খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৭ জুলাই ২০২৫ | ২ শ্রাবণ ১৪৩২

ফুলতলা-ডুমুরিয়ার নেতা-কর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় কেন্দ্রীয় নেতারা

‘দল যাকেই মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই’

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:২০ এ.এম | ০৯ জুলাই ২০২৫


বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়; দলের চেয়ে দেশ বড়। বিএনপি’র প্রতিটি নেতা-কর্মী-সমর্থক আমরা এটি বিশ্বাস করি। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে নিজের জীবন বিপন্ন করেই আমরা ১৭ বছর রাজপথে ছিলাম। এমন অবস্থায় দলের নির্দেশনা আমরা প্রতিপালন করবো। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাংগঠনিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শেষ করবো। দলের প্রতিটি স্তরে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করবো। ঐক্যবদ্ধভাবে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বাংলাদেশে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করাই বিএনপি’র প্রত্যেক নেতাকর্মী-সমর্থকের প্রধান লক্ষ্য। এখানে নিজেদের আশা-আকাক্সক্ষার চেয়েও যদি দলকে গুরুত্ব দিতে পারি, শহিদ জিয়াউর রহমানের আদর্শ প্রকৃত অর্থেই হৃদয়ে ধারণ করতে পারি, তাহলে আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে আমরা পৌঁছাতে পারবো।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে নগরীর একটি খুলনা জেলা বিএনপি’র আয়োজনে ফুলতলা-ডুমুরিয়ার নেতা-কর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তৃতায় শেষাংশে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, আজ এই মুহূর্ত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রিয়জন আলী আসগর লবী (খুলনা-৫ আসনে) আপনাদের সঙ্গে কাজ করবেন। আপনারাও তার সঙ্গে কাজ করবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রধান বক্তার বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল বলেছেন, আজ ডুমুরিয়া-ফুলতলা উপজেলা নিয়ে বসেছি। এরপর প্রতিটি ইউনিয়নে, প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে এভাবেই আমাদের দলকে সংগঠিত করতে হবে। ব্যক্তির উর্ধ্বে থেকে সবাইকে নিয়ে বিএনপিকে শক্তিশালী করতে হবে। দল যাকেই মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই দলের বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আমাদের প্রতিপক্ষ যতোই শক্তিশালী প্রার্থী হোক না কেনো, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি-সমস্ত বিভেদ ভুলে যাই, দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে যদি ইস্পাত দৃঢ় ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে ইনশাআল­াহ্ বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত। কিভাবে ডুমুরিয়া ও ফুলতলার নেতা-কর্মীদের উপর নির্যাতন চালানো হয়েছিল তা সবাই জানেন। ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাসারকে কয়েকবার হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেছে সন্ত্রাসীরা, আমাদের জিকুকে পিটিয়ে হত্যা করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মী অগণিতবার কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। আজকে সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধভাবে দলের প্রার্থীকে নির্বাচিত করে সকল ষড়যন্ত্রের জবাব দেবার।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় বিএনপি’র তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, ডুমুরিয়া-ফুলতলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে আজ খুলনা-৫ আসনের যে সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার উদ্বোধন হলো। পর্যায়ক্রমে খুলনার অন্য আসনগুলো নিয়েও এমন সভা অনুষ্ঠিত হবে। সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে যদি কাজ না করি, তাহলে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। সারাদেশে যদি বিএনপি’র নেতৃত্বে জনগণের সরকার গঠন হয়-আর আপনার/আমার এলাকায় সেই সরকারের প্রতিনিধিত্ব না থাকে তাহলে এর চেয়ে বড় হতভাগা কেউ থাকবে না। ১৭টি বছর আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে রক্ত ঝরিয়েছেন, আর সংসদে আমার এলাকায় দলের প্রার্থী বিজয়ী করতে পারেননি তাহলে আন্দোলনের সুফল আপনি পাবেন কিভাবে? তাই সকলকেই ঐক্যবদ্ধভাবে দলের মনোনীত প্রার্থীর সপক্ষে, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সর্বোচ্চ কাজ করার আহŸান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় কেন্দীয় বিএনপি’র খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু বলেন, পরীক্ষায় একজনেরা খাতা দেখে লিখে টেনে-টুনে ৩৩ নম্বর পেয়ে কোনো রকম পাস করে এসেছেন। তারা এখন পরীক্ষা দিয়ে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হতে চায়। পারলে ভালো। তবে যে দলটির অবস্থান স্বাধীনতারই বিপক্ষে, তাদের হাতে কি বাংলাদেশ নিরাপদ হতে পারে? নিশ্চিয়ই না। তাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার স্বার্থে জনগনের সার্বিক নিরাপত্তায় বিএনপিকেই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব নিতে হবে। সে জন্য প্রয়োজন নিজেদের মধ্যে ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য। ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তৃতা করেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও খুলনা মহানগর বিএনপি’র সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফিকুল আলম তুহিন।
খুলনা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক মোঃ মনিরুজ্জামান মন্টুর সভাপতিত্বে সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক এড. মোমরেজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য বিসিবি’র সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলী আসগর লবী, জেলা যুবদলের আহবায়ক ইবাদুল হক রুবায়েদ, জেলা মহিলা দলের আহবায়ক এড. তসলিমা খাতুন ছন্দা, ফুলতলা উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাসার, ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপি’র সাবেক আহবায়ক মোঃ সারোয়ার হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক খান জুলফিকার আলী জুলু, মোল­া খায়রুল ইসলাম, মোঃ তৈয়েবুর রহমান, এস এম শামীম কবির, জিএম কামরুজ্জামান টুকু, অধ্যাপক মনিরুল হক বাবুল ও এনামুল হক সজল, মহানগর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী, মাসুদ পারভেজ বাবু ও চৌধুরী হাসানুর রশীদ মিরাজ, জেলা বিএনপি’র সদস্য এসএ রহমান বাবুল, সেলিম সরদার, মোঃ হাফিজুর রহমান, মনির হাসান টিটো, জাফরী নেওয়াজ চন্দন, আব্দুল মালেক, আশরাফুল ইসলাম নূর, বাবু নিত্যনন্দ, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব নাদিমুজ্জামান জনি, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক আতাউর রহমান রুনু, সদস্য সচিব আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, জেলা কৃষক দলের আহবায়ক মোল­া কবির হোসেন ও আবু সাঈদ প্রমুখ। সভায় খুলনা জেলা বিএনপি, ফুলতলা ও ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপি’র আহŸায়ক কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় কেন্দ্রীয় নেতারা আলী আজগর লবীকে প্রার্থী ইঙ্গিত করে বক্তব্য রাখেন। তবে প্রার্থী হিসেবে কাউকে পরিচয় করিয়ে দেননি।
সভা শেষে বিএনপি’র খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ ইসলাম অমিত বলেন, আমরা এখানে কোনো প্রার্থী ঘোষণা করতে আসেনি। প্রার্থী ঘোষণার এখতিয়ারও আমাদের নেই। নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থেকে বিএনপিকে বিজয়ী করতে কাজ করার কেন্দ্রের বার্তা কর্মীদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।