খুলনা | মঙ্গলবার | ১৫ জুলাই ২০২৫ | ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

আদালতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করলেন ক্রিকেটার নাসির-তামিমা

খবর প্রতিবেদন |
০২:২৭ পি.এম | ১৪ জুলাই ২০২৫


ব্যভিচার, মানহানি এবং অন্যের স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার নাসির হোসেন এবং তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মি আদালতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। তারা বলেছেন, এ মামলায় তারা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছেন।

আজ সোমবার (১৪ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে হাজির হয়ে তারা এসব কথা বলেন। এদিন মামলাটিতে আত্মপক্ষ শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার বাদী তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসানও।

আদালত যখন তাদের কাছে জানতে চান তারা দোষী না নির্দোষ— জবাবে নাসির ও তামিমা একযোগে নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেন। তারা বলেন, এই মামলায় সঠিক তদন্ত ও বিচার হলে তাদের নির্দোষ প্রমাণিত হবে।

বিচারক এরপর জানতে চান, আসামিপক্ষ থেকে সাফাই সাক্ষ্য দেওয়া হবে কি না। জবাবে আসামিপক্ষের আইনজীবী জানান, তারা লিখিত ব্যাখ্যার পাশাপাশি আসামিদের স্বপক্ষে সাক্ষ্য দেবেন। আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য ১১ আগস্ট দিন ধার্য করেন।

২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও তার সঙ্গে বিয়ে হয় এবং তাদের আট বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।

বাদী রাকিবের অভিযোগ, বৈবাহিক সম্পর্ক চলমান থাকা অবস্থায় তামিমা ক্রিকেটার নাসির হোসেনকে বিয়ে করেন, যা ধর্মীয় ও আইনি উভয় দিক থেকেই অবৈধ। ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সামাজিকমাধ্যমে নাসির-তামিমার বিয়ের ছবি ছড়িয়ে পড়লে রাকিব এ বিষয়ে জানতে পারেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, নাসির তার স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন এবং তাদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এতে রাকিব এবং তার মেয়ে চরম মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তার ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক সম্মানহানি ঘটেছে, যা অপূরণীয় ক্ষতির শামিল।

২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি আদালত নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। তবে মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকা তামিমার মা সুমি আক্তারকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

পরে ওই বছরের ৬ মার্চ নাসির-তামিমা পক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন করেন তাদের আইনজীবী কাজী নজিব্যুল্লাহ হিরু। একইসঙ্গে বাদী পক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান সুমি আক্তারকে অব্যাহতির আদেশের বিরুদ্ধেও রিভিশন আবেদন করেন।

২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মুর্শিদ আহাম্মেদ রিভিশন আবেদনগুলো খারিজ করে দেন এবং মামলার বিচার চলবে বলে আদেশ দেন। সেই সঙ্গে সুমি আক্তারকে মামলার দায় থেকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

গত ১৬ এপ্রিল মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ হয়। এতে আদালত ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

বর্তমানে আত্মপক্ষ সমর্থনের পরবর্তী ধাপ হিসেবে আসামিপক্ষ সাফাই সাক্ষ্য উপস্থাপন করবে। আগামী ১১ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। মামলার পরবর্তী পর্যায়ে আদালত আসামিদের পক্ষে দেওয়া সাক্ষ্য, যুক্তি এবং প্রমাণ যাচাই করে চূড়ান্ত রায় দেবেন।