জলবায়ু ও পরিবেশ গবেষক ড. মোঃ রোকনুজ্জামান অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের কাছ থেকে প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলায় তার নিজ বাড়িতে। এ ঘটনায় রোববার তিনি দেবহাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
জিডিতে বলা হয়, গত ১০ জুন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তার বাড়ির সামনে একটি সাদা খামে রাখা হুমকিসূচক চিরকুট ফেলে রেখে যায় এক অজ্ঞাত ব্যক্তি। চিরকুটে লেখা ছিল: “জলবায়ু নিয়ে লেখালেখি বন্ধ করো। না করলে মৃত্যুর চেয়েও ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে।” ডাঃ রোকনুজ্জামান পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের DVM  প্রোগ্রামের চূড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থী। একইসঙ্গে তিনি Amnesty International, EarthDay.Org ও Red Crescent Society –এর সক্রিয় সদস্য এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। স¤প্রতি তিনি থাইল্যান্ডের Maha Sarakham University-এর আমন্ত্রণে একাডেমিক সফর শেষে দেশে ফেরেন। চলতি বছরের ১১ ফেব্র“য়ারি জাতীয় দৈনিক Daily Sun-এ তার লেখা “Climate Change and Biodiversity: A Growing Global Concern’’ শীর্ষক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। সেখানে শিল্পায়ন, পরিবেশ ধ্বংস এবং রাজনৈতিক নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে সরাসরি কথা বলায় তিনি ধারাবাহিকভাবে হুমকির শিকার হয়ে আসছেন ফোন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ডাকযোগে।
ডাঃ রোকনুজ্জামানের বড় ভাই সরদার হাসান ইলিয়াস তানিম একজন মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক, যিনি ২০১১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। ওই ঘটনায় ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মামলা  দায়ের করেন, যেখানে রাবি’র সাবেক প্রো-ভিসি ও ছাত্রলীগের প্রভাবশালী  ৯ নেতার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। এ মামলার পরপরই পরিবারটি নতুন করে হুমকি পেতে থাকে। তানিম ২০২৩ সালে শেখ হাসিনার শাসনামলে একটি  প্রভাবশালী গ্র“প ও বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার রোষানলে পড়ে দেশ ত্যাগে বাধ্য হন। এর আগে ২০১৩ সালে রোকনুজ্জামানের আরেক ভাই মাসুম বিল­াহ ‘ক্রসফায়ারের’ শিকার হন এবং ২০২৪ সালে ‘জুলাই বিপ্লব’-এর সময় রোকনুজ্জামানকেও যৌথ বাহিনী গ্রেফতার করে।
দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কিবরিয়া হাসান বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত চলছে। ডায়েরির ভিত্তিতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।