খুলনা | বুধবার | ০৯ জুলাই ২০২৫ | ২৫ আষাঢ় ১৪৩২

বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক, ভারতীয় টেক্সটাইলের শেয়ারে পোয়াবারো

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৫ এ.এম | ০৯ জুলাই ২০২৫


বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের জেরে ভারতীয় টেক্সটাইল প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের মূল্য ১৫.৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের দাম বেড়ে যাবে, এতে করে ভারত টেক্সটাইল খাতে আরও বেশি অর্ডার পাবে এমন প্রত্যাশায় এ খাতের শেয়ারের দাম বেড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অলোক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশের বেশি বেড়ে ২৩.১৯ রুপিতে পৌঁছেছে। গোকলদাস এক্সপোর্টের শেয়ার ৮.২ শতাংশ বেড়ে ৯৭৪.৭০ রুপিতে, সিয়ারাম সিল্ক মিলসের শেয়ার ৫ শতাংশ বেড়ে ৭৩৩.৯০ রুপি এবং বর্ধমান টেক্সটাইলের শেয়ারের দাম ৪.৩ শতাংশ বেড়ে ৫১৯.৫০ রুপিতে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া সনাতন টেক্সটাইল, ট্রাইডেন্ট, কেপিআর মিল, ওয়েলসপুন লিভিং, মন্তে কার্লো ফ্যাশন, ডলার ইন্ডাস্ট্রিজ এবং অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারও বেড়েছে।
গত এপ্রিলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প। সে সময় বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। ৩ মাস ধরে আলোচনার পর বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ করে শুল্ক ছিল।
সোমবার বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানসহ মোট ১৪টি দেশের ওপর নতুন করে শুল্কহার নির্ধারণের ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময়সীমা শেষ হতে ট্রাম্প এই ঘোষণা করেন। এর আগে ৯ জুলাই থেকে শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও সেটি পিছিয়ে ১ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। 
বাংলাদেশের অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূসকে লেখা চিঠিতে ট্রাম্প বলেছেন, ‘২০২৫ সালের ১ অগাস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো সব বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসবে। এটি খাতভিত্তিক শুল্কের সঙ্গে আলাদাভাবে যোগ হবে। উচ্চ শুল্ক এড়াতে যদি কোনও পণ্য ঘুরপথে যুক্তরাষ্ট্রে আনা হয়, তাহলে সেই পণ্যের ওপরও উচ্চ শুল্কই আরোপ করা হবে।’
এদিকে বাংলাদেশের ওপর আরোপকৃত এ শুল্ক কমানোর সুযোগও রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য প্রবেশ সহজ করার শর্ত দিয়েছে দেশটি। যা নিয়ে ইতিমধ্যে মার্কিন সরকারের সঙ্গে ঢাকার আলোচনা চলছে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র যদি চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারে তাহলে ১ আগস্ট থেকে ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে আজ বুধবার (০৯ জুলাই) ওয়াশিংটনে বৈঠকে বসছেন দুই দেশটির কর্মকর্তারা। বাংলাদেশের পক্ষে এ বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানও এ প্রতিনিধি দলে থাকবেন।
উলে­খ্য, বাংলাদেশ এখনোও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক এবং পোশাক রপ্তানির বড় একটি অংশই যায় যুক্তরাষ্ট্রে। বাংলাদেশের পর তৃতীয় অবস্থানে আছে ভিয়েতনাম। আর শীর্ষ অবস্থানে আছে বরাবরের মতো চীন। অন্যান্য প্রধান রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে যথাক্রমে রয়েছে তুরস্ক, ভারত, কম্বোডিয়া এবং পাকিস্তান।