খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৮ অগাস্ট ২০২৫ | ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

মব সৃষ্টি করে ফজিলাতুন্নেছা হলে মনোনয়ন ফরম নিতে বাধা: ছাত্রদল

খবর প্রতিবেদন |
১১:১০ পি.এম | ১৮ অগাস্ট ২০২৫


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সময় মব সৃষ্টি করে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রদল। আজ সোমবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির ঢাবি শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন অভিযোগ উত্থাপন করেন।

গণেশ চন্দ্র রায় জানান, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাণের দাবি ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিবেশ ও নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের (সবার সমান সুযোগ) অভাব স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান থাকা সত্ত্বেও গণতন্ত্র ও শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্টকে ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঘোষিত তফসিল অনুসারে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নেতা–কর্মীকে যথানিয়মে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সাংগঠনিক নির্দেশনা দেওয়া হয়।

গণেশ চন্দ্র রায় আরও জানান, সংগঠনের নির্দেশনা অনুযায়ী দিনব্যাপী বিভিন্ন হল ও ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। কিন্তু ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ফরম সংগ্রহ করতে গেলে কিছু শিক্ষার্থী প্রশাসনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন এবং ছাত্রদল-সমর্থিত প্রার্থীদের ওপর হামলার চেষ্টা চালান।

ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, সাংগঠনিক নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাবি ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা আজ ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। সে ধারাবাহিকতায় ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী নিজ হল সংসদের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে ফরম সংগ্রহ করতে গেলে ‘প্রশাসনের ভূমিকা’ পালন করা একদল শিক্ষার্থী মব সৃষ্টি করে তাঁদের ওপর হামলা করার চেষ্টা করেন এবং মনোনয়ন ফরম সংগ্রহে বাধা সৃষ্টি করেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অনুরোধে হলে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা উপস্থিত হলেও তাঁরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।

গণেশ চন্দ্র রায় সাহস আরও বলেন, এ সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে না পেরে হল থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য হন। ঢাবি প্রশাসনের এ ধারাবাহিক ব্যর্থতা ও এ ধরনের নৈরাজ্যবাদী মব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে অনীহার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা ও ডাকসু নির্বাচনের জন্য অত্যাবশ্যক ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’–এর অভাব যে কতটা প্রকট, তা আজ এ ন্যক্কারজনক ঘটনার মাধ্যমে প্রতীয়মান হয়েছে।

ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এ ঘটনায় জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল। একই সঙ্গে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিতে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল নেতা নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে বিভিন্ন হলে এখনো ছাত্রলীগের অপরাধীরা অবস্থান করছেন। তাঁরা হলগুলোতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত ও বিরাজনীতিকরণ করার চেষ্টা করছেন। কিছু গুপ্ত সংগঠন তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মিলেমিশে হলের মধ্যে মব পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। আজকে ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের মনোনয়নপত্র নিতে বাধা দেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মালিহা বিনতে খান বলেন, ‘হলে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। আমি কয়েকজন শিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে বেলা ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে হলে যাই। সাধারণ শিক্ষার্থী নামধারী কিছু শিক্ষার্থী এসে আমাদের বাধা দেয়। পরে হল প্রশাসনকে জানালেও তারা আমাদের কথা শোনেনি। শিক্ষার্থীরা মব সৃষ্টি করে আমাদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে দেয়নি। গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’