খুলনা | বুধবার | ১৬ জুলাই ২০২৫ | ১ শ্রাবণ ১৪৩২

কার্যকরের ২৪ ঘণ্টা আগে ইয়েমেনে ভারতীয় নার্সের মৃত্যুদন্ড স্থগিত

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৪ এ.এম | ১৬ জুলাই ২০২৫


ইয়েমেনে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। আজ বুধবার (১৬ জুলাই) তার ফাঁসি হওয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ শেষ মুহূর্তে তা পিছিয়ে দিয়েছে।  
ভারতের কেরালার বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সী নিমিশা ২০০৮ সালে ইয়েমেনে নার্স হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে স্থানীয় আইন মেনে একটি ক্লিনিক চালাতে গিয়ে তিনি তালাল আব্দো মাহদি নামে এক ব্যক্তিকে ব্যবসায়িক অংশীদার করেন।
মঙ্গলবার এনডিটিভি জানিয়েছে, ২০১৭ সালে মাহদির মৃতদেহ কেটে টুকরো করে পানির ট্যাংকে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় পাওয়া যায়। এই ঘটনায় নিমিশাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ অনুযায়ী মাহদি নিমিশাকে হয়রানি করছিলেন, অর্থ আত্মসাৎ করেছিলেন এবং তার পাসপোর্ট জব্দ করে দেশে ফেরার পথ বন্ধ করে দেন। পালানোর পথ খুঁজতে গিয়ে নিমিশা তাকে চেতনানাশক ইনজেকশন দেন। এই ইনজেকশন পরে প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।   
ইয়েমেনের স্থানীয় আদালত ২০২০ সালে নিমিশাকে মৃত্যুদন্ড দেন। পরবর্তীতে নিমিশার পরিবার সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করলেও তা ২০২৩ সালে খারিজ হয়ে যায়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে হুতি বিদ্রোহী সরকারের প্রেসিডেন্ট মাহদি আল-মাশাত তার মৃত্যুদন্ড অনুমোদন করেন।  
ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী, ভুক্তভোগীর পরিবার যদি ‘রক্তমূল্য’ বা ‘দিয়া’ গ্রহণ করে, তাহলে মৃত্যুদন্ড মাফ করা যায়। এই সুযোগে ভরসা রেখে নিমিশার পরিবার মাহদির পরিবারের কাছে এক মিলিয়ন ডলার রক্তমূল্য দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। বর্তমানে ইয়েমেনের সানায় কারাবন্দি নিমিশার মা গত এপ্রিল থেকে ইয়েমেনে রয়েছেন এবং আলোচনার জন্য স্থানীয় সমাজকর্মী স্যামুয়েল জেরোমের সঙ্গে কাজ করছেন।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হুতি সরকারের সঙ্গে ভারতের ক‚টনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও নিমিশাকে তারা সর্বোচ্চ ক‚টনৈতিক ও মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা কারা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রসিকিউটরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন এবং পরিবারকে সময় দিতে সক্রিয় প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।  
মৃত্যুদন্ডের স্থগিতাদেশ নিমিশা প্রিয়ার জন্য সাময়িক স্বস্তি নিয়ে এলেও চূড়ান্ত মুক্তি এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে মাহদির পরিবারের সিদ্ধান্তের ওপর।