খুলনা | সোমবার | ১৮ অগাস্ট ২০২৫ | ২ ভাদ্র ১৪৩২

ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি ব্যবসায়ীদের

খুলনা বিসিডিএস কমিটিতে আ’লীগের সুবিধাভোগীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০২:২৮ এ.এম | ১৭ অগাস্ট ২০২৫


খুলনা জেলা কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কমিটিতে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও তাদের সুবিধাভোগীদের আধিপত্য কোণঠাসা দীর্ঘদিনের ত্যাগী ব্যবসায়ীরা। মোটা অর্থের বিনিময়ে এই পকেট কমিটি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ফ্যাসিবাদী বিরোধীদের। অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল করে নির্বাচন কমিটি গঠনের দাবি তাদের। অন্যত্থায় বিভাগীয় সদর খুলনার অন্তত দেড় সহস্রাধিক ওষুধ ব্যবসায়ী ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমনি হুঁশিয়ারির ঘোষণা দেন ভুক্তভোগীরা।
লিখিত বক্তব্যে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান বলেন, আওয়ামীলীগ আমলে বিসিডিএস নিয়ন্ত্রিত হতো আওয়ামী লীগ সমর্থিত ব্যবসায়ীদের দ্বারা। শেষ কয়েক বছর খুলনার শেখ বাড়ি থেকেই কমিটি দেয়া হতো। তাদের মতের বাইরে যারাই যেতো তাদের বাদ দিয়ে ঘোষণা করা হতো কমিটি। সর্বশেষ ২০১৪ সালে এই সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরে আর কোনো নির্বাচন হয়নি। এরপর থেকে শেখ বাড়ির হস্তক্ষেপে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বারবার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। এই লম্বা সময়ে সরকারি হাসপাতালের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, ওষুধ কোম্পানির কাছে চাঁদাবাজিসহ নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদ সরকার পতনের পর আওয়ামীলীগের সুবিধাভোগীদের দিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৫ সদস্যের এই কমিটির মধ্যে ১০ জনই পূর্বের কমিটির সদস্য।
এই কমিটিতে আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। লিখিত বক্তব্যে ব্যবসায়ী আজিজুর রহমান উলে­খ করেন, কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে খান মাহতাব আহমেদকে। যিনি কোন ব্যবসায়ীই নন। যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে আওয়ামীলীগ আমলের সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী খান সাইফুল ইসলামকে। যার বিরুদ্ধে খুলনার সকল হাসপাতালের ওষধ সরবরাহ সিন্ডিকেটের অভিযোগ রয়েছে। সাইফুল ইসলাম খুলনা শিশু হাসপাতালের ওষুধ প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। যেটা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি আওয়ামীলীগ আমলেও সকল কমিটিতে ছিলেন আবার কতিপয় নেতাদের ভুল বুঝিয়ে বর্তমান কমিটিতেও বড় পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন পূর্বের কমিটির মোঃ আব্দুল লতিফ শেখ, আনিছুর রহমান লিটু, মোঃ ফরিদ উদ্দিন হাওলাদার, হেদায়েতুল ইসলাম পলাশ, মোঃ হাফিজুর রহমান, মোঃ আব্দুল মান্নান মোড়ল, মোঃ আবিদউজ্জামান, মোঃ আনোয়ার হোসেন ও মোঃ তৌফিক হোসেন। 
অভিযোগ উঠেছে এসব সদস্যরা পূর্বে সাধারণ ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিলো। শেখ বাড়িকে ব্যবহার করে সমিতির নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংসে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে। তাদের দিয়ে গঠিত এই কমিটি আবারও ওষুধ ব্যবসায়ীদের জন্য ফ্যাসিবাদ জন্ম দেবে। 
এদিকে এই কমিটি বাদ দিয়ে অবিলম্বে নির্বাচন কালীন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে আজিজুর রহমান বলেন, উক্ত আওয়ামী কমিটি অনতিবিলম্বে বাতিল করে নির্বাচন কমিটি গঠন করে ১২০দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করা না হলে খুলনার সাধারণ কেমিস্টগণ পরবর্তী ৪ দফা কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে স্মারকলিপি প্রদান, গণস্বাক্ষর কর্মসূচি, মানববন্ধন কর্মসূচি ও  খুলনা জেলাব্যাপী ফার্মেসী দোকান বন্ধ রাখা। 
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে খান মাহতাব আহমেদ বলেন, যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো সঠিক নয়। যারা কমিটি ঘোষণা করেছে তারা যাচাই বাছাই করেই করেছে।