌলভীবাজারের বড়লেখা ও মেহেরপুরের মুজিবনগরসহ চার সীমান্ত এলাকা দিয়ে আরও ১৭২ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এর মধ্যে বিয়ানীবাজার ও বড়লেখার তিন সীমান্ত দিয়ে পুশইন করা হয়েছে নারী-শিশুসহ ১৫৩ জনকে। মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ১৯ জনকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তাদের সবাইকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিজিবি আটক করে হস্তান্তর করেছে পুলিশের কাছে। গত ৪ মে থেকে রোববার পর্যন্ত বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মোট ৬৪৬ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিল বিএসএফ। 
বিয়ানীবাজারের নয়াগ্রাম সীমান্তে রোববার ভোরে ৩২ জনকে সীমান্তের ৫৩৮ একর অমীমাংসিত ভূমির একটি বিলে ছেড়ে দেয় বিএসএফ। তাদের মধ্যে রয়েছেন ৯ জন পুরুষ, ৯ জন নারী ও ১৪ জন শিশু। ভোরে বিজিবির টহল দল ও স্থানীয়রা তাদের দেখতে পেয়ে আটক করে নয়াগ্রাম প্রগতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে আসেন। সেখানে তাদের পরিচয় শনাক্ত করার পর বিয়ানীবাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়। 
বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের বিয়ানীবাজার সদর দপ্তর সূত্র জানায়, একই ভোরে উপজেলার বড়লেখার লাতু বিওপি এলাকায় ৭৯ জন এবং পাল­াথল বিওপি এলাকায় আরও ৪২ জনকে পুশইন করে বিএসএফ। এর মধ্যে লাতু সীমান্তে আটক ৭৯ জনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন, নারী ১৯ জন এবং শিশু ২০ জন এবং পাল­াথল সীমান্তে আটক ৪২ জনের মধ্যে রয়েছেন পুরুষ ২৪ জন, নারী ১৬ জন ও শিশু ১৭ জন। তাদের বড়লেখা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়ন বিয়ানীবাজারের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান বলেন, আটক ১৫৩ জনের সবাই বাংলাদেশি। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের কাঁটাতারের পাশঘেঁষা শূন্য রেখার একটি বিলে ছেড়ে দেয় বিএসএফ। আটক বেশির ভাগের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়।
একই দিন মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১৯ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ। ভোরে উপজেলার সোনাপুর মাঝপাড়া সীমান্ত দিয়ে তাদের পুশইন করা হয়। এই ১৯ জন সীমান্ত পার হয়ে উপজেলার কেদারগঞ্জ বাজারে অবস্থান করার খবর পেয়ে মুজিবনগর থানা পুলিশ তাদের আটক করে হেফাজতে নেয়। খবর পেয়ে মুজিবনগর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা সেখানে যান। আটকদের মধ্যে পুরুষ ৯ জন, শিশু ৫ জন ও নারী ৫ জন। তারা সবাই বাংলাদেশি বলে জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আটককৃতরা হলেন কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী থানার কাঠগিরি গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে মোমেনা খাতুন, মোজাম্মেল হক, মোস্তাক আহমেদ ও কাবিল; কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার জয় মঙ্গল, মাথা গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে মইনুল ইসলাম, স্ত্রী কাঞ্চন ও ছেলে কারণ, রবিউল এবং মেয়ে মরিয়ম; লালমনিরহাট সদর থানার চুঙ্গগাড়া গ্রামের মৃত গণেশ চন্দ্র পালের ছেলে নিতাই চন্দ্র পাল, তাঁর স্ত্রী গীতা রানী পাল, মেয়ে পার্বতী পাল, পূজা রানী পাল ও আরতী পাল; কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার কুঠিচন্দ্রখানা গ্রামের মোঃ খলিলের ছেলে আমিনুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রী পারুল, দুই মেয়ে আমেনা ও আরফিনা। আটকরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তারা বিভিন্ন সময় কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন। 
মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, অবৈধ ভাবে সীমান্ত অতিক্রম করায় বিজিবি আটকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাদের রোববার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত প্রাপ্তবয়স্কদের জেলা হাজতে পাঠাতে এবং শিশুদের সার্বিক বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সমাজসেবা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন।