খুলনা | সোমবার | ১৬ জুন ২০২৫ | ২ আষাঢ় ১৪৩২

ভোটের তারিখ নির্ধারণ কবে, জানালেন সিইসি

‘ব্যালট বাক্স লুট ও কেন্দ্র দখল হতে দেব না’

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪২ এ.এম | ১৬ জুন ২০২৫


আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালট বাক্স লুট ও কেন্দ্র দখল হতে দেবেন না বলে হুঁশিয়ার করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। সবাই সুন্দর নির্বাচন চায়, তাহলে আমাদের দ্বিধা-দ্ব›দ্ব কেন প্রশ্ন রাখেন তিনি। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলে তিনি।
সিইসি বলেন, কোনো দলীয় স্বার্থে নয়, নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করবেন, এটা কর্মকর্তাদের বলেছি আজ। জাতির উদ্দেশ্যে বলতে চাই, কেউ যদি মনে করেন ব্যালট বাক্স লুট করে নিয়ে যাবেন, কেন্দ্র দখল করে জিতে যাব, তারা দিবাস্বপ্নে আছে। এটা এবার হতে দেব না ইনশাআল­াহ। সবাই সুন্দর নির্বাচন চায় বলছে। তাহলে আমাদের দ্বিধা-দ্ব›দ্ব কেন। কিছু লোক আছে যারা মতলববাজ, নির্বাচন এলে পথ থেকে ভোটারদের সরিয়ে দেবে, ভোট বাক্স লুট করে নিয়ে যাবে, সেই সুযোগ এবার পাবে না। এটার আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি।
নাসির উদ্দিন বলেন, জাতীয় নির্বাচনের যে বিষয়টি এসেছে, যখন ই হোক; ফেব্র“য়ারিতে হোক, এপ্রিলে হোক আমাদের তো প্রস্তুত থাকতে হবে। আগে ডিসেম্বর থেকে জুনের কথা বলা হয়েছিল। এখন আবার নতুন ডাইমেনশন আসছে। লন্ডনে যে ঘোষণা হয়েছে আপনারা যতটুকু জানেন আমিও ততটুকু জানি। ভেতরে কি হয়েছে তা জানি না। আমার কাছে আনসাইন একটা কপি এসেছে, সেটাও কতটুকু তা তো জানি না। ইতিহাসের পেছনেও ইতিহাস থাকে। আলাপের পেছনেও আলাপ থাকে। ঘোষণা একটা হয়েছে, যদি সত্যি হয়ে থাকে, এখন এক-দেড় ঘণ্টার আলোচনা হয়েছে, শুধু একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে বোঝা সম্ভব না। কাজেই সেগুলো আমাদের জানতে হবে। আমাদের নিরাপত্তা উপদেষ্টা একটা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে ইসি হয়ত একটা ডেট ঘোষণা করবে।
তিনি বলেন, নরমালি বিবেচনা করলে হবে না। এটা একটা বিশেষ পরিস্থিতি। বিশেষ পরিস্থিতি বিশেষ ধরনের সরকার। শাসনতন্ত্র যেটা আছে, সেটা হলে তো সংসদ ভেঙে যাওয়ার তিন মাসের মধ্যে করে ফেলতে পারতাম। যেহেতু এখন বিশেষ ধরনের সরকার, বিশেষ পরিস্থিতি, সরকার সংস্কারের বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে। এগুলো নিয়ে সরকারই আলোচনা করছে এখন পর্যন্ত। আমাদের ধারণা হচ্ছে, আশা করছিলাম যে সরকারের পক্ষ থেকে একটা তারিখ ঘোষণা হবে। সরকারের সঙ্গে আমাদের একটু কথাবার্তা হতে হবে কিন্তু নির্দেশনার জন্য নয়। আমরা কারো নির্দেশনায় কাজ করব না। এটা একদম পরিষ্কার। আমরা কারো হুকুমে, কারো নির্দেশনায়, পরিচালনায় আমরা কাজ করব না। এটুকু আজ আমাদের কর্মকর্তাদের বলেছি।
নির্বাচন কবে এটা কি সরকার থেকে নিশ্চিত করতে হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, এটা আমার কাছে পরিষ্কার নয়। আরপিওর ১১ ধারায় পরিষ্কার বলা আছে, নির্বাচন কমিশন গেজেটের মাধ্যমে তারিখ ঘোষণা করবে। ছয় মাস আগে অমুক তারিখে নির্বাচন হবে এটা বলার বিধান তো এখানে নেই।
নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের বুঝতে হবে পরিস্থিতিটা বিশেষ পরিস্থিতি। না হলে প্রধান উপদেষ্টা কি এতদিন ধরে দলগুলোর সঙ্গে এমনিই আলোচনা করছে। সবাইকে নিয়ে উনি নির্বাচন করতে চান, যাতে সুন্দর নির্বাচন হয়।
রোডম্যাপ কবে দেবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লন্ডনে যা আলোচনা হয়েছে এর বাইরে আমার কোনো নলেজ নেই। প্রধান উপদেষ্টা যেটা বলেছেন আমি মিডিয়ায় দেখেছি। সরকারের সঙ্গে আমাদের এখনো আলোচনা হয়নি। আমরা আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে ভাবছি, যখনই হয় যেন ভোট করতে পারি। সরকারের সঙ্গে আলোচনা হলে ভাব বুঝতে পারব কখন ডেট দিতে হবে।
সিইসি বলেন, আমরা কোনো টার্গেট ফিক্সড করিনি। যখন সরকারের সঙ্গে আলোচনা হবে তখন তারিখ নিয়ে আলাপ হবে। সরকারের পরিবর্তিত কোনো চিন্তাভাবনা আছে কি না, এটা জানতে হবে। রমজানের আগেও নির্বাচন হতে পারে। সরকারের সঙ্গে আলোচনা হলেই আমরা বুঝতে পারব। সরকারের থেকে ধারণা পেলে আমরা প্রস্তুত আছি। আমরা ডিসেম্বর থেকে জুন, প্রথম যখন সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, সেটা ধরেই প্রস্তুতি নিয়েছি।
নাসির উদ্দিন বলেন, ‘লন্ডনে যা আলোচনা হয়েছে, এর বাইরে আমার কোনো নলেজ নেই। প্রধান উপদেষ্টা যেটা বলেছেন আমি মিডিয়ায় দেখেছি। সরকারের সঙ্গে আমাদের এখনো আলোচনা হয়নি। আমারা আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে ভাবছি, যখনই হয় যেন ভোট করতে পারি। সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর বুঝতে পারব, কখন ডেট দিতে হবে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের যে বিষয়টি এসেছে, যখনই হোক, ফেব্র“য়ারিতে বা এপ্রিলে- আমাদের তো প্রস্তুত থাকতে হবে। আগে ডিসেম্বর থেকে জুনের কথা বলা হয়েছিল। এখন আবার নতুন ডাইমেনশন আসছে। লন্ডনে যে ঘোষণা হয়েছে আপনারা যতটুকু জানেন আমিও ততটুকু জানি। ভেতরে কী হয়েছে তা জানি না৷’
তিনি জানান, ‘আমার কাছে আনসাইন একটা কপি এসেছে, সেটাও কতটুকু তা তো জানি না। ইতিহাসের পেছনেও ইতিহাস থাকে। আলাপের পেছনেও আলাপ থাকে। ঘোষণা একটা হয়েছে, যদি সত্যি হয়ে থাকে, এখন এক-দেড় ঘণ্টার আলোচনা হয়েছে শুধু একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে বোঝা সম্ভব। কাজেই সেগুলো আমাদের জানতে হবে। আমাদের নিরাপত্তা উপদেষ্টা একটা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, ইসি হয়তো একটা ডেট ঘোষণা করবে।’
সিইসি বলেন, ‘নরমালি বিবেচনা করলে হবে না। এটা একটা বিশেষ পরিস্থিতি। বিশেষ ধরনের সরকার। শাসনতন্ত্র যেটা আছে, সেটা হলে তো সংসদ ভেঙে যাওয়ার তিন মাসের মধ্যে করে ফেলতে পারতাম। যেহেতু এখন বিশেষ ধরণের সরকার, বিশেষ পরিস্থিতি, সরকার সংস্কারের বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে আলোচনা করছে। বিচার হচ্ছে, সেটা যেন তরান্বিত হয়, সে আলোচনাও করছে সরকার। এখন এগুলো নিয়ে সরকারই আলোচনা করছে এখনো পর্যন্ত। আমাদের ধারণা হচ্ছে, আশা করছিলাম যে সরকারের পক্ষ থেকে একটা তারিখ ঘোষণা হবে। এখন লন্ডন বৈঠকের পর দায়দায়িত্ব কিছুটা আমাদের ওপরে। বিস্তারিত কিছু জানি না। সরকারের সঙ্গে আমাদের একটু কথাবার্তা না হলে, কোনো নির্দেশনার জন্য নয়। আমরা কারও নির্দেশনায় কাজ করব না। একদম এটা পরিস্কার। আমরা কারও হুকুমে, কারও নির্দেশনায় বা পরিচালনায় কাজ করব না। এটুকু আজকে আমাদের কর্মকর্তাদের বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘কোনো দলীয় স্বার্থে নয়, নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করবেন, এটা কর্মকর্তাদের আজ বলেছি। জাতির উদ্দেশ্যে বলতে চাই, কেউ যদি মনে করেন ব্যালট বাক্স লুট করে নিয়ে যাবেন, কেন্দ্র দখল করে জিতে যাবেন, তারা দিবাস্বপ্নে আছে। এটা এবার হতে দেব না ইনশাআল­াহ।’
সিইসি বলেন, ‘সবাই সুন্দর নির্বাচন চায়। তাহলে আমাদের দ্বিধা-দ্ব›দ্ব কেন। কিছু লোক আছে যারা মতলববাজ, নির্বাচন এলে পথ থেকে ভোটারদের সরিয়ে দেবে, ভোট বাক্স লুট করে নিয়ে যাবে, সেই সুযোগ এবার পাবে না।  এটা আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে পরিস্থিতিটা বিশেষ পরিস্থিতি। না হলে প্রধান উপদেষ্টা কি এতদিন ধরে দলগুলোর সঙ্গে এমনেই আলোচনা করতেছেন। সবাইকে নিয়ে উনি নির্বাচন করতে চান, যাতে সুন্দর নির্বাচন হয়।’
সিইসি বলেন, ‘আমরা কোনো লক্ষ্য ঠিক করিনি। যখন সরকারের সঙ্গে আলোচনা হবে, তখন তারিখ নিয়ে আলাপ হবে। সরকারি পরিবর্তিত কোনো চিন্তা ভাবনা আছে কিনা, এটা জানতে হবে। রমজানের আগেও নির্বাচন হতে পারে, যদিও এখানে যদি শব্দটাও বলেছেন। সরকারের সঙ্গে আলোচনা হলেই আমরা বুঝতে পারবো। সরকারের থেকে ধারণা পেলে আমরা প্রস্তুত আছি। আমরা ডিসেম্বর থেকে জুন, প্রথম যখন সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, আমরা সেটা ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মের ভোটাধিকারের সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবছি। তফসিল ঘোষণার সময় ভোটার তালিকা রেডি থাকতে হবে। এজন্য আইনে কিছুটা পরিবর্তন আনার কথা ভাবছি। যথাসম্ভব চেষ্টা করব তরুণ প্রজন্মকে যাতে যুক্ত করা যায়। তফসিল ঘোষণার সময় তরুণদের ভোটারযোগ্য হতে হবে।’
আগামী ২ জানুয়ারি যাদের ১৮ বছর হবে, তারা ভোট দিতে পারবে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ সংখ্যক তরুণদের সুযোগ দিতে চাই। পাশাপাশি সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সিরিয়াসলি কাজ করছি। ভোটার তালিকা নিয়েও কাজ চলছে। দল নিবন্ধনের আবেদন ২২ জুন পর্যন্ত নেওয়া হবে।’
জুলাই সনদের ওপর কি তফসিল নির্ভর করছে? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে তারিখ নির্ধারণ হলে তার দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস দলগুলো দেশপ্রেমিক, কিন্তু রাজনৈতিক কারণে অনেক কথা বলতে হয়। কর্মকর্তাদের বলেছি রাজনীতি সচেতন থাকবেন, কিন্তু রাজনীতি করবেন না। অনেক বাধা বিপত্তি আসবে। ফেরেশতা এনে দিলেও তো পক্ষে-বিপক্ষে থাকবে। বিরুদ্ধে বলতে তাই আহত হই না। কারণ কেউ সমালোচনা করলে বোঝা যায় কেউ বিচার করছে, নিজেদের শোধরানোর সুযোগ থাকে।’
সিইসি বলেন, ‘কোথায় জুন আর কোথায় ফেব্র“য়ারি। দূরত্ব তো অনেক কমে আসছে।’
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণায় সরকারের দিকে তাকিয়ে আছেন কিনা, প্রশ্নের জবাবে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সরকারের দিতে তাকিয়ে আছি তা তো বলিনি। আমরা যতই স্বাধীন হই, সরকারের সহযোগিতা তো লাগবে। সরকারের লোকজন লাগবে। সরকার প্রধানই বলছেন-আমি একটা সুন্দর ইলেকশন দেব। তার মানে কী, তার মানে উনার দায়দায়িত্ব তো আছে। সরকার ছাড়া তো আমরা চিন্তাই করতে পারি না। সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকা মানে ওই রকম না, ওনারা একটা আলোচনা করতেছেন তো। আলোচনার অগ্রগতি কী, ভিত্তি কী, চিন্তাভাবনা কী, এটা তো আমাকে বুঝতে হবে। শুধু টেলিভিশনে বা ভিডিও ক্লিপ দেখে তো সিদ্ধান্তে আসতে পারছি না। উনাদের গতি প্রকৃতি তো আমাকে বুঝতে হবে।’
সিইসি আরও বলেন, ‘তারিখটা নিয়ে তো আজ কত মাস, কত দিন যুদ্ধ চলছে। সরকার এটা নিয়েই তো দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে। সর্বশেষ বিএনপি’র সঙ্গে আলোচনা করেছে। কাজেই সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে হবে।’