খুলনা | বৃহস্পতিবার | ০৩ জুলাই ২০২৫ | ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

কেএমপি কমিশনারকে অপসারণের দাবিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ব্লকেড আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:৩৬ এ.এম | ০৩ জুলাই ২০২৫


খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারকে অপসারণের দাবিতে নগরীর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনের সড়কে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করবে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এসব কর্মসূচি সফলে নগরীর কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনতার প্রতি উদাত্ত আহŸান জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। গত মঙ্গলবার রূপসা সেতুর টোলপ্লাজায় ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনার মুখ্য সংগঠন সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ প্রেসব্রিফিংয়ে এ আন্দোলনের ঘোষণা দেন। কেএমপি কমিশনারের অপসারণের দাবিতে গত ২৫ জুন থেকে আন্দোলন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের পুনর্বাসন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, গণ-অভ্যুত্থানে হামলাকারী চারটি মামলার আসামী এস আই সুকান্তকে ছেড়ে দেয়াসহ তাদের নানান অভিযোগ কেএমপি কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারের বিরুদ্ধে। বিক্ষোভ কর্মসুচিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করে।
তারা বলেন, বর্তমান পুলিশ কমিশনার খুলনার  আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোন উন্নয়ন ঘটাতে পারেনি। এছাড়াও আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসনে কাজ করছেন তিনি। তাই এমন পুলিশ কমিশনার চায় না খুলনাবাসী।
প্রেসব্রিফিংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনার মূখ্য সংগঠক সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, আমাদের দাবির বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজিপি কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি। খুলনাবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থেই আমাদের এ কর্মসূচি। তৃতীয়বারের মতো ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। তাতেও কর্ণপাত না করায় পুনরায় রাজপথে নামতে বাধ্য হলাম। বৃহস্পতিবার নগরীর সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনের সড়কে ব্লকেড করে বিক্ষোভ করা হবে। বিশেষ করে কলেজগুলোর সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ হবে। তবে এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় বেলা ১১টার স্থলে দুপুর দেড়টায় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে জমায়েত ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে; বিশেষ করে প্রতিটি কলেজের সামনের সড়কে। এরমধ্যেও যদি কেএমপি’র অর্থব কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারকে অপসারণ করা না হয়; তাহলে রবিবার থেকে খুলনার সাথে সারাদেশের সড়ক, রেল ও নৌপথ বন্ধ করে দেয়া হবে। কেএমপি কমিশনার জুলফিকার আলী কি শেখ হাসিনার চেয়েও বড় স্বৈরাচার; যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা তাকে অপসারণ করতে পারবে না? 
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা জেলা শাখার সদস্য সচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পী বলেন, কেএমপি কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারের কাছে খুলনাবাসী নিরাপদ নই। তাই প্রধান উপদেষ্টার উচিত খুলনাবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে অবিলম্বে তাকে অপসারণ করে জুলাই চেতনায় বিশ্বাসী কাউকে কেএমপিতে পদায়ন করানো। কেএমপি কমিশনারের চেয়ারে যতোদিন জুলফিকার আলী বসবেন, ততোদিন খুলনাবাসীর সুস্থ জীবন-যাপনের স্বার্থে আমাদের আন্দোলন চলছে, চলবে।
গত ২৪ জুন গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার উপর সীমাহীন নির্যাতনকারী চারটি মামলার আসামি এস আই সুকান্ত দাশকে মারধর করে খানজাহান আলী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। রাতের আঁধারে সুকান্তের বিরুদ্ধে মামলা থাকা সত্তে¡ও তাঁকে থানা থেকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এর প্রতিবাদে গত ২৫ জুন আন্দোলন শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ এবং কেএমপি সদরদপ্তরে তালা ঝুলিয়ে দেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুকান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে কেএমপি কমিশনারকে স্বৈরাচারের দোসর অভিযোগ করে তার পদত্যাগের দাবি জানান বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।