খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৪ অগাস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২

দুই প্যানেলে বিভক্ত নেতাকর্মীরা

মোরেলগঞ্জে ১৮ বছর বিএনপির কাউন্সিল শুক্রবার

এইচ এম মইনুল ইসলাম, মোরেলগঞ্জ |
০৬:০৩ পি.এম | ১৩ অগাস্ট ২০২৫


টানা ১৮ বছর পরে আগামী শুক্রবার (১৫ আগষ্ট) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল। এ কাউন্সিলে গঠন করা হবে উপজেলা বিএনপির কমিটি। এর আগে সর্বশেষ কমিটি গঠন হয়েছিলো ২০০৭ সালে। ওই সময় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন সাবেক এমপি ড. মিয়া আব্বাস উদ্দিন। সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন শহিদুল হক বাবুল। এরপরে আর বিএনপি সাংগঠনিকভাবে সোজা হয়ে দাড়াতে পারেনি। আওয়ামী লীগের যাতাকলে কলে পড়ে দলীয় কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ে। নেতাকর্মীরা গায়েবী মামলাসহ নানা ধরণের মামলা হামলায় সর্বশান্ত হন। অনেকে বাড়িঘর, সংসার ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।

২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গায়েবী মামলার রূপকার ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকার পতনের আন্দোলন থেকে শুরু করে পলায়নের পরে স্বশব্দে রাজপথে ফেরে বিএনপি। তখন থেকে মোরেলগঞ্জ উপজেলায় দৃশ্যমান সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু হয় দলটির। পর্যায়ক্রমে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন, ১৪৪টি ওয়ার্ড ও পৌরসভা বিএনপির কাউন্সিল শেষ করে সকল ইউনিটে ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিরগুলোর প্রতিটি থেকে (পৌরসভা বাদে) ৫জন করে মোট ১ হাজার ১৩৬ জন ভোটার উপজেলা কাউন্সিলে ভোট দিবেন। তাদের ভোটে নির্বাচিত হবেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও দু’জন সাংগঠনিক সম্পাদক।

১৫ আগষ্ট অনুষ্ঠিতব্য কাউন্সিলকে ঘিরে উপজেলা বিএনপির গ্রæপিং দৃশ্যমান হয়েছে। দুটি প্যানেল ঘোষণা হয়েছে। একটি প্যানেলেরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি কাজী খায়রুজ্জামান শিপন ও অপরটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম। তার সমর্থিত প্যানেলের সভাপতি পদে রয়েছেন অধ্যাপক আব্দুল আউয়াল ও সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান ইয়াদ। অপরদিকে শিপন সমর্থন করেছেন সভাপতি পদে শহিদুল হক বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক পদে ফকির রাসেল আল ইসলামকে।

আসন্ন দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন ৩ জন। এরা হচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহবায়ক শহিদুল হক বাবুল, যুগ্ম আহŸায়ক অধ্যাপক আব্দুল আউয়াল ও যুগ্ম আহবায়ক এফ.এম শামীম আহসান।

সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক প্রভাষক ফকির রাসেল আল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক মো. আফজাল জোমাদ্দার ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক হোগলাপাশা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান ইয়াদ।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন ৫ জন। এরা হচ্ছেন, অধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিন টুলু, খেলাফত হোসেন খসরু, অধ্যাপক ফায়জুল হক, ইউনুস আলী আকন, জাহাঙ্গীর হোসেন লাভলু ও তালুকদার ফিরোজ শাহ।

টানা দেড় যুগ পরে বিএনপির কাউন্সিল ঘিরে গোটা উপজেলায় দলীয় কার্যক্রমে বেশ সাড়া পড়েছে। প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন। বিতরণ করছেন নানা অঙ্গিকার সংবলিত লিফলেট। বিরামহীনভাবে চলছে তাদের পথসভা, উঠান বৈঠক, গ্রæপিং, লবিং ও তদবির। উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের পক্ষে ভোট ও দোয়া চেয়ে শাটানো ব্যানার ফেষ্টুন।

সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক  মতিউর রহমান বাচ্চু বলেন, ১৮ বছর পরে বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ কাউন্সিলকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বইছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ১৫ আগষ্ট বিএনপির মিলন মেলা বসবে। কাউন্সিল সফল করতে কয়েকটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। ব্যাপক সাজগোছ, অতিথিদের নিমন্ত্রণ, মিডিয়াকর্মীদের উপস্থিতি ও নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।