খুলনা | রবিবার | ০৬ জুলাই ২০২৫ | ২২ আষাঢ় ১৪৩২

সোনাডাঙ্গা থানা শ্রমিক দলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে এড. মনা

দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থে অনতি বিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের বিকল্প নেই

খবর বিজ্ঞপ্তি |
০১:৪০ এ.এম | ০৬ জুলাই ২০২৫


খুলনা মহানগর বিএনপি’র সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা বলেছেন, বিগত ১৬ বছর পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার শ্রমিকদের কল্যাণে কিছুই করেনি। লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অধিকাংশ মিল-কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এক সময়ের শিল্প নগরী খুলনা আজ মৃত নগরীতে পরিণত হয়েছে। বন্ধ মিলের যন্ত্রাংশও খুলে নিয়ে গেছে লুটেরা আওয়ামী লীগ সরকার। বিনাভোটে, রাতের ভোটে আবার ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছিলো। শেখ হাসিনা বাকশালি পন্থায় মানুষের বাক স্বাধীনতাকে হরণ করেছিলেন। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে খুনি হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে ’২৪ এর অভ্যুত্থানের আজ হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশে আমরা বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছি। বিগত ১৬ বছর রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামের চূড়ান্ত ফসল আমরা জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ঘরে তুলতে পেরেছি। আমাদের আন্দোলন ছিলো ভোটাধিকারের জন্য, আমাদের আন্দোলন ছিলো হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য। 
গতকাল শনিবার বিকেল ৫টায় নগরীর জিয়া হল চত্বরে সোনাডাঙ্গা থানা শ্রমিক দলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আজ যখন আমরা ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছি তখন একটি গুপ্ত রাজনৈতিক দল ভোটের বিরোধীতা করছেন। একটি লোভী রাজনৈতিক দল ও কিছু ব্যক্তি দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চান না বলেই জাতীয় নির্বাচনের বিরোধিতা করছেন। ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য হাজারো মানুষ জীবন দিয়েছে দাবি করে এড. মনা বলেন, দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থে অনতিবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের বিকল্প নেই। যদি নির্বাচন বিলম্বিত করা হয়, তবে জনগণ তা মেনে নেবে না।
তিনি আরো বলেন, আজ আমরা এমন এক সময়ে দাঁড়িয়ে আছি, যখন ধর্মের নামে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে একটি বিশেষ দল নানাভাবে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তারা কথিত জান্নাতের টিকিট বিলি করে বেড়াচ্ছে অথচ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এই দল ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী। সেই সময় তাদের দ্বারা বহু মা-বোন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। ধর্মের অপব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার দিন শেষ। দেশের জনগণ এখন সচেতন-তারা বুঝে ফেলেছে কে প্রকৃত দেশপ্রেমিক, আর কে ধর্মের মুখোশ পরে রাজনৈতিক ব্যবসা করে। এই দল হঠাৎ করে নিজেদের বিপ¬বী রূপে উপস্থাপন করতে চায়, কিন্তু তাদের অতীত ইতিহাস আজও জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। যারা ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে-তাদের ব্যাপারে আল¬াহ তায়ালা কুরআনে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ৫ আগস্টের পর যারা পাড়া মহল¬ায় গিয়ে আয়োজন করে বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছে তাদের ষড়যন্ত্র থেকে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। যারা বেহেশতের টিকেট বিক্রি করছে, শপথ করাচ্ছে, তাদের কতটা জনসমর্থন আছে তা দেশের মানুষ জানেন। বিএনপি ধর্মবান্ধব রাজনৈতিক দল কিন্তু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে না। বিএনপি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে জনসাধারণকে আদর্শ জাতি গঠনে উদ্বুদ্ধ করে, বেহেশতে যাওয়ার টিকিট বিক্রি করে না। বিএনপি ধর্মীয় মূল্যবোধ, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সর্বশক্তিমান আল¬াহর ওপর আস্থা-বিশ্বাস ও সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতিতে বিশ্বাসী। বিএনপি বিশ্বাস করে, মুসলমান জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইসলামী মূল্যবোধ এবং সংস্কৃতির বিকাশ ঘটলে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে শান্তি, ন্যায্যতা, মানবিকতা প্রতিষ্ঠিত হবে। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে ধর্মহীনতা চাপিয়ে দিয়েছিল। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সংবিধানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম এবং ধর্মনিরপেক্ষতার পরিবর্তে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস সংযোজন করে সংখ্যা গরিষ্ঠ মানূষের অনুভুতির প্রতি সম্মান জানিয়েছেন। বিএনপি শহিদ জিয়ার সেই নীতি ধারণ করে চলেছে।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মহানগর শ্রমিক আহবায়ক মজিবর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী, চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ, সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপি’র সভাপতি হাফিজুর রহমান মনি, সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, জাকির ইকবাল বাপ্পি। সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মহানগর শ্রমিক দলের সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম শফি, যুগ্ম-আহবায়ক আবু বক্কার সিদ্দিক, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সরদার আরব আলী, জি এম মাহাবুর রহমান প্রমুখ।