খুলনা | শনিবার | ০৭ জুন ২০২৫ | ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যে বৈষম্যহীন সমাজের জন্য আন্দোলন তার প্রতিফলন নেই বাজেটে: আমির খসরু

খবর প্রতিবেদন |
০২:২০ পি.এম | ০৪ জুন ২০২৫


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সাধারণের জীবনযাত্রার মান মাথায় রেখেই বাজেট নির্ধারণ করা উচিৎ। যেই বৈষম্যহীন সমাজের জন্য আন্দোলন হয়েছে তার প্রতিফলন বাজেটে নেই।

আজ বুধবার (০৪ জুন) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, দল ক্ষমতায় আসলে শিক্ষায় সব ধরনের কর মওকুফ করা হবে। পূর্বের সরকারের মতো কাগুজে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দেয়া বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক।

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকায় বিনিয়োগকারীরা আস্থা পাচ্ছেন না বিনিয়োগ করতে- এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশাল সুদের সাথে অতিরিক্ত কর ও শুল্ক শিল্পে চাপ সৃষ্টি করবে। অনলাইন ব্যবসায় শুল্ক বাড়ানোতে চাপ বাড়বে উদ্যোক্তাদের ওপর।

তিনি আরও বলেন, সরকার ব্যাংক খাতের ওপর বেশি নির্ভরশীল। আর কর ফাঁকি দেয়াদের পুরষ্কৃত করা, দুর্নীতিগ্রস্ত প্রকল্প বন্ধ বা পরিবর্তনের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই বাজেটে।

বিএনপি সরকার গঠন করলে ১৮০ দিনের পরিকল্পনা নেবে এবং নির্বাচনের আগেই ১৮০ দিনের পরিকল্পনা তুলে ধরবে বিএনপি বলেও জানান তিনি।

প্রাথমিকপর্যায় থেকে বহুভাষা ও কৃষ্টি অন্তর্ভুক্ত এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব দেয়া হবে এ কথা জানিয়ে তিনি আবারও বলেন, কলকারখানার সাথে শিক্ষা কার্যক্রমের সম্পর্ক তৈরি করা হবে। ক্যাম্পাস থেকেই ব্যবসায়ীক আইডিয়া নিয়ে কাজ করা হবে।

চিকিৎসাসেবা ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধে গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে-যেমন প্রাইমারি হেলথ কেয়ারকে কার্যকর করা হবে। ফ্যামিলি কার্ড চালু করে নারীর ক্ষমতায়ন করা হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও বিগত ১৬ বছরে শহীদদের জন্য সরকারি স্থাপনার নামকরণ ও আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। কৃষি খাতকে রপ্তানিমুখী করার কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে চাঁদাবাজি এবং ফ্যাদিবাদের রেখে যাওয়া সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি করতে ২.৫ শতাংশ জিডিপিতে নিয়ে যেতে চায় বিএনপি। আওয়ামী দুঃশাসনে বন্ধ হয়ে যাওয়া কল কারখানা চালুতে উদ্যোগ নেয়া হবে।

ডিজিটাল প্রযুক্তিকে সর্বস্তরে নিয়ে যাবে এ তথ্য জানিয়ে বিএনপির এ নেতা জানান বাংলাদেশে ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অফিস খোলার উদ্যোগ নেবে। ফ্রিল্যান্সিংকে উৎসাহিত করতে জেলাপর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিনিয়োগে উৎসাহ দিতে প্রণোদনা দেয়া হবে, দক্ষ জনগোষ্ঠী বিদেশে রফতিানি করতে স্কিল ডেভেলপমেন্টে কাজ করা হবে।

তিনি বলেন, ঢাকায় নারী যাত্রীদের জন্য বাস চালু হবে। ড্রাইভার এবং সহযোগীও নারী রাখা হবে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে এআইকে কাজে লাগানো হবে। ট্রাফিক জ্যাম কমাতে উদ্যোগ নেয়া হবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ৫ বছরে ২৫ থেকে ৩০ কোটি বৃক্ষরোপণ করা হবে এছাড়াও গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগ নেয়া হবে।

বিচার ব্যবস্থা নিয়ে আমির খসরু জানান, বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান ঘটানো হবে। পুলিশের মনোবল বৃদ্ধিতে ট্রেনিংসহ অন্যান্য উদ্যোগ নেয়া হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা বিএনপির প্রধান অঙ্গীকার। প্রথম ১৮০ দিনে ১ কোটি মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। বিএনপির প্রতিটি সরকারের সময় ২ থেকে ৩ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে ৮ শতাংশে নিয়ে যাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি।

ক্ষমতায় গেলে ১০ খাতকে জোর দেবে বিএনপি সেগুলো-
* বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে বহুমুখী কৌশল গ্রহণ করবে বিএনপি সরকার

* স্টার্টআপদের জন্য সুবিধা নিশ্চিত করা হবে

* টেকসহ অর্থনীতির জন্য সাহসী সংস্কার প্রয়োজন

* ক্ষুদ্র মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণের শর্ত কমানো হবে

* ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রি গড়বে বিএনপি

* পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ গড়ে তোলা হবে

* স্বৈরাচারের সময়কার সকল ঋণ তদন্তে জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে স্বাধীন কমিশন গঠনের আহ্বান জানানো হবে

* কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে

*পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হবে

* পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা। এছাড়া দেশের উন্নয়নে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।