খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৩ আশ্বিন ১৪৩২

ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ

কুমিল্লায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৪ মাজারে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ

খবর প্রতিবেদন |
০৬:১৭ পি.এম | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে কুমিল্লায় চারটি মাজারে হামলা ভাঙচুরের পর আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বিক্ষুব্ধ লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে ওই চারটি মাজারে হামলা করেছে বলে জানা গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার আসাদপুর ইউনিয়নের আসাদপুর গ্রামে কফিল উদ্দিন শাহ ও হাওয়ালি শাহ মাজারে আগুন এবং কালাই শাহ ও আবদু শাহ মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

এ ঘটনায় উসকানি ও ইন্ধনদাতাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান। আজ বিকালে গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ‘বেমজা মহসিন’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে গত বুধবার সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে একজন ধর্ম নিয়ে ‘আপত্তিকর’ পোস্ট দেন। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা থানার সামনে জড়ো হয়ে মহসিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করেন। দুপুরে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই যুবকের বিরুদ্ধে হোমনা থানায় একটি মামলা করেন। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

এদিকে ফেসবুকের ‘আপত্তিকর’ ওই পোস্ট কেন্দ্র বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা মাইকে ঘোষণা দিয়ে আসাদপুর গ্রামের চারটি মাজারে হামলা, ভাঙচুরের পরে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনার পর কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান ও হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্ষ্যেমালিকা চাকমা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা গণমাধ্যমকে বলেন, গত বুধবার ধর্ম নিয়ে কটূক্তির কারণে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ বিক্ষুব্ধ জনতা মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে।

উপজেলা ইসলামী ফ্রন্টের সেক্রেটারি সফিক রানা ও ইসলামী যুব সেনার নেতা শরিফুল জানান, গ্রেপ্তার ওই যুবক দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে আসছিলেন। আমরা তার ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।

হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ধর্ম নিয়ে কটূক্তিমূলক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে জনতার দাবির প্রেক্ষিতে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে আজ আদালতের সোপর্দ করা হয়। তবুও সকালে বিক্ষুব্ধ লোকজন মাজারে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে ফিরে কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান বলেন, ‘ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু আইন হাতে তুলে নিয়ে যারা ঘটনার উসকানি দিয়ে মাজারে হামলা ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’