কুষ্টিয়ায় যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এক পত্রের জায়গায় আরেক পত্রের প্রশ্ন বিতরণের অভিযোগে দায়িত্বে অবহেলায় ছয়জনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বাকি পরীক্ষাগুলোর সময় তাঁদের কেউ পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে পারবেন না।
গত বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া শহরের মিলপাড়া এলাকার কুষ্টিয়া আদর্শ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে যুক্তিবিদ্যা প্রথম পত্রের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও যশোর বোর্ডের কর্মকর্তারা তদন্তে নামেন।
আগামীকাল রোববার হতে যাওয়া যুক্তিবিদ্যা দ্বিতীয় পত্রের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন নতুন করে ছাপা হচ্ছে। সেই প্রশ্নে পুরো যশোর বোর্ডে পরীক্ষা নেওয়া হবে। শুক্রবার বিকেলে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি, উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) মিজানুর রহমান। তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে বিজি প্রেসে প্রশ্ন ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে একজন ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। রাতের মধ্যেই যশোর বোর্ডের আওতাধীন সব জেলায় প্রশ্ন পাঠানো হবে। যুক্তিবিদ্যা দ্বিতীয় পত্রের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন অধিকতর সাবধানতার জন্য চারটি সেটই ছাপানো হচ্ছে। আগামীকাল রোববার এই প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে যশোর বোর্ড থেকে তিনজন কর্মকর্তা ওই কেন্দ্রে আসেন। সেখানে পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা সবার সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। 
কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কুষ্টিয়া আদর্শ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) সালাহ উদ্দিনের উদাসীনতা ও অবহেলার প্রমাণ পান তাঁরা। পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির চার সদস্যসহ এক ট্যাগ অফিসারের বিরুদ্ধেও উদাসীনতার প্রমাণ পাওয়া যায়। এসব কারণে ওই কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, চার শিক্ষক ও ট্যাগ অফিসারকে পরীক্ষার সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। যত দিন পরীক্ষা শেষ না হবে, তত দিন তাঁরা কেউই কলেজে যেতে পারবেন না।
এ ছাড়া কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আজব আলী জোয়ার্দ্দারকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি তিন সদস্যের একটি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটি গঠন করেছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গেছে, যশোর বোর্ডের যুক্তিবিদ্যা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা আগামী রোববার অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় পত্রের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের চারটি সেট বিজি প্রেসে ছাপানো হচ্ছে। রাতের মধ্যেই যশোর বোর্ডের আওতাধীন সব জেলায় পাঠানো হবে। এরপর থানাগুলোতে নেওয়া হবে। নতুন নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নেই রোববার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে আদর্শ মহাবিদ্যালয়ে ঘটনার অধিকতর তদন্তে জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুকুল কুমার মৈত্রকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয়। এ ছাড়া যশোর শিক্ষা বোর্ডও আলাদা কমিটি করে আরও তদন্ত করছে।