খুলনা | শনিবার | ১৪ জুন ২০২৫ | ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিশ্বের ইতিহাসে ভয়াবহ ১০ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৯ এ.এম | ১৩ জুন ২০২৫


বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ভ্রমণ ও পণ্য পরিবহনের দ্রুততম মাধ্যম উড়োজাহাজ। সাধারণত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে উড়োজাহাজ ভ্রমণ তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে নিরাপদ বলে মনে করা হয়। তবে উড়োজাহাজও মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। কখনো দুর্ঘটনা ঘটলে যাত্রী ও ক্রুদের প্রাণহানিও হয় বেশি। বিশ্বের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ ১০টি দুর্ঘটনার তথ্য নিচে কুলে ধরা হলো।
১. টেনেরিফ দুর্ঘটনা : বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা ঘটেছিল ১৯৭৭ সালের ২৭ মার্চ। স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের টেনেরিফ বিমানবন্দরে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। নির্দেশনা নিয়ে বিভ্রান্তি এবং রেডিও যোগাযোগে বিঘœ হওয়ায় এই দুর্ঘটনা হয়। ওই দিন বেশ কুয়াশা ছিল। এ কারণে রানওয়েতে ডেনমার্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন দু’টি বোয়িং উড়োজাহাজের সংঘর্ষ হয়। এতে ৫৮৩ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। তবে প্রাণে বেঁচে যান ৬১ জন।
২. জাপান : বিশ্বের ইতিহাসে আরেকটি ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা ঘটে ১৯৮৫ সালের ১২ আগস্ট। জাপানের ইউয়েনো এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে গিরিখাতে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। এতে মারা যান ৫২০ জন। জীবিত ছিলেন মাত্র চারজন।
৩. দিল্লি­ : ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর ভারতের দিলি­র কাছে ঘটে আরেকটি উড়োহাজ দুর্ঘটনা। হরিয়ানা রাজ্যের চরকি দাদড়ি এলাকায় মাঝ-আকাশে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছিল।
ওই দিন সৌদি এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজের সঙ্গে কাজাখস্তান এয়ারলাইনসের আরেকটি উড়োজাহাজের মধ্য আকাশে সংঘর্ষ হয়। এতে মারা যান ৩৪৯ জন। নির্দেশনা লঙ্ঘন করার কারণে এ ঘটনা ঘটে। ১৯৭৪ সালের ৩ মার্চ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের বাইরের একটি এলাকায় টার্কিশ ডিসি-১০ উড়োজাহাজের পেছনের কার্গো এলাকার দরজা ভেঙে পড়ে। ১৯৭৪ সালের ৩ মার্চ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের বাইরের একটি এলাকায় টার্কিশ ডিসি-১০ উড়োজাহাজের পেছনের কার্গো এলাকার দরজা ভেঙে পড়েফাইল ছবি: এএফপি
৪. প্যারিস : ১৯৭৪ সালের ৩ মার্চ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের বাইরের একটি এলাকায় আরেকটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে।
ওই দিন টার্কিশ ডিসি-১০ উড়োজাহাজের পেছনের কার্গো এলাকার দরজা ভেঙে পড়ে। এতে ৩৪৬ আরোহীর সবাই মারা যান। ওই দুর্ঘটনার পর উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান তাদের কার্গোর নকশায় পরিবর্তন আনে।
৫. এয়ার ইন্ডিয়া : ১৯৮৫ সালের ২৩ জুনের ঘটনা। আটলান্টিক মহাসাগরের আয়ারল্যান্ড উপকূলে সম্ভাব্য শিখ জঙ্গিদের বোমায় উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। এতে মারা যান উড়োজাহাজের ৩২৯ আরোহীর সবাই। তাঁদের মধ্যে ২৬৮ জনই ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক।
৬. সৌদিয়া ফ্লাইট ১৬৩ : ১৯৮০ সালের ১৯ আগস্টের ঘটনা। পাকিস্তানের করাচি বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের রিয়াদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে জেদ্দায় যাচ্ছিল উড়োজাহাজটি। রিয়াদে উড্ডয়নের পরই উড়োজাহাজটিতে আগুন লেগে যায়। মারা যান ৩০১ আরোহীর সবাই। ওই উড়োজাহাজ ছিল লকহিড এল-১০১১ ট্রাইস্টার মডেলের।
৭. ইরান এয়ার : ১৯৮৮ সালের ৩ জুলাইয়ের ঘটনা। পারস্য উপসাগরের আকাশে ইরান এয়ারের একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ গুলি করে ভূপাতিত করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে মারা যান ২৯০ আরোহীর সবাই। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছিল, ভুল করে ওই গুলি করা হয়।
৮. ইরানের ইলিউশিন বিমান : ২০০৩ সালের ১৯ ফেব্র“য়ারির ঘটনা। ঘটনাস্থল ইরানের কেরমান এলাকা। খারাপ আবহাওয়ার কারণে বিধ্বস্ত হয় প্রভাবশালী বিপ্লবী গার্ড সদস্যদের বহনকারী উড়োজাহাজটি। মৃত্যু হয় ২৭৫ আরোহীর।
৯. আমেরিকান এয়ারলাইনস : ১৯৭৯ সালের ২৫ মের ঘটনা। ঘটনাস্থল শিকাগো। বাঁ পাখা থেকে একটি ইঞ্জিন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিধ্বস্ত হয় উড়োজাহাজটি। মারা যান ২৭৩ আরোহীর সবাই।
১০. কোরিয়ান এয়ারলাইনস : ১৯৮৩ সালের ১ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। ঘটনাস্থল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের মনোরন দ্বীপ। সোভিয়েত বাহিনী গুলি করে ভূপাতিত করে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটি। মারা যান ২৬৯ আরোহীর সবাই।