খুলনা | মঙ্গলবার | ১৯ অগাস্ট ২০২৫ | ৩ ভাদ্র ১৪৩২

মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন ২৮ ডিসেম্বর

খবর প্রতিবেদন |
০৫:৩০ পি.এম | ১৮ অগাস্ট ২০২৫


২০২১ সালে রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারে প্রথম জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে সেনা সমর্থিত জান্তা সরকার। আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সোমবার মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পার্লামেন্টের  উচ্চকক্ষ- অ্যামিওথা হ্লুটাও (জাতীয় পরিষদ) এবং নিম্নকক্ষ- পাইথু হ্লুটাও (প্রতিনিধি পরিষদ) জন্য বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সাধারণ নির্বাচনের প্রথম ধাপ ২৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে এবং  রাজ্য এবং আঞ্চলিক আইনসভাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের তারিখ পরে ঘোষণা করা হবে।

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রায় ৫৫টি দল নির্বাচনের জন্য নিবন্ধন করেছে, তাদের মধ্যে নয়টি দল দেশব্যাপী আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরিকল্পনা করছে।

এর আগে গত ৩১ জুলাই জাতীয় নির্বাচনের পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে বেসামরিক নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা। তবে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির শাসনভার এখনও আগের মতোই সেনাপ্রধানের হাতে রয়ে গেছে। তিনি বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার যে আদেশ জারি করা হয়েছিল, তা বাতিল এবং একটি তত্ত্বাবধায়ক প্রশাসন গঠন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি দেশে একটি নতুন বিশেষ কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই কমিশন আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন তদারকি করবে।

তবে জান্তা সরকারের এই পদক্ষেপে মিয়ানমারে প্রকৃতপক্ষে ক্ষমতার কোনও পরিবর্তন ঘটেনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হলেও দেশটিতে অভ্যুত্থানের হোতা ও সামরিক বাহিনীর প্রধান মিন অং হ্লেইং কার্যত সব ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন। কারণ তিনি একই সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনী প্রধানের দায়িত্বে আছেন।

এদিকে পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ জান্তার ঘোষিত এই নির্বাচনকে ক্ষমতায় সেনা জেনারেলদের অবস্থান পাকাপোক্ত করার প্রহসন হিসেবে দেখছে।

সমালোচকরা বলেছেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় অংশ নেওয়া প্রার্থীরাই প্রাধান্য পাবেন এবং বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।

এর আগেও সেনা সমর্থিত জান্তা সরকার নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা জানালেও মিয়ানমারের বিভিন্ন জায়গায় সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপগুলোর তৎপরতার কারণে নির্বাচনের পরিকল্পনা পেছাতে হয় তাদের।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নোবেল বিজয়ী নেত্রী অং সান সু চির দল এই নিবার্চনে জয়লাখ করে সরকার গঠন করে। তবে মাত্র তিন মাসের মাথায় ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ভোটে কারচুটির অভিযোগ এনে নির্বাচনের ফলাফলকে অবৈধ দাবি করে দেশটির সেনাবাহিনী এবং রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে।  এর পর থেকেই দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলছে।   
সূত্র: বিবিসি