খুলনা | রবিবার | ২২ জুন ২০২৫ | ৮ আষাঢ় ১৪৩২

বির্তকিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন

রকিব-হুদা-আউয়ালদের বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএনপি

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৮ এ.এম | ২২ জুন ২০২৫


বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনাকারী সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএনপি। আজ (রোববার) রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করা হবে বলে বিএনপি’র একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, রোববার সকালে কমিশন কার্যালয়ে গিয়ে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পৌঁছে দেবেন দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। পরে সালাহউদ্দিন শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা করবেন। মামলার কাগজে স্বাক্ষর থাকবে বিএনপি মহাসচিবের।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ‘একতরফা বিনা ভোটের’ নির্বাচন আয়োজনের অন্যতম কারিগর ছিলেন কাজী রকিবউদ্দিন আহমদের কমিশন। ভোট ছাড়াই ১৫৩টি আসনে বিনাপ্রতিদ্ব›িদ্বতায় আ’লীগ ও তাদের সহযোগীদের জয়ী ঘোষণা করে বিতর্কিত নির্বাচনের নজীর গড়ে কাজী রকিবউদ্দিন কমিশন।
ওই নির্বাচনে তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ বেশিরভাগ দল অংশ নেয়নি। আ’লীগ ও তাদের সহযোগীসহ মাত্র ১২টি দল অংশ নিয়ে সরকার গঠন করে। ওই কমিশনের সিইসি ছিলেন কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ। তার আমলে চারটি সিটি কর্পোরেশন ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোও ছিল বিতর্কিত। কিন্তু তাতে তার অনুশোচনা দেখা যায়নি।
বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে রকিবউদ্দিন বলেছিলেন, ‘বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হওয়া দোষের কিছু নয়, আইনে আছে। আর কেউ মাঠ ছেড়ে দিলে তো প্রতিপক্ষ গোল দেবেই। এটা রাজনীতির খেলা। ওই সময়ে নির্বাচন কমিশনার ছিলেন মোহাম্মদ আব্দুল মোবারক, মোহাম্মদ আবু হাফিজ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মোঃ জাবেদ আলী ও মোঃ শাহনেওয়াজ।
২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচনের পর ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ভোটের আগের রাতেই আ’লীগের পক্ষে ব্যালটে সিল মারা হয়। ফলাফলও হয় একতরফা। নির্বাচনে ২৯৯টি আসনের মধ্যে আ’লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট পায় ২৮৮টি আসন। অপর দিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পায় মাত্র ৮টি আসন। তখনকার কে এম নূরুল হুদা কমিশন বিষয়টি জানার পরও ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো ধামা চাপা দেয়। ওই কমিশনের সিইসি ছিলেন কে এম নুরুল হুদা। ওই কমিশনের নির্বাচন কমিশনার ছিলেন মোঃ রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। আরেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার মারা গেছেন।  
আ’লীগের দলীয় ও একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচন করে ‘আমি-ডামি ভোট’ উপাধি পায় কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। ওই কমিশনের বেশির ভাগ কার্যক্রম নিয়ে চরম বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ওই নির্বাচনে ভোটের হার নিয়ে বড় ধরনের বিতর্ক তৈরি হয়। ভোটের দিন বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৭ দশমিক ১৫ ভাগ ভোট পড়ে বলে জানানো হলেও এক ঘণ্টার ব্যবধানে ভোটের হার ৪০ শতাংশ বলে উলে­খ করা হয়। অবশ্য ভোটের হার ঘোষণার সময় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রথমে ২৮ শতাংশ ভোট পড়ার কথা বলে পরে তা সংশোধন করে ৪০ শতাংশের কথা বলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হাবিবুল আউয়াল লোকচক্ষুর অন্তরালে অবস্থান করছেন। ওই কমিশনের নির্বাচন কমিশনার ছিলেন-ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মোঃ আহসান হাবিব খান, মোঃ আনিছুর রহমান, মোঃ আলমগীর ও বেগম রাশেদা সুলতানা।