খুলনা | মঙ্গলবার | ১৯ অগাস্ট ২০২৫ | ৪ ভাদ্র ১৪৩২

নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন বাহিনীতে ২৭৬৩৭ জন নিয়োগ

‘আমরা চুনোপুঁটি ধরি, বড় একটা রুই ধরেছি আর আপনারা লেগে গেলেন’

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪৪ এ.এম | ১৯ অগাস্ট ২০২৫


আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরাপত্তা জোরদার করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীতে ২৭ হাজার ৬৩৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
নির্বাচন নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন নিয়ে আপনারা সব সময় বলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে কোনো নিয়োগ হয়নি। এজন্য আমি আপনাদের জানাচ্ছি নির্বাচনের আগেই পুলিশ বাহিনীতে ১৫ হাজার ৮৫১ জনকে নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) ৪ হাজার ৪৬৯ জন ও আনসার ৫ হাজার ৫৫১ জন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত না তারপরও কারায় ১ হাজার ৫৫৮ জনকে ও ফায়ার সার্ভিসে ২০৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, র‌্যাবে যারা ছিল তাদের আমরা নতুন র‌্যাবে নিয়ে আসছি এবং কোস্ট গার্ডেও নেভি থেকে নেওয়া হয়েছে। এগুলো সব নতুন নিয়োগ। বর্তমান সরকার আসার পর এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
কোন কোন পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে-জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশের কনস্টেবল, এসআই, এসপি এই তিনটি পদে নিয়োগ হয়। এর মধ্যে কনস্টেবল ও এসআই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসপির সংখ্যাটা আমরা বলিনি। এসপি নেই বা ক্যাডারের কেউ নেই এই নতুন নিয়োগের সংখ্যায়। বিজিবির ক্ষেত্রে কনস্টেবল ও আনসারের ক্ষেত্রেও কনস্টেবল।
যে নিয়োগগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো কী নতুন পদসৃজন করা হয়েছে, নাকি শূন্য পদে দেওয়া হয়েছে-জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশির ভাগই নতুন পদসৃজন করা হয়েছে। আর কিছু নিয়োগ দেওয়া হয়েছে শূন্য পদে।
মাইটিভির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় বাদী বলেছে এই ঘটনায় চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততা নেই। তবুও কেন তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে-এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে আদালতকে জিজ্ঞাসা করেন। পুলিশের এ্যারেস্ট করা অবৈধ হলে আদালত তাকে ছেড়ে দিল। আদালত কারো কথা শোনে না। তারা তো স্বাধীন।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই সাধারণ জনগণ বা নির্দোষ জনগণ কোনোভাবেই যেন হয়রানির শিকার না হয়। যে দোষী সে কোনো অবস্থায় ছাড়া পাবে না। আমরা সবসময় চুনোপুঁটিগুলো ধরি। বড় রুই মাছ সব সময় ছাড়া পেয়ে যায়। বড় একটা ধরা পড়ছে এখন আপনারা সবাই লেগে গেছেন। চুনোপুঁটি সম্পর্কে কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। সুতরাং নির্দোষ এমন কেউ ছোট-খাটো কিন্তু তাকে ধরা হলে সে সম্পর্কে আপনারা বলেন। আপনারা সব সময় সত্য ঘটনা বলে থাকেন বলে আপনাদের ধন্যবাদ।
গত ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে এক রিকশাচালককে আটক করা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দফতর থেকে একটা বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। এরপর তো আমাদের আর কোনো কথা নেই।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফুল দেওয়া নিয়ে কোনো নির্দেশনা ছিল কি না আমি জানি না। এ ব্যাপারে আপনারা (সাংবাদিক) ভালো বলতে পারবেন। আমাদের নির্দেশনা ছিল যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
চাকুরিবিধি অনুযায়ী ১৮ জন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আগামীতে কি এরকম আরও ব্যবস্থা নেবেন-এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এটা চলমান প্রক্রিয়া। ৬০ কর্মদিবসের বেশি অনুপস্থিত থাকলে বরখাস্ত করে দেয়, এটা চলমান প্রক্রিয়া চলতেই থাকবে। 
ঢাকার আশপাশে মব জাস্টিস কমলেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় এখনো মব জাস্টিস চলছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা । সভায় জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলা রেকর্ড, সারাদেশের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি, মব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, ছিনতাই-চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিনসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সভায় মব জাস্টিস কীভাবে কমিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি বলব না যে মব জাস্টিস এলিমিনেট (বন্ধ) হয়ে গেছে। এখনো মব হচ্ছে, যেমন কিছু দিন আগে রংপুরে একটা মব জাস্টিস হয়েছে। ঢাকাতে মব জাস্টিস কমেছে। কিন্তু আশেপাশে দুই-একটা মব জাস্টিস হয়েই যাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি যতটা কমিয়ে আনা যায়।
১৫ আগস্ট ঘিরে ফুল দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফুল দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল কি না আমি জানি না। কিন্তু আমাদের নির্দেশনা হলো কোনা অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সে বিষয়ে খেয়াল রাখা।
মাইটিভির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় বাদী বলেছেন এ ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা নেই। তবুও কেন তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে-এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে কোর্টকে জিজ্ঞাসা করেন। পুলিশের এ্যারেস্ট করা অবৈধ হলে কোর্ট তাকে ছেড়ে দিলো। কোর্ট কারো কথা শোনে না। তারা তো স্বাধীন।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আমরা চাই সাধারণ জনগণ বা নির্দোষ জনগণ কোনোভাবেই যেন হয়রানির শিকার না হয়। যে দোষী সে কোনো অবস্থায় ছাড়া পাবে না। আমরা সব সময় চুনোপুঁটিগুলো ধরি। বড় রুই মাছ সবসময় ছাড়া পেয়ে যায়। বড় একটা ধরা পড়েছে, এখন আপনারা সবাই লেগে গেছেন। চুনোপুঁটি সম্পর্কে কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। সুতরাং নির্দোষ এমন কেউ ছোটখাটো কিন্তু তাকে ধরা হলে সে সম্পর্কে আপনারা বলেন। আপনারা সব সময় সত্য ঘটনা বলে থাকেন বলে আপনাদের ধন্যবাদ।