খুলনা | মঙ্গলবার | ১৮ নভেম্বর ২০২৫ | ৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

তেরখাদায় ফেক আইডির মাধ্যমে রাজনৈতিক নেতা-সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার!

তেরখাদা প্রতিনিধি |
১১:৩৪ পি.এম | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫


তেরখাদা উপজেলায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করে একাধিক ভুয়া (ফেক) আইডি ও পেজের মাধ্যমে সম্মানিত ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, সাংবাদিক, চাকরিজীবী এবং ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এতে করে এলাকায় সামাজিক অস্থিরতা ও বিভ্রান্তি বাড়ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
‘তেরখাদার বার্তা’, ‘গফ ঐধংধহ’, ‘ঞবৎড়শযধফধ টঢ়ফধঃবং’ নামের কয়েকটি ফেসবুক আইডি ও পেজ ব্যবহার করে নিয়মিতভাবে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য, দুর্নীতির অভিযোগ এবং চরিত্রহননের মত বিষয় প্রচার করা হচ্ছে। এসব পোস্টে বিভ্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এতে ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক সম্মান ক্ষুন্ন হওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিবেশও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
এই অপপ্রচারের শিকার হয়েছেন সৌদি প্রবাসী খান সিরাজুল ইসলাম, সাংবাদিক রাসেল আহমেদ, বিএনপি’র সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সাজ্জাদ হোসেন নান্টা, বিএনপি নেতা মিল্টন হোসেন মুন্সী, আবুল হোসেন বাবু, ছাগলাদাহ ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি এমদাদ সিং, যুবদল নেতা ওহিদ শেখ, গোলাম মোস্তফা ভুট্টো, সোহেল শেখসহ আরও অনেকে। ভুক্তভোগীরা তেরখাদা থানায় পৃথকভাবে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
বিএনপি’র স্থানীয় নেতারা ঘটনাটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে দেখছেন। তাদের দাবি এই অপপ্রচারের মাধ্যমে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের দুর্নীতি ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরির চেষ্টা চলছে। উপজেলা বিএনপি’র সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক চৌধুরী কওসার আলী বিষয়টিকে শুধুমাত্র বিরক্তির নয়, বরং সমাজের জন্য এক ভয়াবহ ফাঁদ হিসেবে মনে করছেন।
তেরখাদার প্রবীণ সাংবাদিক নূর মোহাম্মদ সিফাত বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। তার মতে একটি সংঘবদ্ধ চক্র পরিকল্পিতভাবে ভুয়া আইডি ব্যবহার করে সম্মানিত সাংবাদিক ও নাগরিকদের টার্গেট করছে, যার প্রভাব পড়ছে সমাজে।
২০২২ সালের সর্বশেষ জনগণনা অনুযায়ী, তেরখাদা উপজেলার জনসংখ্যা ১ লক্ষ ১০ হাজার ৬২৭ জন। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন এবং উলে­খযোগ্য সংখ্যক মানুষ স্মার্টফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়। তরুণদের অনেকেই মজা কিংবা পরিচয় গোপন রাখতে ফেক আইডি খুললেও, এসব আইডি অপরাধমূলক কাজেও ব্যবহৃত হচ্ছে।
তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, এসব ফেক আইডির বিরুদ্ধে থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে সাইবার ক্রাইম ইউনিট কাজ শুরু করেছে। দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন এই ধরণের অপপ্রচার দ্রুত বন্ধ না করা গেলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তারা প্রশাসনের প্রতি কঠোর নজরদারি এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে এসব ফেক আইডির ব্যবহারকারীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহŸান জানিয়েছেন।