খুলনা | সোমবার | ২৩ জুন ২০২৫ | ৯ আষাঢ় ১৪৩২

৩০০ আসনে জিতে এনসিপি সরকার গঠন করবে : নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী

শাপলা প্রতীক চাইলো এনসিপি

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৩ এ.এম | ২৩ জুন ২০২৫


নির্বাচন কমিশনে দলের নিবন্ধন আবেদন জমা দিয়ে দলের প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ চেয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সেই সঙ্গে এএমএম নাসির উদ্দিন কমিশনের পুনর্গঠনও দাবি করেছে দলটি। রোববার আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে নিবন্ধন আবেদনের শেষ দিনে প্রয়োজনীয় দলিলাদিসহ দলের আবেদন জমা দেন সদস্য সচিব আখতার হোসেন। এ সময় দলের মূখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, উত্তরাঞ্চল সমন্বয়ক সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন, যুগ্ম-মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিনসহ একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন। বিকেল চারটার দিকে প্রায় পঞ্চাশ জন নেতা-কর্মীসহ এনসিপি প্রতিনিধি দল নির্বাচন ভবনে আসে। পরে নির্বাচন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ডেস্কপ্যাচে গিয়ে আবেদনপত্র জমা দেন তারা।
আবেদনপত্র জমা দিয়ে সাড়ে চারটার দিকে ব্রিফিংয়ে এসে সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা ইসি কর্মকর্তাদের কাছে আবেদনপত্র জমা দিয়েছি। নিবন্ধন শর্তপূরণ করে এমন সব কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা এনসিপির দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ প্রতীক চেয়েছি।’
তিনটি প্রতীক আবেদনে উলে­খ করলেও শাপলা প্রতীককে এনসিপির প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দেবে বলে প্রত্যাশা রাখেন তিনি।
মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোওয়ারী জানান, শাপলা ছাড়াও ‘কলম’ ও ‘মোবাইল’ প্রতীক হিসেবে চেয়েছে এনসিপি। এর মধ্যে শাপলাই বরাদ্দ পাবেন বলে প্রত্যয় রাখেন তিনি। 
এনসিপি নিবন্ধন পাবে এবং শাপলা প্রতীকে জয় জয়কার হবে আগামী নির্বাচনে বলেন তিনি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত ৪০০ আসনের মধ্যে ৩০০ আসনে এনসিপি জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে পারবে বলে দাবি করেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা এখনও দাবি করছি বর্তমান ইসির পুনর্গঠন করতে হবে। এ ইসি পুনর্গঠন হতে হবে এবং পুনর্গঠন হবেই। আমরা বি অপশনে যাচ্ছি না। আর কোনো বিকল্প নেই।
নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়ার পরই আগামী নির্বাচনে দলের ফলাফল কেমন হবে তা নিয়ে কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেছেন, ‘নিবন্ধন পাওয়ার পর এনসিপির নেতৃত্বে আগামী সরকার গঠন হবে। আগামী সংসদে ৪০০ আসনের মধ্যে ৩০০ আসন পাবে এনসিপি।’ রোববার বিকেলে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এসে দলটির নিবন্ধনের প্রাথমিক আবেদন জমা দিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।
আত্মপ্রকাশের প্রায় চার মাস পর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের নির্বাচন কমিশনে আবেদন করল এনসিপি। এর আগে, গত শুক্রবার দলীয় সাধারণ সভায় এনসিপির খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদন হয়।
এনসিপি ইসি পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে। ইসি পুনর্গঠন না হলে এই কমিশনের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে পাটওয়ারী বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠানের সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশের মানুষ চায় পুনর্গঠন। পুনর্গঠন না হওয়ার কোনো উপায় নেই। যেহেতু এটা জনগণের দাবি, ইসি পুনর্গঠন হতেই হবে। পুনর্গঠন হবে। আমরা বিকল্প বি অপশনে যাচ্ছি না।’
এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘ইসি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু গত ১৫ বছরের এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। ইসির যেমন পুনর্গঠন করতে হবে, তেমনি নিয়মনীতিরও পরিবর্তন করতে হবে। এই কমিশনকে আমরা পুনর্গঠন করতে চাই, শক্তিশালী করতে চাই। আমরা এখনো বলছি, ইসি পুনর্গঠন প্রয়োজন।’
পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা সারাদেশে কথা বলেছি। অনেক জায়গায় অফিস নিতে গিয়েছি, বাধা দেওয়া হয়েছে। কমিটি গঠন করতে গিয়েছি, ছলচাতুরির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এই হলো দেশের রাজনৈতিক কালচার। সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেল করে আজ এই অবস্থায় এসেছি। ৫ তারিখের অভ্যুত্থানে যেভাবে মানুষের জয় হয়েছিল, সেভাবে আগামী নির্বাচনে ভোটব্যাংকে এনসিপির শাপলা প্রতীকে পুরো দেশের মানুষ জয়জয়কার করে দেবে। এনসিপির নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠন হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় প্রতীক হিসেবে রেখেছি কলম, তৃতীয় প্রতীক হিসেবে রেখেছি মোবাইল। তবে আমরা প্রত্যাশা করবো আমাদের যাতে শাপলাই দেওয়া হয়। আমরা পাঁচ লাখ মানুষের ডাটা এনেছি। অধিকাংশ মানুষ এনসিপিকে চায় শাপলা প্রতীকে।’
পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা ১০০ উপজেলা, ২৫টি জেলা কমিটির শর্ত পূরণ করেছি। ট্রাকে করে আমরা ডকুমেন্ট আনছি। দিনরাত পরিশ্রম করে সকল শর্ত পূরণ করেছি। আশা করি অতিদ্রুত নিবন্ধন পাবো এবং আগামী সরকার গঠন করতে সক্ষম হবো ইনশাআল­াহ।’
এ সময় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সব শর্ত পূরণ করে আবেদন দাখিল করেছি। জনগণের দল হিসেবে এনসিপি, অভ্যুত্থানকে ধারণ করে নতুন রাজনীতির চর্চা করতে চায়। এনসিপি দলের প্রতীক চেয়েছে কলম, মোবাইল ও শাপলা। তবে ইসি এনসিপিকে শাপলা বরাদ্দ দেবে বলে প্রত্যাশা এনসিপির।’আবেদন জমা দেওয়ার আগে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে প্রায় সব শর্তই পূরণ করেছে এনসিপি। আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গোছানোর কাজও শেষ।
নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেতে যে শর্ত পূরণ করতে তার জন্য যত কাগজপত্র প্রয়োজন তা ট্রাকে করে নিয়ে আসা হচ্ছে। এখন আমাদের একটি প্রতিনিধি দল ভেতরে গিয়ে আবেদনের মূল কাগজপত্র জমা দেব।’
এ সময় সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনসহ দলটির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।