খুলনা | মঙ্গলবার | ২৪ জুন ২০২৫ | ১০ আষাঢ় ১৪৩২

বাজেটে সম্পত্তি হস্তান্তরে কর কমলো

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৫ এ.এম | ২৩ জুন ২০২৫


২০২৫-২৬ অর্থবছরের অনুমোদিত বাজেটে সম্পত্তি হস্তান্তরের ওপর করহার উলে­খযোগ্যভাবে হ্রাস করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত এ খাতে করের হার কমানোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে কর হার কমানোর এই প্রস্তাব অনুমোদন পায়। বর্তমানে কার্যকর সংসদ না থাকায়-প্রথাগত ভোটাভুটির প্রক্রিয়া ছাড়াই বাজেট পাস হয়। এটি আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
নতুন করহার যা থাকছে : বিদ্যমান কর কর্তনের হার ৮ শতাংশ, ৬ শতাংশ ও ৪ শতাংশের স্থলে কমিয়ে আনা হয়েছে যথাক্রমে ৫ শতাংশ, ৩ শতাংশ ও ২ শতাংশ । অর্থাৎ সম্পত্তি হস্তান্তরের ধরন ও মূল্যমান অনুযায়ী এখন থেকে ক্রেতাদের জন্য করের বোঝা অনেকটাই হালকা হবে।
রাজস্ব আহরণে নতুন কৌশল : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)  তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন ফি ও কর বাবদ মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ১২ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ এসেছে উৎসে কর বা গেইন ট্যাক্স থেকে, যার পরিমাণ ৬ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা।
অপর দিকে, স্থানীয় সরকার কর বাবদ আদায় হয়েছে ৩ হাজার ৯৪৪ কোটি এবং রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ১ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা।
তবে বাজার মূল্যের তুলনায় কম দাম দেখিয়ে দলিল রেজিস্ট্রেশনের প্রবণতার কারণে সরকার প্রতিবছর প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারায়, এমন তথ্য উঠে এসেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর বিশ্লেষণে।
বাজারমূল্যে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ : এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা কর হার কমিয়েছি, কিন্তু এখন মূল চ্যালেঞ্জ হলো, রেজিস্ট্রেশনে প্রকৃত বাজারমূল্য নিশ্চিত করা। যদি এটি বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে কর হার কমলেও মোট রাজস্ব বরং বাড়তে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য করদাতার ওপর চাপ কমানো নয়, বরং কর প্রদানে উৎসাহ জাগানো। বাজারমূল্যে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক হলে এবং দুর্নীতি রোধ করা গেলে এই খাত থেকে রাজস্ব আহরণে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলবে।’
কর হারের এই সংস্কার উদ্যোগকে বাজার উদ্দীপনার জন্য ইতিবাচক বার্তা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, দীর্ঘ মেয়াদে এর ফলে আবাসন ও সম্পত্তি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, নিবন্ধন হার বাড়া এবং ট্রান্সপারেন্সি বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজস্ব ঘাটতি কমানো সম্ভব হবে। সরকারের এই পদক্ষেপকে তাই শুধু একটি কর সংস্কার নয়, বরং রেভিনিউ ব্যবস্থাপনায় কাঠামোগত পরিবর্তনের আভাস হিসেবে দেখা হচ্ছে।