খুলনা | রবিবার | ২২ জুন ২০২৫ | ৮ আষাঢ় ১৪৩২

কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম ইরান : তুলসী গ্যাবার্ড

খবর প্রতিবেদন |
০১:৩৩ এ.এম | ২২ জুন ২০২৫


ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড। তিনি বলেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পরমাণু অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা আছে ইরানের।
গত মার্চ মাসে মার্কিন কংগ্রেসের সামনে তিনি বলেছিলেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাজ করছে না, তবে তার কাছে এই অস্ত্র তৈরির উপকরণ রয়েছে।
এদিকে, মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে গ্যাবার্ড মার্চ মাসে ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরি নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তা কিছু অসৎ মিডিয়া বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছে। অথচ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের পর নিজের আগের ভাষ্য থেকে সরে আসেন তুলসী গ্যাবার্ড।
ট্রাম্প বলেছেন, গ্যাবার্ডের আগের বক্তব্য ভুল। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী ইরান প্রচুর পরিমাণ উপকরণ সংগ্রহ করেছে। তারা কয়েক মাসের মধ্যে পরমাণু অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে। এরপরই নিজের বক্তব্য পরিবর্তন করেন গ্যাবার্ড।
ইরান সবসময় দাবি করে আসছে তার পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ এবং তারা কখনো পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করেনি।
গত বৃহস্পতিবার এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, পরমাণু চুক্তির জন্য ইরানের হাতে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ সময় আছে।
এছাড়াও, ইরান-ইসরায়েলে সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যোগ দিবে কিনা এ ব্যাপারেও তিনি শিগগরিই সিদ্ধান্ত নেবেন বলেন জানিয়েছেন।
এদিকে, চলমান মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিয়ে ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ সমর্থনকারী শিবিরে মতপার্থক্য ক্রমশ বাড়ছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে যুক্ত হবে কিনা এ নিয়েও বিতর্ক তৈরি হচ্ছে।
শনিবার সকালে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার জন্য তার দেশ ‘সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত’। তবে তিনি আরও বলেন, যখন আমাদের জনগণের ওপর হামলা হচ্ছে তখন আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করতে পারি না।
তুলসী গ্যাবার্ড তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেছেন, মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী ইরান ‘কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাসের মধ্যে’ পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদন করতে সক্ষম।
তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেছেন এটা হতে দেওয়া যাবে না। আমি তার সঙ্গে একমত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান ২০০৩ সালের পরামাণু অস্ত্র কর্মসূচি পুনরায় চালু করেনি। তবে তাদের ইউরেনিয়ামের মজুদ সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে যা পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হতে পারে।
এদিকে চলতি মাসের শুরুতে ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা।
বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে ২০১৫ সালে পরামাণু কর্মসূচি নিয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে সই করেছিল ইরান।
ইরান চলতি বছরও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার পরামাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করছিল। এমনকি এই আলোচনায় নতুন পরিকল্পনা রাখার কথাও ভেবেছিল তেহরান।
কিন্তু ১৩ জুন ইরানের ওপর হামলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির মূলে আঘাত করা হয়েছে। ইরানকে থামানো না হলে তারা শিগগিরই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে ফেলতে সক্ষম হবে।
ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের সামরিক স্থাপনা ও অস্ত্র ধ্বংস হয়েছে। সেই সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীরা নিহত হয়েছেন।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার জানিয়েছে, অন্তত ৪৩০ জন নিহত হয়েছে। তবে হিউম্যান রাইটস এ্যাকটিভিস্ট নিউজ এজেন্সির মতে ইরানে নিহতের সংখ্যা ৬৫৭।
ইরান পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যাতে ২৫ জন নিহত হয়েছেন।