খুলনা | মঙ্গলবার | ১৯ অগাস্ট ২০২৫ | ৪ ভাদ্র ১৪৩২

নতুন কেন্দ্র নয়, বিদ্যমান কেন্দ্রেই সমাধান খুঁজছে ইসি

নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রস্তুত এ সপ্তাহেই ঘোষণা

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪১ এ.এম | ১৯ অগাস্ট ২০২৫


নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, এই সপ্তাহের ভেতরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা আপনাদের দিতে পারব। সোমবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, কর্মপরিকল্পনার ব্যাপারে আমি বলেছিলাম, এই সপ্তাহে এটা করব। হ্যাঁ, এটা কোঅর্ডিনেট করা হচ্ছে। এই সপ্তাহের ভেতরে আপনাদের দিতে পারব।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাবে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, ইসি আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। নির্বাচন নিয়ে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে এবং তা অনুমোদনের জন্য কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি। সোমবার করেন সচিব।
এনআইডি সংশোধন প্রসঙ্গে সচিব বলেন, এনআইডি সংশোধনের জন্য দেওয়া যে আবেদনগুলো প্রাথমিকভাবে বাতিল হয়েছে সেগুলো পুনর্বিবেচনার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে সারা দেশে এ ধরনের আপিলের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। ইসি মনে করে, যদি ডাটা এন্ট্রি আরও নিখুঁত হয়, তাহলে আপত্তির সংখ্যা আরও কমে আসবে।
ভাটার নিবন্ধন ফরম-২ স্ক্যানের বিষয়ে আখতার আহমেদ জানান, ২০০৮ সাল থেকে যে ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, তার অনেকগুলো ফর্ম এখনও স্ক্যান করা বাকি। সেই ফর্মগুলো স্ক্যান করে কমিশনের পোর্টালে আপলোড করার কাজ শুরু হয়েছে। এর ফলে তথ্যভান্ডার আরও সমৃদ্ধ হবে।
ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কমিশনে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের নীতিমালা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়বে না বরং বিদ্যমান কেন্দ্রগুলোতেই ভোটারদের উপস্থিতি সমন্বয় করা হবে। বর্তমানে প্রতি ৫০০ ভোটারের জন্য একটি বুথ আছে, যা ভবিষ্যতে ৬০০ করা হতে পারে।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়ে সচিব জানান, যে ২২টি রাজনৈতিক দলের আবেদন মাঠপর্যায়ে যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছিল, তাদের কাজ চলছে। যাদের আবেদন বাতিল বা বিবেচনাযোগ্য মনে হয়নি, তাদের সুনির্দিষ্ট কারণ উলে­খ করে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। বাতিল হওয়ার পেছনে কোন কোন শর্ত পূরণ হয়নি, তা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও আগাম প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এই মুহূর্তে কোনো উদ্বেগ নেই বলে কমিশন জানিয়েছে। সবার নিজস্ব কাজ গুছিয়ে নিলেই হবে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত। মাঠ প্রশাসন নিজ নিজ এলাকায় কাজ করছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তাদের দায়িত্ব পালন করছে। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাজের ক্ষেত্রে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে, যাতে শেষ মুহূর্তে কোনো ধরনের হুড়োহুড়ি বা সমস্যা না হয়।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন কোনো ভোটকেন্দ্র যুক্ত করা হবে না বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে বিদ্যমান কেন্দ্র ও বুথ সংখ্যা সমন্বয়ের মাধ্যমে ভোটারদের চাপ মোকাবিলা করার পরিকল্পনা করছে সংস্থাটি।  
নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, কর্মপরিকল্পনার ব্যাপারে আমি বলেছিলাম, আমরা এই সপ্তাহে এটা করব। হ্যাঁ, এটা কো-অর্ডিনেট করা হচ্ছে। কর্মপরিকল্পনার তো আন্ত অনুভাগ সম্পর্কিত এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে ড্রাফটটা করা হয়েছে। ড্রাফটটা এখন কমিশনে দিয়ে আমরা এপ্র“ভ করবো। আমার বিশ্বাস যে এটা আমরা এই সপ্তাহের ভিতরে আপনাদেরকে দিতে পারবো। 
আখতার আহমেদ বলেন, মাঠ প্রশাসনে নিয়োজিত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে সমন্বয় কীভাবে হবে? তাদের টিওরটা (টার্মস অব রেস্পন্সিবিলিটি) কি হবে? ফোকাল পার্সন আমাদের এখান থেকে নির্ধারণের ব্যাপার আছে। পরিপত্র নির্দেশনা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কিত যে কাগজপত্র তৈরি কর এ বিষয়ে এখন একটা মিটিং চলছে। আমি ওখান থেকে আপনাদের সাথে কথা বলার জন্য চলে আসছি। আপনাদের সাথে কথা বলে আবার এই মিটিং এ যাব এবং এটা আমরা কোঅর্ডিনেট করার চেষ্টা করছি যেন আমরা একটু এহেড ইন টাইম কাজগুলোকে গুছিয়ে রাখতে পারি। 
সচিব বলেন, সীমানা নির্ধারণের যে বিষয়টা ছিল  যে ৮২ টা কনস্টিটিয়েন্সি সম্পর্কিত যে আপত্তি এসছে সেটা আমরা শোনানি ২৪ আগস্ট থেকে শুরু করব। চারদিন টানা শুনানি হবে। এবং আমরা এটাকে ফাইনালাইজ করব। আজকে আমাদের মান্থলি কোঅর্ডিনেশন কমিটি মিটিং ছিল সেখানে আমরা এনআইডি কারেকশনের স্ট্যাটাসটা জানার চেষ্টা করেছি বা জেনেছি। এনআইডি কারেকশনের জন্য যেগুলো রিজেকশন হচ্ছে সেগুলো আবার রিসাবমিট করছেন যে সংশোধনের জন্য মানে আমাদের দৃষ্টিতে যেটা গ্রহণযোগ্য না এবং সে কারণে বাতিল করা হয়েছে।   
কিন্তু আবেদনকারীর দৃষ্টিতে সেটা সঠিক কাজেই তেনা তার এটা এপিল করার সুযোগ আছে এবং তিনি এপিল করেন এখন আমরা সেই অ্যাপেল অনুযায়ী নিষ্পত্তি করব এবং এটার সংখ্যায় এখন এরাউন্ড ৮০ হাজার। সব মিলিয়ে সারাদেশে এবং আমার মনে হয় যেটা উলে­খযোগ্য সংখ্যা কমে আসছে এবং আমরা বিশ্বাস করি যে আমাদের যদি ডেটা এন্ট্রিটা বেটার হয় তাহলে এটার সংখ্যা আরো কমবে। এরপরেও থাকবে আপত্তি তো থাকতেই পারে পরিবর্তনের জন্য আবেদন থাকবে। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু সংখ্যাটা কমিয়ে নিয়ে আসা যাবে।  
আখতার আহমেদ বলেন, আজকে আরেকটা জিনিস নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি আমাদের মান্থলি কো-অর্ডিনেশন কমিটি মিটিং এ সেটা হচ্ছে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের নীতিমালা। এবং এখানে আজকে আমরা বলেছি যে ভোট কেন্দ্র সংখ্যা বাড়বে না। বাড়বে না এর অর্থ এই নয় যে অতীতে যা ছিল সেটাই একদম হুবহু এটা রাখতে হবে। যৌক্তিক বিবেচনায় যদি বাড়ে সেটা বাড়ানো হবে। আমাদের যে পার ভোট কেন্দ্র জাতীয় নির্বাচনের সাথে সম্পর্কিত ৩ হাজার জনের জন্য একটা কেন্দ্র সেই অনুযায়ী আমরা হিসাব করে আমাদের ধারণা। 
নির্বাচন কমিশনের এই কর্মকর্তা বলেন, যে ভোট কেন্দ্র না বাড়িয়েও শুধু ভোটার উপস্থিতির বিষয়টাকে যদি আমরা বিবেচনায় নিই, তাহলে আমরা হয়তো দেখা যাবে যে এটাকে সমন্বয় করতে পারছি। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি এখন আমাদের পার কেন্দ্রে পুরুষদের জন্য এটা আছে ৫০০ জনের জন্য একটা বুথ। এটাকে আমরা যদি ৬০০ করতে পারি তাহলে দেখা যেতে পারে যে আমরা একোমোডেট করতে পারব। সেইভাবে আমরা একটু হিসাব করছি এবং হিসাব করে যদি দেখি যে হ্যাঁ এটা গ্রহণযোগ্য তাহলে আমরা সেই মাত্রায় কাজ করবো। এর বাইরে আর কি আছে? মোটামুটিভাবে এই জিনিসগুলো নিয়ে আপনাদের কাছে আজকে আলোচনা হয়েছে।  
সচিব বলেন, নতুন নিবন্ধনের আবেদন করা ২২টি রাজনৈতিক দলের, প্রাথমিক ভাবে যে দলের আমাদের মনে হয়েছে যে মাঠ পর্যায়ে পাঠানো দরকার আমরা সেটা পাঠিয়ে দিয়েছি। আর যাদেরটা বাতিল বা বিবেচনাযোগ্য হয়নি তাদেরকে আমরা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিচ্ছি যে, এই কারণে এবং এবার আমরা স্পষ্ট করে বলতে বলে দিব যে কোন কারণটায় বা কোন শর্তের অপূর্ণতার কারণে তাদেরটা বিবেচনা করা যায়নি সেটা আমরা স্পেসিফিক করে উলে­খ করে দেব।
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব আরও বলেন, নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা তো আরও পরের ব্যাপার। এ ব্যাপারে আমাদের কনসার হওয়ার এই মুহূর্তে কোন কারণ আছে। যে যার জায়গাটাকে গুছিয়ে নিলেই তো হয়ে যাবে সেটা নির্বাচন ব্যবস্থাপনার সাথে আমরা এই মুহূর্তে জড়িত আপনার প্রশাসন মাঠ আছে যারা তারা রেসপেক্টিভ এরিয়াতে কাজ করছেন। আইনশৃঙ্খলার সাথে যারা আছেন তারা রেসপেক্টিভ এরিয়াতে করছেন। আমাদের ভিতরে একটা যোগাযোগ তো আছেই। আমার মনে হয় না যে এটা নিয়ে এই মুহূর্তে আমার কোন  উদ্বেগ প্রকাশ করার কোন কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই।