খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৪ অগাস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ‘গোপন বৈঠক’

আদালতে জবানবন্দি দিলেন মেজর সাদিকুলের স্ত্রী জাফরিন

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৬ এ.এম | ১৩ অগাস্ট ২০২৫


রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা সংলগ্ন একটি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ‘গোপন বৈঠকের’ সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেফতার সুমাইয়া জাফরিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক মঙ্গলবার তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এই গোপন বৈঠকের ঘটনায় সেনা হেফাজতে থাকা মেজর সাদিকুল হকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন। ৭ আগস্ট তাঁকে আদালতের মাধ্যমে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ড শেষে গতকাল তাঁকে আদালতে হাজির করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করে পুলিশ।
সুমাইয়া জাফরিনের বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা জেহাদ আদালতকে লিখিতভাবে জানান, মেজর সাদিকুলের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন একটি বহুজাতিক কোম্পানির আঞ্চলিক কর্মকর্তা। তিনি গত ৮ জুলাই বসুন্ধরার কনভেনশন হলে গোপন সভায় সরাসরি উপস্থিত ছিলেন। সেই মিটিংয়ে ৩০০ থেকে ৪০০ জন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী অংশ নেন। গোপন সভা চলাকালে কনভেনশন হলের সিসিটিভির ডিভিআরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। পরে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
আবেদনে আরও বলা হয়, এ ছাড়া সুমাইয়ার স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানীর মিরপুরের ডিওএইচএস, কাঁটাবনের রেস্তোরাঁ, পূর্বাচলের রেস্তোরাঁয় আওয়ামী লীগ ও ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে গোপন সভা করেছেন। তিনি অপারেশন ঢাকা ব্লকেডের একজন সক্রিয় সদস্য। তিনি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ডাটা এন্ট্রি, বিভিন্ন গোপন কোড তৈরি করা, অনলাইনে সিগন্যাল অ্যাপ ও হোয়াটসঅ্যাপে সংগঠনকে একত্র করে আসছিলেন।
অবশ্য মেজর সাদিকুলের স্ত্রী জাফরিনের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেল নিরাপরাধ।
এর আগে গত ১৩ জুলাই রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। তাতে বলা হয়, গত ৮ জুলাই বসুন্ধরা সংলগ্ন কে বি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা মিলে ৩০০-৪০০ জন অংশ নেন। তাঁরা সেখানে সরকার বিরোধী শ্লোগান দেন। বৈঠকে পরিকল্পনা করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়ার পর সারাদেশ থেকে লোকজন এসে ঢাকায় সমবেত হবেন। তাঁরা ঢাকার শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেশে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করবেন। তাঁরা সেখানে এসব ষড়যন্ত্র করেছিলেন।
গত ৩১ জুলাই সেনা সদরের এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়, মেজরকে সেনাবাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পরদিন ১ আগস্ট আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠা ওই সেনা কর্মকর্তাকে ১৭ জুলাই রাজধানীর উত্তরা থেকে আটক করে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।