খুলনা | বৃহস্পতিবার | ০৩ জুলাই ২০২৫ | ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টমসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১৬.৫১ কোটি টাকার রাজস্ব বেশী আদায়

বেনাপোল প্রতিনিধি |
০১:৪২ এ.এম | ০৩ জুলাই ২০২৫


বেনাপোল কাস্টমস হাউসে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১৬.৫১ কোটি টাকার রাজস্ব বেশী আদায় হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সেখানে রাজস্ব আয় হয়েছে ৭ হাজার ২১.৫১ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে শতকরা ৪ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি।  
কাস্টমস সূত্র জানায় গত ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা, সেখানে আদায় হয়েছিল ৬ হাজার ১৬৭.৩৮ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১৯. ৩৮ কোটি টাকা বেশী আদায় হয়েছিল। 
কাস্টমস ও বাণিজ্যিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার ঐক্য পরিষদের কলম বিরতী ও কমপ্লিট শাট ডাউনের অস্থিরতার মধ্যেও রাজস্ব আদায়ের যে ধারাবাহিকতা চলছে, তাতে বছর শেষে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়েছে। রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার ঐক্য পরিষদের কলম বিরতী ও কমপ্লিট শাট ডাউনের মধ্যেও বেনাপোল কাস্টমস হাউসে কমিশনারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা দফতরে উপস্থিত থেকে রাজস্ব আদায়ের তদারকি করায় চলতি অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে বলে জানান, ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেস্বার অব কমার্স এন্ড ইনডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান।  
ভারতের সাথে বাংলাদেশের দূরত্ব কম ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে স্থলপথে বাংলাদেশি বাণিজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ আমদানি হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। বছরে পণ্য আমদানির পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা, যা থেকে সরকার প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে। 
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এন বি আর) থেকে অর্থবছরের শুরুতেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়। সে অনুযায়ী গত অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে  ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। 
২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৫ লক্ষ ৮১ হাজার ৯৫৪.২৪ মেঃ টন পণ্য আমদানি হয়েছিল। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ভারতে ১৫ লক্ষ ৩৪ হাজার ৩৪০.২১ মে: টন পণ্য আমদানি হয়েছে। আমদানি কম হলেও লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশী রাজস্ব আদায় হয়েছে। কাস্টমস কর্মকর্তাদের রাজস্ব ফাকি রোধে কঠোর নজরদারি ও সঠিক শুল্কায়ন করায় রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে।  
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা জানান, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ পণ্যবাহী ট্রাক আমদানি হচ্ছে এবং ১৫০ থেকে ২০০ ট্রাক বাংলাদেশি পন্য রপ্তানি হচ্ছে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব ফাঁকি রোধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন তরফদার জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার ৭৭৪.৮৫ মে: টন  রপ্তানি হয়েছিল। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩,৮১,৪৪০.৭৭ মেট্রিক টন পণ্য ভারতে রপ্তানি  হয়েছে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। এটি পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় ৩০,৬৬৫.১৫ মেট্রিক টন কম। বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন চলমান রয়েছে। 
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোঃ কামরুজ্জামান জানান, গত ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে  রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউসে সার্বিক আমদানির পরিমাণ ৮ শতাংশ কম হলেও রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। এটি হাউজের উলে­খযোগ্য অর্জন। এছাড়া রাজস্ব ফাঁকি রোধে এ বন্দরে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করায় শুল্ক ফাঁকির প্রবনতা কমে গেছে। কোন অনিয়ম ধরা পড়লে রাজস্ব আদায়সহ কঠোর আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।