খুলনা | মঙ্গলবার | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ২৫ ভাদ্র ১৪৩২

আস্থা ভোটে হেরে গেলেন প্রধানমন্ত্রী, ফরাসি সরকারের পতন

খবর প্রতিবেদন |
০১:১২ এ.এম | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫


ফরাসি রাজনীতিতে আবারও বড় ধাক্কা লেগেছে। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু অনাস্থা ভোটে পরাজিত হওয়ায় সরকার ভেঙে পড়েছে।

সোমবার রাতে সিএনএন জানিয়েছে, সংসদে ৩৬৪ জন এমপি বাইরুর বিরুদ্ধে ভোট দেন, আর পক্ষে যান মাত্র ১৯৪ জন। সরকার পতনের জন্য প্রয়োজনীয় ২৮০ ভোটের চেয়ে এই সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে মাত্র ৯ মাস ক্ষমতায় থাকার পরই পদত্যাগে বাধ্য হচ্ছেন বাইরু।

সংসদে ৪৪ বিলিয়ন ইউরোর সাশ্রয় পরিকল্পনা পাশ করানোর চেষ্টা করেছিলেন বাইরু। এতে সরকারি ব্যয় স্থগিত করা ও দুটি সরকারি ছুটি বাতিলের মতো প্রস্তাব ছিল, যা জনগণের মধ্যে তীব্র অস্বস্তি তৈরি করে। ভোটের আগে এমপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সরকারকে নামানো সম্ভব, কিন্তু বাস্তবতাকে মুছে ফেলা সম্ভব নয়। ঋণের বোঝা আরও বাড়বে এবং ব্যয়ও থামবে না।’

বাইরুর পতনে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর সামনে জটিলতা আরও বেড়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন তিনি। প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়েন লেকোর্নু এবং বিচারমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিনকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে। কিন্তু বিরোধীরা ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দিয়েছে, আরেকজন কেন্দ্রপন্থী প্রধানমন্ত্রী আসলে তাঁর বিরুদ্ধেও সঙ্গে সঙ্গে অনাস্থা ভোটের আনা হবে।

ফ্রান্সের রাজনীতির প্রভাব বাজারেও পড়েছে। ফরাসি সরকারি বন্ডের সুদের হার স্পেন, পর্তুগাল ও গ্রিসের চেয়েও বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় ফ্রান্সের ঋণমান অবনমন হলে অর্থনীতির ওপর আরও চাপ তৈরি হবে।

এই রাজনৈতিক অস্থিরতার সূত্রপাত হয় ২০২৪ সালের মে মাসে, যখন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে ডানপন্থী ন্যাশনাল র‍্যালি অভূতপূর্ব সাফল্য পায়। প্রতিক্রিয়ায় মাখোঁ আকস্মিকভাবে সংসদ ভেঙে দেন, যার ফলে ফরাসি পার্লামেন্ট ভাঙাচোরা ও বিভক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে আবার নির্বাচন হলে জরিপ বলছে, ন্যাশনাল র‍্যালি এগিয়ে থাকবে, বামপন্থীরা দ্বিতীয় আর মাখোঁর মধ্যপন্থী দল অনেক পেছনে থাকবে।

এমন প্রেক্ষাপটে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে আবারও নির্বাচন আয়োজনের দাবি জোরালো হচ্ছে। ফার-রাইট নেতা মেরি লে পেন সংসদ ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বামপন্থী দল ও শ্রমিক সংগঠনগুলো বুধবার দেশব্যাপী আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।

সব মিলিয়ে, ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ফ্রান্সে নতুন এই রাজনৈতিক সংকট ইউরোপের জন্যই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।