খুলনা | রবিবার | ০৬ জুলাই ২০২৫ | ২২ আষাঢ় ১৪৩২

দৌলতপুরে গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি |
০১:৩৯ এ.এম | ০৫ জুলাই ২০২৫


কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে শ্বশুরবাড়িতে এক গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে লাশ দাফনে বাধা দিল পুলিশ। নিহত গৃহবধূ শিলা খাতুন (২০) দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের শেরপুর সেনপাড়া গ্রামের আলামিনের স্ত্রী। শুক্রবার ভোররাতে শিলা মারা যান। সকালে নিহত গৃহবধূর বাবার বাড়ির লোকজন স্থানীয় কবরস্থানে লাশ নেওয়ার পথে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে-এমন সন্দেহ হলে পুলিশ লাশ দাফনে বাধা দেয়। তবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা-তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জেলার মিরপুর উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের কাঙালি মোড় এলাকার আমিরুল ইসলামের মেয়ে। 
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, দুই বছর আগে দৌলতপুর উপজেলার শেরপুর সেনপাড়া গ্রামের ইয়ারুল ইসলামের ছেলে আলামিনের সঙ্গে শিলার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। ৩ মাস আগে তাদের একটি ছেলে জন্ম হয়েছে। 
২৯ জুন শিলার শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানান, পারিবারিক বিরোধ নিয়ে শিলা শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তাকে কুষ্টিয়া হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যায় শিলাকে তার স্বামী আলামিন ঢাকা থেকে এনে বাবার বাড়িতে রেখে চলে যান। এরপর রাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে পরিবারের লোকজন তাকে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। শুক্রবার ভোররাতে শিলা মারা যান।
নিহতের দুলাভাই আশরাফুল ইসলাম বলেন, গত ২৯ জুন ঘটনাটি ঘটেছিল। শিলার শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাদের বলেছিল, শিলা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তারাই চিকিৎসা করাচ্ছিল। কিন্তু শিলা মারা যাওয়ার আগে আমাকে বলেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার শরীরে তারপিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল। তবে সে কারো নাম বলেনি। 
তিনি বলেন, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে কাঙালি মোড় কবরস্থানে শিলার দাফন হওয়ার কথা ছিল। বাড়ি থেকে লাশ কবরস্থানে নেওয়ার পথে সকাল পৌনে ১০টার দিকে পুলিশ লাশ আটকে দাফনে বাধা দেয়। হত্যার অভিযোগের বিষয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করলে আমি পুলিশকে ঘটনাটি জানাই। পরে লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোমিনুল ইসলাম বলেন, আসল ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে- এমন সন্দেহের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের থামিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। নিহতের দুলাভাই বলছেন, মারা যাওয়ার আগে তাকে বলেছে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিহতের শরীরের অর্ধেক পুড়ে গেছে এবং শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 
তিনি বলেন, দুই পরিবার একে অপরের আত্মীয়। ঘটনাস্থল দৌলতপুর হওয়ায় ওই থানার ওসি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।
দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, নিহত গৃহবধূর স্বামীর বিদেশ যাওয়ার ঘটনা নিয়ে পারিবারিক বিরোধে এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।