খুলনা | রবিবার | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৩০ ভাদ্র ১৪৩২

শ্রীলঙ্কার কাছে উড়ে গেল বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক |
১২:০৭ এ.এম | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫


নুয়ান থুসারা ও দুশমন্থ চামিরার প্রথম দুই ওভারেই দুটোই মেইডেন। বাংলাদেশেরও উইকেট নেই দুইটি। তানজিদ হাসান তামিমের সঙ্গে ফিরেছেন পারভেজ হোসেন ইমনও। পরের ব্যাটাররা জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও একটা সময় বাংলাদেশের রান ছিল ৫ উইকেটে ৫৩। পরবর্তীতে অবশ্য টাইগারদের আর কোনো উইকেট হারাতে দেননি জাকের আলী অনিক ও শামীম হোসেন পাটোয়ারি।

তাদের দুজনের অবিচ্ছিন্ন ৮৬ রানের জুটিতে লড়াইয়ের পুঁজি পেলেও জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ১৪০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় পাথুম নিশাঙ্কা হাফ সেঞ্চুরি ও কামিল মিশারার দারুণ ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটের জয় পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। এমন হারে এশিয়া কাপে সুপার ফোরে খেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ হলো বাংলাদেশের। শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বড় জয় পাওয়ার পাশাপাশি তাকিয়ে থাকতে হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান ম্যাচের দিকে।

আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ১৪০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি শ্রীলঙ্কার। উইকেটের আশায় দ্বিতীয় ওভারেই মুস্তাফিজুর রহমানকে ডেকে আনেন লিটন। বাঁহাতি পেসার আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন। তৃতীয় বলে ছক্কা হজম করলেও পঞ্চম বলে বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন। মুস্তাফিজের গুড লেংথে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে আউট সাইড এজ হয়ে উইকেটের পেছনে লিটনকে ক্যাচ দিয়েছেন। ৬ বলে ৩ রান করে ফিরতে হয় মেন্ডিসকে।

তিনে নামা মিশারাকেও ফেরানোর সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। একটু স্বস্তিতে থাকায় চাপ থেকে বেরিয়ে আসতে শরিফুলের শর্ট ডেলিভারিতে পুল করতে চেয়েছিলেন তিনি। টপ এজ হওয়ায় ক্যাচ উঠলেও মিড অন থেকে দৌড়ে গিয়ে সেটা লুফে নিতে পারেননি মেহেদী। জীবন পেয়ে আক্রমণাত্বক হয়ে উঠেন মিশারা। পেসার শরিফুলকে একটি ছক্কা ও দুই চার মারার পরের ওভারে মেহেদীকেও ছক্কা মেরেছেন। মেন্ডিসের উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লেতে ৫৫ রান তোলে শ্রীলঙ্কা।

পাওয়ার প্লে শেষ হলেও রান তোলার গতি কমেনি তাদের। মুস্তাফিজ, মেহেদী, রিশাদ হোসেনদের প্রতি ওভারেই নিয়মিত বাউন্ডারি মেরেছেন এবং দ্রুত রান তুলেছেন। দারুণ ব্যাটিংয়ে ৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন নিশাঙ্কা। যদিও পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। মেহেদীর শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়েছেন শরিফুলের হাতে। আউট হওয়ার আগে ৩৪ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলে শ্রীলঙ্কার জয়ের ভিত গড়ে দেন নিশাঙ্কা।

একটু পর আউট হয়েছেন কুশল পেরেরোও। মেহেদীর ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে লেগ বিফোর হয়েছেন ৯ রান করা এই ব্যাটার। পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে দাসুন শানাকার উইকেট নিয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব। ডানহাতি পেসারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে টপ এজ হয়ে ফাইন লেগে মুস্তাফিজের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। শেষের দিকে তিনটি উইকেট পড়লেও মিশারা ও চারিথ আসালাঙ্কা মিলে শ্রীলঙ্কার জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই তামিমের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নুয়ান থুসারার দারুণ গুড লেংথ ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন তিনি। পরের ওভারে দুশমন্থ চামিরা ফিরিয়েছেন পারভেজ হোসেন ইমনকে। ডানহাতি পেসারের লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারিতে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন। প্রথম দুই ওভারে মেইডেন দেয়ার পাশাপাশি দুইটি উইকেটও হারায় বাংলাদেশ। এমন বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন লিটন ও তাওহীদ হৃদয়।

যদিও তাদের দুজনের জুটি বেশিক্ষণ টেকেনি। রান আউট হয়ে দ্রুতই ফেরেন হৃদয়। একটু পর আউট হয়েছেন লিটনও। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বাংলাদেশের অধিনায়ক আউট হয়েছেন ২৮ রানে। পরবর্তীতে জাকের আলী ও শামীম হোসেন মিলে জুটি গড়েন। বাংলাদেশের সংগ্রহ যখন ৫ উইকেটে ৫৩ তখন ক্রিজে আসেন শামীম। তিনি যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন জাকেরকে। শামীম ৪২ ও জাকের ৪১ রানের অপরাজিত থেকে ইনিংস শেষ করেছেন। দুজনই ১২০ এর উপরে স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন। তবে একটা সময় টানা ২১ বলে তারা বাউন্ডারি শূন্য ছিলেন তারা।

এখানেই মূলত বাংলাদেশের রানের চাকা ধীর হয়ে গিয়েছিল। বিশেষ করে লঙ্কান পেসার চামিরা ১৮ ও ২০তম ওভারে একের পর এক ইয়র্কারে জাকের ও শামীমের পরীক্ষা নিয়েছেন। পুরো ইনিংস জুড়ে বাংলাদেশ একটিই ছক্কা মেরেছে। সেই ছক্কাটি আসে শামীমের ব্যাট থেকে। ১৯তম ওভারে মাথিশা পাথিরানার বলে মিডউইকেটের ওপর দিয়ে এক পিক-আপ শটে সেই ছক্কা মারেন শামীম। শেষ পর্যন্ত লড়াই করার মতো ১৩৯ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার হয়ে দুইটি উইকেট নিয়েছেন হাসারাঙ্গা। একটি করে উইকেট পেয়েছেন থুসারা ও চামিরা।