খুলনা | রবিবার | ২৯ জুন ২০২৫ | ১৫ আষাঢ় ১৪৩২

কমেছে ডিম, মুরগির ও মাছে

বেড়েছে চালের দাম, বাড়তি সবজিরও

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:৩৭ এ.এম | ২৮ জুন ২০২৫


বেড়েছে চালের দাম। অজুহাত ধানের দাম ও পরিবহনে বাড়তি খরচ। মান ও জাতভেদে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের উত্তরাঞ্চলের মিল মালিকরা সরকারকে চাল দেওয়ার কারণে খুচরা বাজারে চালের সরবরাহ কমেছে এবং বড় কর্পোরেট কোম্পানিগুলো ধান-চাল মজুত করার কারণে ধাপে ধাপে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। 
বিক্রেতারা জানান, চলতি মাসের শুরুর দিকে উৎপাদনস্থলে হঠাৎ ধানের দাম বেড়ে যায়। এর প্রভাবে তখন পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে মিনিকেট চালের দাম বেড়ে যায়। এর আগে গত মে মাসের শুরুতে বাজারে বোরো ধানের চাল আসার পর মিনিকেটের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা কমেছিল।
অন্যদিকে বর্ষাকাল শুরু হয়েছে মাত্র ১২ দিন। এর মধ্যেই বেড়ে গেছে সবজির দাম। কোনো কোনোটির দাম তো সেঞ্চুরি পার করে ফেলেছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষরা বিপাকে পড়েছেন।
শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকায়। ঈদের আগে একই চাল বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ৭৬ টাকায়। সে হিসাবে মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা। ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ ধানের চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬২ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। সে হিসাবে এসব জাতের চালের দাম বেড়েছে দুই টাকা। সাধারণত মোটা চাল ৫০ টাকার আশপাশে ও মাঝারি চাল ৫৫-৫৮ টাকার মধ্যে থাকে।
অন্যদিকে নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা, কাটারিভোগ ৭২ থেকে ৭৬ টাকা, স্বর্ণা গুটি চাল ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা এবং চিনিগুঁড়া পোলাও চাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনন্দিন বাজারদরের তথ্যেও দেখা যায়, চালের দাম বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে সরু চালের দাম কেজিতে ৩ টাকা এবং মোটা ও মাঝারি চালের দাম কেজিতে ১ টাকা বেড়েছে।
কমেছে ডিম, মুরগির ও মাছের দাম : বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ ভালো থাকায় গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে ডিম, মুরগি ও মাছের দাম সামান্য কমেছে। এখন বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। সোনালি মুরগির এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। এখন বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা।
বাজারে এখন এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৮০ থেকে থেকে ৩০০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, কৈ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, দেশি শিং ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজার : বাজারে কয়েক ধরনের সবজির দাম সামান্য বেড়েছে। যেমন প্রতি কেজি টমেটো ১২০-১৮০ টাকা, বরবটি, কাঁকরোল ও কাঁচা মরিচ ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এগুলোর দাম সপ্তাহখানেক আগে কেজিতে ১০-২০ টাকা কম ছিল। 
বাজারে বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১০০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, দেশি শশা ৫০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৫ টাকা, প্রতিটি পিস লাউ ৫০ টাকা ও জালি কুমড়া ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, রসুন ১৮০ টাকা এবং দেশি আদা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া টিসিবির হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আমদানি করা রসুন, আদা, দারুচিনি ও এলাচের দাম কমেছে।