খুলনা | রবিবার | ২২ জুন ২০২৫ | ৯ আষাঢ় ১৪৩২

অবশেষে ইরানে ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা আরবদের

খবর প্রতিবেদন |
০৬:২০ পি.এম | ২১ জুন ২০২৫


অবশেষে ইরানে ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছেন আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। একইসঙ্গে দ্রুত এই সামরিক উত্তেজনা থামানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তারা।

এছাড়া এই আগ্রাসনকে পুরো অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন আরবরা।

ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত (২১-২২ জুন) ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষদের ৫১তম অধিবেশনের ফাঁকে আরব লীগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জরুরি বৈঠকে বসেন।

ওই বৈঠকেই এ নিন্দা জানানো হয়। শনিবার (২১ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইরানের ওপর ইসরায়েলের সামরিক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত এই উত্তেজনা থামানোর আহ্বান জানিয়েছে আরব লীগ।

সংস্থাটি বলেছে, এই ধরনের হামলা জাতিসংঘের সদস্য একটি দেশের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং পুরো অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি।

এক যৌথ বিবৃতিতে আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেন, এই উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, তা নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে উদ্যোগ নিতে হবে এবং একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করতে হবে।

টিআরটি ওয়ার্ল্ড বলছে, জরুরি এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় তুরস্কের ইস্তানবুলে। এই শহরেই ২১-২২ জুন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-এর ৫১তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক।

এই বৈঠকেরই একটি অংশ হিসেবে আরব লীগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা পৃথকভাবে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাত, বিশেষ করে ১৩ জুন থেকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে শুরু হওয়া সামরিক সংঘর্ষ নিয়ে আলোচনা করেন।

এই সম্মেলনের আয়োজক ছিলেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। বৈঠকে বিভিন্ন মুসলিম ও আরব দেশের শীর্ষ কূটনীতিকরা অংশ নেন।

এছাড়া, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এক উচ্চপর্যায়ের অধিবেশনে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে একযোগে কড়া অবস্থান নিয়েছে পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া ও আলজেরিয়া।

এই দেশগুলো ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে ‘আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন’, ‘মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন’ এবং ‘মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী’ বলে উল্লেখ করে জাতিসংঘকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়। শনিবার (২১ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে গার্ডিয়ান ও রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশগুলো সতর্ক করে বলেছে, ইরানের ওপর ইসরায়েলের হামলা পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে এবং পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার যে নজির তৈরি করা হয়েছে, তা ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক।

জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম আহমদ বলেন, “ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড শুধু নৃশংসই নয়, বরং এটি জাতিসংঘের নৈতিক ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, গাজা ও পশ্চিমতীরে যে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে, তা গোটা মানবজাতির জন্য লজ্জার। পাকিস্তান উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, এই সহিংসতা গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

চীনের জাতিসংঘ প্রতিনিধি ফু চং বলেন, ইসরায়েল ইরানের ভূখণ্ডে যে হামলা চালিয়েছে, তা সরাসরি একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন।

তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে নিরাপত্তা পরিষদ কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না—এটি জাতিসংঘের প্রতি মানুষের আস্থা কমিয়ে দিচ্ছে।

রাশিয়ার উপ-রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি পোলিয়ানস্কি বলেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করছে। এই ধরনের অপারেশন পুরো অঞ্চলজুড়ে সংঘাতের বিস্তার ঘটাতে পারে।

তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষপাতিত্বমূলক নীতির সমালোচনা করে বলেন, এটি আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার প্রতি হুমকি।