খুলনা | রবিবার | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৩০ ভাদ্র ১৪৩২

ডুমুরিয়ার শৈলমারী স্লুইসগেট পরিদর্শন শেষে অংশীজনের সাথে মতবিনিময়

খুব শিগগিরই জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে : জেলা প্রশাসক

ডুমুরিয়া প্রতিনিধি |
০১:৩৩ এ.এম | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫


খুলনার নবাগত জেলা প্রশাসক মোঃ তৌফিকুর রহমান বলেছেন নদ-নদী খাল দখলসহ মানবসৃষ্ট নানা কারণে খুলনার ডুমুরিয়া, সাতক্ষীরার তালা ও যশোরের মণিরামপুর এলাকা এবং বৃহৎ বিল ডাকাতিয়া এলাকা বছরের পর বছর ধরে জলাবদ্ধ। সকলে মিলে মিশে কাজ করলে এবং সরকারের আন্তরিক দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে এসব এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব।
তিনি শনিবার সকাল ১০টায় ডুমুরিয়া উপজেলার  শৈলমারী নদীর স্লুইস গেটে পানি নিষ্কাশনের জন্য স্থাপিত ১ ভেন্ট রেগুলেটরে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন দু’টি পানির পাম্প ও শৈলমারী নদীর খনন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন বিষয়ে অংশীজনের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক বলেন জলবায়ুর পরিবর্তন পরিবেশের বিরূপ প্রভাব পড়ায় এবং মনুষ্য সৃষ্ট সমস্যার কারণে এ অঞ্চলে স্থায়ী জলাবদ্ধতার রূপ নিয়েছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকারের নানা উদ্যোগের বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন এই পরিদর্শনের উদ্দেশ্য ছিল জলাবদ্ধতা নিরসন কল্পে নদ নদীর আড়াআড়ি বাঁধ কেটে পানি সরবরাহ করা, উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প স্থাপন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। এর আগে স্লুইসগেট পরিদর্শন কালে জেলা প্রশাসক বলেন জলাবদ্ধতা নিরসনে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই করার কাজ চলমান রয়েছে। খুব শিগগিরই জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মতবিনিময়  সভায় সভাপতিত্ব করেন ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন। উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল মতিন, বিএডিসির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জামাল ফারুক, পাউবোর প্রকৌশলী উজ্জ্বল কুমার সেন ও ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসান ইবনে আমিন। এছাড়া বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে বক্তৃতা করেন ডুমুরিয়া থানার ওসি তদন্ত আছেক আলি, সাংবাদিক এস এম জাহাঙ্গীর আলম, জি এম আব্দুস সালাম,  এম এ এরশাদ, সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী হুমায়ূন কবির বুলু, চেয়ারম্যান সমারেশ মন্ডল, শিক্ষক  নিত্যনন্দন মন্ডল, সাবেক চেয়ারম্যান মোলা কবিরুল ইসলাম, অধ্যাপক জি এম আমানুল­াহ, রংপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান তরুণ কুমার সরকার প্রমুখ।
উলেখ্য, দীর্ঘদিন বিল ডাকাতিয়ার শোলমারী স্লুইস গেটে পলি জমে স্লুইস গেটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশনে ব্যাঘাত ঘটছে। যা এলাকার মানুষের জন্য জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে এবং তাদের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে। ডুমুরিয়া এলাকার জলাবদ্ধতা হামকুড়া নদী বর্তমানে পলি দ্বারা সম্পূর্ণ ভরাট অবস্থায় রয়েছে। ডাকাতিয়ার পানি নিষ্কাসিত হতে পারছে না। আপার শোলমারী নদী সচল থাকলেও লোয়ার শোলমারি নদী পলি দ্বারা সম্পূর্ণরুপে ভরাট অবস্থায় রয়েছে। লোয়ার সালতা নদী মৃতপ্রায়। যা দিয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যহত হচ্ছে। নদীর তলদেশ রেগুলেটরের সীল লেভেল থেকে গড়ে ২.০-২.৫ মিঃ উঁচু হওয়ায় রেগুলেটর সমূহের ক্যাচমেন্ট এলাকা তথা পোল্ডার-এর অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশের অন্যতম বড় বিল ডাকাতিয়াসহ ছোট বড় ২৪টি বিল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।