খুলনা | শনিবার | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ২৯ ভাদ্র ১৪৩২

জাকসুতে ভোট গ্রহণে অনিয়ম, কারচুপি ও প্রশাসনের নীরবতার অভিযোগ : বর্জন, আন্দোলনের ডাক

খবর প্রতিবেদন |
০১:০৬ এ.এম | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫


অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। ছাত্রদল, বাম সমর্থিত তিন প্যানেলের পাশাপাশি নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা শিক্ষকরাও জাকসু বর্জন করেছেন। ভোট বর্জনকারী শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের ডাকও দিয়েছেন। তবে শিবির সমর্থিত প্যানেল বলছে, পরাজয়ের ভয়ে এই বর্জন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। 
বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ চলে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। এখন চলছে গণনা। ব্যালট বাক্সগুলো নেওয়া হয় নির্বাচন কমিশনে (পুরাতন প্রশাসনিক ভবন)।  এর আগে সকাল থেকে ভোটগ্রহণ চলছিলো নানা অভিযোগের মধ্যদিয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি আর শান্তিপূর্ণ থাকেনি। 
শিবিরকে জিতিয়ে দেওয়া, ভোটে কারচুপির অভিযোগ, প্রশাসনের নীরবতা-এমন নানা অভিযোগ তুলে বিকেলে ভোট বর্জন করে ছাত্রদল। ভোট শেষ হবার দেড় ঘণ্টা আগে এই ঘোষণা দেয় ছাত্রদল।
এরপর ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয় বাম সমর্থিত প্রার্থীরা ও প্যানেলগুলো। তারাও শিবিরের প্রতি পক্ষপাত, ভোটারের থেকে কেন্দ্রে বেশি ব্যালট পাওয়াসহ নানা অভিযোগ এনেছেন।
এদিকে বিএনপি সমর্থিত বেশ কয়েকজন শিক্ষক কর্মকর্তারাও ভোট বর্জন করেছেন। তারাও প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনেছেন।
নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন তিন শিক্ষক : জাকসু নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা বিএনপিপন্থি তিন শিক্ষক নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। তারা হলেন অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা ও নাহরিন ইসলাম খান। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নির্বাচন কমিশনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ কথা জানান।
এদের মধ্যে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম কেন্দ্রীয় ভাবে জাকসু নির্বাচন মনিটরিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন। বাকি দুইজন শিক্ষক হল পর্যায়ে ভোট মনিটরিং করছিলেন। তিনজনই ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, আরও কয়েকজন শিক্ষক একই সিদ্ধান্ত নেবেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোট শেষ হওয়ার কিছু সময় আগে এমন ঘোষণা দেন তারা। তিন শিক্ষকের এমন ঘোষণার ঘণ্টাখানেক আগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল।
দীর্ঘ ৩৩ বছর পর গতকাল অনুষ্ঠিত হলো জাকসু নির্বাচন। সকাল ৯টা থেকে একযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলে ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও নানা কারনে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোট গ্রহণ শেষে গণনা করার জন্য ব্যালট বাক্স নেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে। সেখান থেকেই ঘোষণা করা হবে নির্বাচনের ফলাফল।
জাবি কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫ পদে লড়ছেন ১৭৭ জন। হল সংসদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন ৪৪৫ জন। কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে ৯ ও জিএস পদে লড়ছেন আটজন। শেষ মুহূর্তে জিএস পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী  সৈয়দা অনন্যা ফারিয়া। 
নির্বাচনে ভোটার ১১ হাজার ৯১৯ জন। ভোটারের ৪৮ দশমিক ৮ শতাংশ ছাত্রী। প্রচার শেষ হয়েছে বুধবার রাত ১২টায়। এদিন সকাল থেকে প্রচারে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন বিভিন্ন প্যানেলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।