খুলনা | মঙ্গলবার | ১৫ জুলাই ২০২৫ | ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

কয়রা-পাইকগাছায় নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়

এড. মোমরেজ একজন মানবিক মানুষ, অসহায় দরিদ্র বিএনপি নেতা-কর্মীদের আশ্রয়স্থল

পারভেজ মোহাম্মদ |
০২:০৩ এ.এম | ১৫ জুলাই ২০২৫


মোঃ মনিরুল ইসলাম, কপিলমুনির এক দরিদ্র পরিবারের  জাতীয়তাবাদী চেতনায় বেড়ে ওঠা যুবদলের একজন সক্রিয় কর্মী। ফ্যাসিস্ট  সরকারের মিথ্যা মামলায় নির্মম নির্যাতন ও কারা ভোগে কেটেছে যার যৌবনের অনেকটা সময়। আজ থেকে ১১ বছর আগে গাড়ি পোড়ানো মামলায় মিথ্যা আসামি করা হয় তাকে। স্থানীয়সহ জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের কাঁধেও তখন মিথ্যা মামলার বোঝা। অনেকেই সেদিন ছিল আত্মগোপনে। সন্তানকে কাছে পাওয়ার ইচ্ছাই দিকবিদিক ছোটাছুটি মনিরুলের মায়ের। এমনই এক মুহূর্তে একজন সুহৃদ মারফত বিষয়টি জানতে পারেন খুলনার একজন প্রথিতযশা  আইনজীবী। অবসরে খুলনা থেকে ছুটে আসেন সেই অভাবি মায়ের কাছে। হতভাগী মা স্থানীয় একটি এনজিও থেকে পাঁচ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে তুলে দেন আইনজীবীর হাতে। গ্রামের  একজন সাধারণ মায়ের শেষ সম্বল শাড়ির আঁচল পেতে সন্তানের ভিক্ষা চান  মা সকিনা বেগম। তৎক্ষণাৎ আইনজীবী পাশে বসা জুনিয়র এড. দীপঙ্কর সাহাকে বলেন, কেস ফাইলে কত টাকা লাগবে?
নিজেই, ঠিক মনে নাই সম্ভবত দুই থেকে তিনশ’ টাকা রাখতে বলেন জুনিয়র আইনজীবীকে। মনিরুলের মাকে পাশে বসিয়ে সমুদয় টাকা তার হাতে ফেরত দিয়ে বলেন   যতদিন সন্তান বাড়িতে না ফিরে, মনে করবেন আপনার সন্তানই এই টাকা পাঠিয়েছে। এটা দিয়ে সংসার চালান। ইনশাআল্লাহ আপনার সন্তানকে আপনার কাছেই ফিরিয়ে দিবো। টাকার জন্য কোন চিন্তা করবেন না।
বোধ করি, যে সামান্য ক’টি টাকা তিনি নিয়েছিলেন ওটা হয়তো মায়ের আশীর্বাদ স্বরূপ। আর এই কাজটি যিনি করেছিলেন সেই মানবিক মানুষ আর কেউ নন, নোনা পানির সোনার ছেলে, জনপ্রিয় জননেতা এড.  মোমরেজুল ইসলাম। শুধু কপিলমুনির মনিরুল নয়, নির্দিষ্ট কোন সীমানার মধ্যেও নয়, ফ্যাসিস্ট সরকার দ্বারা নির্যাতিত জাতীয়তাবাদী দলের  হাজার হাজার নেতা-কর্মী পাশে যিনি আইনি সহায়তার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন তিনিই এড. মোমরেজুল ইসলাম। সত্যি সেলুকাস, কি বিচিত্র মানুষ। সাধারণ মানুষের গর্ব ও অহঙ্কারের এই হাস্যজ্জ্বল মানুষকে নিয়ে গুটিকয়েক নিন্দুকেরা আজ বিরোধিতার স্বার্থে বিষোদগার করছেন। তারা হয়তো জানেন না  গণমানুষের ভালোবাসার কাছে নিন্দুকদের এই সমালোচনা নিতান্তই তুচ্ছ। তবুও দলীয় সহযোদ্ধারা বিষয়টি আমলে নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। নিন্দার ঝড় বইছে খুলনা জেলার বিএনপি’র তৃণমূলের নেতা-কর্মীর মাঝে। বিশেষ করে তার নির্বাচনী এলাকা পাইকগাছা কয়রার সর্বস্তরের মানুষ প্রতিবাদ মুখর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সৃষ্টি হয়েছে প্রতিবাদের ঝড়। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল
খুলনা জেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-আহŸায়ক মোমরেজুল ইসলামের চরিত্রহনন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) প্রপাগান্ডা ছড়ানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১১টায় উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কয়রা উপজেলা যুব দলের আহবায়ক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি শরিফুল আলম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, জেলা বিএনপি নেতা মোমরেজুল ইসলাম পেশায় একজন আইনজীবী।  স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে তাঁর বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। এর পাশাপাশি গত ১৬ বছরে স্বৈরাচারি সরকারের দেওয়া সকল মামলা পরিচালনায় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিঃস্বার্থভাবে সহযোগিতা করেছেন। ছাত্রজীবন থেকেই বিএনপি’র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দীর্ঘদিন তিনি কয়রা উপজেলা বিএনপি’র সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কখনও কোন দুর্নাম অথবা স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ নেই। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৬ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশি হিসেবে তিনি গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। তাঁকে নিয়ে এর মধ্যে স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। ঠিক সেই মুহূর্তে একজন জনপ্রিয় ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদের দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম ক্ষুণœ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে একটি মহল। কুরুচিপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করে যেভাবে তাঁর চরিত্রহননের চেষ্টা করা হয়েছে তাতে বিস্মিত হয়েছেন এলাকার মানুষ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, স¤প্রতি উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এক মতবিনিময় সভা করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও মহারাজপুর ইউপি’র নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ তার বক্তব্যে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে সমালোচনা করেন। এর প্রতিবাদে স্থানীয় বিএনপি এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক মোমরেজুল ইসলাম বক্তৃতা করেন। প্রতিবাদ সমাবেশে চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবির বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে স্থানীয় সংবাদকর্মী ও রাজনৈতিক নেতাদের চরিত্রহনন করে শুরু হয় নোংরামী। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ জুলাই ‘প্রতিদিনের খবর’ নামে একটি ফেসবুক আইডিসহ কয়েকটি আইডি থেকে  মোমরেজুল ইসলামের নামে কোন তথ্য প্রমান ছাড়াই প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রতিবেদক ও তথ্য সরবরাহকারি হিসেবে যুবদলের আহবায়ক শরিফুল আলমের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং প্রতিপক্ষের গভীর ষড়যন্ত্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। 
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা বিএনপি’র সদস্য এম এ হাসান, বিএনপি’র নেতা মনজুরুল আলম, রফিকুল ইসলাম, হারুন অর রশিদ, শহীদুল্লাহ শাহীন, আবুল বাশার ডাবলু, গোলাম রসুল, নুর ইসলাম খোকন, নুরুল ইসলাম, ডি এম হেলাল উদ্দিন, মনজুর মোরশেদ, রবিউল ইসলাম, এহসানুর রহমান, আবুল কালাম কাজল, ইউনুস আলী, আরিফ বিল্লাহ সবুজ প্রমুখ। 
এদিকে পাইকগাছা-কয়রার কৃতি সন্তান এড. মোমরেজুল ইসলামকে নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীর পাশাপাশি এলাকার  বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। বিশেষ করে পাইকগাছা-কয়রার যে সকল অসহায় পরিবারের পাশে  বিভিন্ন সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন  তারা এই ঘটনায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। সংখ্যা বিবেচনায় কয়েকশ’ পরিবার। উপকারভোগী এমন অনেক পরিবারের একাধিক সদস্য জানান, প্রয়োজনে, প্রতিবাদে তারা সপরিবারেই এই মানবিক মানুষটির পাশে থাকবেন।