খুলনা | মঙ্গলবার | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ২৫ ভাদ্র ১৪৩২

আসন্ন নির্বাচনকে সহজভাবে নিলে ভুল হবে: তারেক রহমান

খবর প্রতিবেদন |
১২:০২ এ.এম | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫


আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সহজভাবে নিলে ভুল হবে—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি এক বছর আগে বলেছিলাম, আমরা যত সহজ ভাবছি, তত সহজ নয় ব্যাপারটি।’

সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেছেন। ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এ সম্মেলনে লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সম্পর্কে তারেক রহমান বলেন, প্রায় সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সেখানে অংশগ্রহণ করেছে। তারা বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত দিয়েছে। সেখানে যে বিষয়গুলোতে একমত হওয়া যায়নি, সেগুলো দেশের জনগণের ওপরে ছেড়ে দেওয়া হোক।

ঐকমত্যের বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আসুন জনগণের ওপর যদি বিশ্বাস রাখেন, জনগণের ওপর যদি আস্থা রাখেন, তাহলে জনগণের ওপর ছেড়ে দিন। দিনশেষে রাজনীতিতে আমাদের আস্থা, আমাদের বিশ্বাস বাংলাদেশের জনগণ।’

তারেক রহমান বলেন, ‘দেশে জবাবদিহিতার সকল ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। মানুষকে গুম, খুন ও হত্যা করা হয়েছিল। ১৯৭১ সালে লাখো প্রাণের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আমাদের দেশের মানুষের অনেক প্রত্যাশা ছিল। তখন থেকে গণতন্ত্রের টুটি চেপে ধরার জন্য ষড়যন্ত্রের জাল তারা বুনেছিল। কখনও তারা সফলও হয়েছিল। যারা শ্বৈরাচার ছিল তারা গুম, খুন, মিথ্যা মামলার রাজনীতি শুরু করেছিল। লুটপাটের রাজনীতি শুরু করেছিল, মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি শুরু করেছিল।’

তিনি বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে আমরা দেখেছি আমাদের কতজন রাজপথে রক্ত দিয়েছে। আমরা দেখেছি জুলাই আন্দোলনে কীভাবে নির্বিচারে মানুষ খুন করেছে, নারীদের অত্যাচার করেছে, শিশুরাও সেদিন হেলিকপ্টারের গুলি থেকে রক্ষা পায়নি। কিন্তু পরিশেষে আমরা দেখেছি বিজয় জনগনের হয়েছে। পরাজিত হয়েছে শ্বৈরাচার। দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে শ্বৈরাচার। দেশের বিভিন্ন স্থরের মানুষের আত্মত্যাগে আজ বাংলাদেশ স্বাধীন।’

তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে, শিক্ষা, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষাখাতসহ অনেকখাতে নীতি আদর্শ রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আরও যারা রাজনৈতিক দল আছে তাদেরও নীতি আদর্শ ও পরিকল্পনা আছে।  বিভিন্ন দলের বিভিন্ন মতামত থাকতেই পারে। মানুষের এখন প্রত্যাশা দেশকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে হবে। দেশের যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে তা গড়ে তুলতে হবে। কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে হবে। বেকার সমস্যা দূরীকরণে রাজনীতিক দলগুলোর পরিকল্পনা থাকতে হবে। নারীদের সমস্যা আছে, সে গুলোর দিক নির্দেশনা দিতে হবে আমাদেরকে।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনীতিক দল কতগুলো বক্তব্য দিচ্ছে। বক্তব্য দেওয়ার অধিকার সকলের আছে কিন্তু সহকর্মীবৃন্দ বক্তব্য দিতে গিয়ে দেশের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়, স্বৈরাচার ফিরে আসার পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেটি কোনো অবস্থাতেই ভালো হবে না।’

এর আগে সম্মেলন উদ্বোধন করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে যখন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন করার, ঠিক তখনই বাংলাদেশের সেই শত্রুরা, যারা বারবার বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছে, সেই চক্রান্তকারীরা আবার বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছে।

অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক করে মির্জা ফখরুল বলেন, যাঁরা আজকে ভুল করছেন, এই চিন্তা করে যে, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করলে তাঁরা উপকৃত হবেন; কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ উপকৃত হবে না।

সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মির্জা ফয়সাল আমিনকে সভাপতি পদে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। সভাপতি পদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল না। জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক পয়গাম আলীকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।