খুলনা | বুধবার | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১ আশ্বিন ১৪৩২

আফগানদের হারিয়ে সুপার ফোরের আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক |
১২:৫১ এ.এম | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫


তানজিদ হাসান তামিমের হাফ সেঞ্চুরিতে প্রথম ১০ ওভারে ৮৭ রান তুললেও পরবর্তীতে প্রত্যাশিত ব্যাটিং করতে পারেনি বাংলাদেশ। যার ফলে ভালো শুরু পাওয়ার পরও ১৫৪ রানের বেশি তুলতে পারেননি লিটনরা। মাঝারি লক্ষ্য তাড়ায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে আফগানিস্তান। নাসুম আহমেদ ও রিশাদের হোসেন দুর্দান্ত স্পিনে আফগানদের ১৪৬ রানে আটকে দেয় বাংলাদেশ। ফলে আফগানিস্তানকে ৮ রানে হারিয়ে সুপার ফোরে খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলেন লিটন-তাসকিন আহমেদরা।

রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি আফগানিস্তানের। ইনিংসের প্রথম বলেই সেদিকউল্লাহ অটলের উইকেট হারায় তারা। নাসুমের লেংথ ডেলিভারিতে ব্যাকফুটে গিয়ে খেলার চেষ্টায় লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। উইকেটের পাশাপাশি মেইডেন ওভারও নিয়েছেন নাসুম। দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট পেতে পারতো বাংলাদেশ। তাসকিনের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাট করেছিলেন ইব্রাহিম জাদরান।

হাতে পড়লেও ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়িয়ে সেই ক্যাচ নিতে পারেননি রিশাদ। যদিও ইব্রাহিমকে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে দেননি নাসুম। নিজের তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসেই ফিরিয়েছেন তাকে। বাঁহাতি স্পিনারের অফ স্টাম্পে পড়ে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে সোজা ব্যাটে খেলেছিলেন ইব্রাহিম। বলের লাইন মিস করায় লেগ বিফোর হয়েছেন তিনি। রিভিউ নিলেও শেষ রক্ষা হয়নি ১২ বলে ৫ রান করা আফগান ব্যাটারের।

দুই উইকেট হারানোয় পাওয়ার প্লেতে ২৭ রানের বেশি ‍তুলতে পারেনি আফগানিস্তান। পাওয়ার প্লে শেষে চড়াও হতে চেয়েছিলেন গুরবাজ ও গুলবাদিন। পার্ট টাইম স্পিনার হিসেবে বোলিংয়ে আসা শামীম হোসেনের ওভারে ১৬ রানও এনেছেন তারা। তবে পরের ওভারে তাদের জুটি ভাঙেন রিশাদ। ডানহাতি লেগ স্পিনারের বলে অন সাইডে খেলার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে রিশাদের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১৪ বলে ১৬ রান করা গুলবাদিন। একটু পর গুরবাজকেও ফিরিয়েছেন রিশাদ।

ডানহাতি লেগ স্পিনারের বলে প্যাডল সুইপ করে ছক্কা মারতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে জাকের আলীর হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। সমান দুইটি করে ছক্কা ও চারে ৩১ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলেছেন গুরবাজ। দেখেশুনে খেললেও ইনিংস বড় করতে পারেননি মোহাম্মদ নবি। ডানহাতি ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজ। বাঁহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের স্লোয়ার ডেলিভারিতে কাট করতে গিয়ে ইন সাইড এজে বোল্ড হয়েছেন নবি। ১৫ বলে ১৫ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।

নবি ফেরার পর ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। সাইফকে একটি চার ও দুইটি ছক্কা মারার পরের ওভারেও তাসকিনকে ছক্কা মেরেছেন আরও একটি। তবে ছক্কা মারার পরের বলেই ওমরজাইকে ফেরান তাসকিন। ডানহাতি পেসারের স্লোয়ার ডেলিভারিতে সোজা ব্যাটে খেলতে গিয়ে সাইফকে ক্যাচ দিয়েছেন ১৬ বলে ৩০ রান করা এই ব্যাটার। একটু পর রান আউট হয়েছেন করিম জানাত। ক্যামিও ইনিংস খেলা রশিদকে ফেরান মুস্তাফিজ। পরের বলে আউট করেছেন মোহাম্মদ গাজানফারকে। শেষ পর্যন্ত রানে ১৪৬ থামে আফগানিস্তান।

এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ারপ্লেতে কোনো উইকেটই হারায়নি বাংলাদেশ। উল্টো ওভার প্রতি ১০ রান নিয়ে বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার তানজিদ ও সাইফ। বিশেষ করে তানজিদের হাফ সেঞ্চুরি বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের পথ দেখায়। যদিও পরের ব্যাটাররা হাত খুলে খেলতে না পারায় বাংলাদেশের সংগ্রহ থামে ১৫৪ রানে।

বাংলাদেশের ব্যাটারদের খাবি খাইয়েছেন দুই আফগান স্পিনার রশিদ ও নূর আহমেদ। দুজনই দুটি করে উইকেট নেন। ৮ ওভার তারা মাত্র ৪৯ রান খরচ করেছেন। তাদের প্রভাবেই বাংলাদেশ উড়ন্ত সূচনা পেয়েও শেষ পর্যন্ত সুবিধা নিতে পারেনি। ৬৩ রানের ওপেনিং জুটি গড়ে সাইফ ২৮ বলে ৩০ রান করে ফিরে যান। তবে অন্যপ্রান্তে ঝড়ো ব্যাটিং করেছেন তানজিদ।

বাঁহাতি এই ওপেনার মাত্র ২৮ বলে তুলে নেন নিজের সপ্তম টি-টোয়েন্টি হাফ সেঞ্চুরি। ইনিংসের অর্ধেক পথে বাংলাদেশ ছিল ভালো অবস্থানে। ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশ সংগ্রহ ছিল—৮৭/১। তবে মিডল ওভারেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। রানের চাহিদা মেটাতে পারেননি তাওহীদ হৃদয় ও শামীম হোসেন পাটোয়ারি।

হৃদয় ভালো শুরু পেয়েও আউট হয়েছেন ২০ বলে ২৬ রান করে। আর শামীম ১১ বলে ১১ রানের বেশি করতে পারেননি। শেষের দিকে একের পর এক ডট বলে নিজের ওপর বাড়তি চাপ নিয়েছেন জাকের। তিনি ১৩ বলে মাত্র ১২ রান করেন। শেষদিকে নামা নুরুল হাসান সোহানের ৬ বলে ১২ রানে বাংলাদেশ দেড়শ পার করে।