খুলনা | শুক্রবার | ১৫ অগাস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২

ফুলতলায় ভোটার সমাবেশে মিয়া গোলাম পরওয়ার

স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আগে রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার করতে হবে

ফুলতলা প্রতিনিধি |
০২:১২ এ.এম | ১৫ অগাস্ট ২০২৫


বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, শেখ হাসিনার শাসন আমল ছিল গুম, খুন, হত্যা জুলুম নির্যাতন আর অন্যায় অত্যাচার রাহাজানি ধর্ষণের শাসনামল। এ সময় বিরোধীদলের লোকজনকে তাদের রাজনৈতিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার পালনসহ কোন ধরনের কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও কেউ তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারেনি। আপনারা দেখেছেন বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ কে তার ফেসবুক আইডিতে পার্শ্ববর্তী একটি দেশের আধিপত্য বিরোধী পোস্টের কারণেই পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। শুধু আবরার ফাহাদ নয় এরকম শত শত বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। 
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফুলতলা উপজেলার পথের বাজার জামে মসজিদ চত্বরে আটরা গিলাতলা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত ভোটার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন আমাকে গত ১৫ বছরের প্রায় সাড়ে সাত বছরই বিনা কারণে বিনা দোষে গ্রেফতার করে জেলে রাখার নামে আমার উপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছিল। আমার মরহুম পিতার দাফনও আমি করতে পারিনি। ৩৬ জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেয়েছে। কেউ কেউ এটাকে বিপ্লব বলে, আবার কেউ কেউ এটাকে ২য় স্বাধীনতাও বলে। আমাদের প্রথম স্বাধীনতা এসেছিল ’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তারপরও এটাকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলার কারণ হলো বিগত সময়ে মানুষের কথা বলার সুযোগ ছিল না, তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ভোটদানের অধিকার কোন কিছুই ছিল না।  জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মানুষ তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পেয়েছে এজন্য এটাকে ২য় স্বাধীনতা বলা হয়ে থাকে। দুই হাজার ছাত্র জনতার আত্মত্যাগ ও হাজার হাজার ছাত্র-জনতার পঙ্গুত্ববরণের মধ্য দিয়ে ফিরে পাওয়া স্বাধীনতাকে আমাদের সমুন্নত রাখতে হবে। এই স্বাধীনতাকে আবার ভুলুণ্ঠিত হতে দেয়া যাবে না। এজন্য আমরা বলেছি ফিরে পাওয়া স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলার জন্য যে রাষ্ট্র কাঠামোর জন্য একটা সরকার স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠেছিল সেই রাষ্ট্র কাঠামোর আমূল সংস্কার করতে হবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্যতা থাকতে হবে, দু’বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেনাসহ রাষ্ট্র কাঠামোর মিনিমাম একটা সংস্কার করে তারপর নির্বাচন দিতে হবে। জামায়াত সবসময় একটা নির্বাচনমুখী দল। অতীতেও এদেশের পার্লামেন্ট, উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদসহ সকল জায়গায় প্রতিনিধিত্ব করেছে। সুতরাং একটি স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হলে, ভুলুণ্ঠিত স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে আনতে হলে রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার করতে হবে।
ওয়ার্ড সভাপতি মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারি সেক্রেটারি মুন্সী মঈনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, প্রিন্সিপাল গাওসুল আজম হাদী, জেলা কর্ম পরিষদ সদস্য মাস্টার শেখ সিরাজুল ইসলাম। ফুলতলা উপজেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল আলিম মোল­া খান জানালি থানা আমির ডাক্তার সৈয়দ হাসান অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জেলা সহকারী সেক্রেটারি গাউসুল আজম হাদী, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম। শেখ শফিকুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন খানজাহান আলী থানা আমীর ডাঃ সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটো, ফুলতলা থানা আমীর অধ্যাপক আব্দুল আলীম মোল­া, জামায়াত নেতা গাজী মোর্শেদ মামুন, মুফতি মাছুম বিল­াহ রাহমানী, মুফতি ওমর ফারুক, মোঃ রফিকুল শেখ, নূর ইসলাম গাজী, ডাঃ কামাল হোসেন, মোঃ আশরাফ হোসেন মিঞা, মোঃ অলিয়ার রহমান সরদার প্রমুখ।