খুলনা | রবিবার | ১৭ অগাস্ট ২০২৫ | ২ ভাদ্র ১৪৩২

রহমতপুর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

চিতলমারী প্রতিনিধি |
০২:৩৫ পি.এম | ১৬ অগাস্ট ২০২৫


বাগেরহাটের চিতলমারীর রহমতপুর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শাহ মোহাম্মদ উল্লাহ’র দুর্নীতি-অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিচার এবং তাঁর অপসারণ দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। শনিবার (১৬ আগস্ট) বেলা ১২ টায় চিতলমারী উপজেলা প্রেসক্লাবে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থী অভিভাবকরা এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন শিক্ষার্থী অভিভাবক মোহাম্মদ লিয়াকত হোসেন।

লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথমদিকে প্রভাব খাটিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে শাহ্ মোহাম্মদ উল্লাহ রহমতপুর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হন। অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়ম এবং সেচ্ছাচারিতায় জড়িয়ে পড়েন। তিনি মাদ্রাসার নামে থাকা রাজধানী ঢাকার ফ্ল্যাট, স্থানীয় প্রায় ৫ একর জমি ও মাছের ঘের এবং কোদালিয়ার বিলের ৩৫ বিঘা জমি দখল করে ভোগ করছেন। প্রতিষ্ঠানটিতে সহশিক্ষা কার্যক্রম চালু। কিন্তু অধ্যক্ষ ৪ তলা নতুন একাডেমিক ভবনে নারী শিক্ষার্থীদের না ঢুকতে দিয়ে একটি জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান করতে বাধ্য করাচ্ছেন। যেখানে মেয়েদের স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই। মেয়েরা যাতে ৪ তলা ভবনের ওয়াশরুম ব্যবহার করতে না পারে সে জন্য তালাবদ্ধ করে রাখেন। তিনি ঠিকমত মাদ্রসায় আসেন না। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন না। মাদ্রসার কর্মচারীদের তিনি তার পারিবারিক কাজে ব্যবহার করেন। বছরে ২টি ওয়াজ মাহফিল ও মৌসুমি ফসলের কালেকশনসহ মাদ্রসা ও এতিমখানার কোন আয়-ব্যয়ের হিসাব তিনি দেন না। তার এ সকল অবৈধ কাজকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তিনি বছরের পর বছর মাদ্রসা পরিচালনা পরিষদের পকেট কমিটি গঠন করে আসছেন। সর্বশেষ চলতি বছরের কমিটি নিয়েও তিনি সীমাহীন দুর্নীতি করেছেন।

তাঁর এ সব অনিয়ম-দুর্নীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে তাঁর বিচার ও অপসারনের দাবিতে আমরা গত ১০ আগস্ট সম্মিলিত ভাবে মাদ্রাসা চত্বরে এক মানববন্ধন করি। এ ছাড়াও স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানটি বাঁচাতে তাঁর এ সব অনিয়ম-দুর্নীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতা বিষয়ে অধ্যক্ষের বিচার ও অপসারনের  দাবিতে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অধ্যক্ষ শাহ মোহাম্মদ উল্লাহ তার অপকর্ম আড়াল করতে তার বিরুদ্ধে যে মানববন্ধন করেছি তিনি তার প্রতিবাদ দিয়েছেন। দরবারে সাথে আমাদের শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকদের কোন বিরোধ নেই। দরবার অধ্যক্ষর ব্যাক্তিগত বিষয়। মাদ্রসা কেন্দ্রীক যাবতীয় অনিয়ম-দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতাকে নিয়ে তার সাথে আমাদের বিরোধ। আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা তাঁর অনিয়ম-দুর্নীতির বিচার ও অপসারণসহ মিথ্যা প্রতিবাদের নিন্দা জানাই।’  

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাক্ষ মোঃ আবু জাফর, হুমায়ুন কবির, প্রভাষক আব্দুর রহমান, মোঃ সুলাইমান, সহকারী শিক্ষক আবুল হাসান, রুহুল আমিন ফকির, মাসুদ রানা, মোঃ আলমগীর হোসেন, জুনিয়র শিক্ষক মোঃ সজীব হোসেন, দপ্তরী মোঃ সোহানুর রহমান, শিক্ষার্থী অভিভাবক মোঃ ফজর আলী, মোঃ সাইফুল শেখসহ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ শাহ মোহাম্মদ উল্লাহ তার বিরুদ্ধে আনিত দুর্নীতি, অনিময়ন ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। তারা প্রতিশোধ নেওয়া ও আমার ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য এটা করেছে।