খুলনা | রবিবার | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১২ আশ্বিন ১৪৩২

নির্বাচনের নানা অভিযোগ নিয়ে লিখিত আবেদন জানানোর পরও এড়িয়ে চলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আবিদুলের, ‘মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়েছি’

খবর প্রতিবেদন |
০১:০১ এ.এম | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম আবিদ। সোমবার মধুর ক্যান্টিনে ডাকসু নির্বাচনের নানা অনিয়ম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তোলেন তিনি।
আবিদ বলেন, নির্বাচনে ভোটার চিহ্নিত করার জন্য যে মারকার পেন ব্যবহার করা হয় তা অস্থায়ী হওয়ায় একই ব্যক্তি একাধিক ভোট দিয়েছে কি না তা নিয়ে সংশয়ে আছে ছাত্রদল। 
সংবাদ সম্মেলনে আবিদুল ইসলাম খান বলেন, গত ডাকসু নির্বাচনে নানারকম জালিয়াতি ও অনিয়ম হয়েছে। ব্যবহৃত ব্যালট পেপারে কোনও ক্রমিক নম্বর ছিল না। এছাড়া নির্বাচনে কতটি ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছিল এবং কতটি অব্যবহৃত থাকলো, তাও প্রকাশ করা হয়নি। এ নিয়ে সব অভিযোগ স্পষ্ট, এটাকে আড়াল করার সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের দিন থেকে পরবর্তী সময়ে যে অসংগতি ছিল, চাইলে আমরা আন্দোলন, মিছিল, মিটিংয়ে যেতে পারতাম। তবে আমরা পূর্বের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ভেঙে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এগিয়ে চলেছি। তবে নির্বাচনের নানা অভিযোগ নিয়ে লিখিত আবেদন জানানোর পরও আমাদের এড়িয়ে চলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নির্বাচনের দিন তিনি নিজেই মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়েছেন বলেও দাবি আবিদের।
তিনি আরও উলে­খ করেন, নির্বাচনের চার দিন পর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয় যে পোলিং এজেন্টদের বাছাই প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা ছিল এবং আইডি কার্ড যথাসময়ে দেওয়া হয়নি। পোলিং এজেন্টদের অনুপস্থিতিতে ভোট নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন আবিদ।
তিনি তার আনুষ্ঠানিক অভিযোগে আরও উলে­খ করেন, আচরণবিধি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় পোলিং অফিসাররা সংবাদকর্মীদের ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছেন এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। নির্বাচনকালীন সময়ে ছাত্রদলের প্রার্থীরা পোলিং অফিসারদের দ্বারা বারবার মবিংয়ের শিকার হয়েছেন। এছাড়া, বিএনসিসি, রোভার স্কাউট ও গার্লস গাইডের সহায়তায় একাধিক বহিরাগত ব্যক্তি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, অতীতের রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে ছাত্রদল একটি নতুন সংস্কৃতিতে প্রবেশ করেছে। নির্বাচনের দিন থেকে পরবর্তী সময় পর্যন্ত অসামঞ্জস্যতা থাকলেও ছাত্রদল প্যানেল কোনও মিছিল-মিটিং বা প্রতিবাদমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেনি।
নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ তদন্ত করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই পরাজিত ভিপি প্রার্থী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৭০৮ ভোট পেয়ে হারেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। এরপর পরবর্তী ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ফেসবুক পোস্টে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানান তিনি।
পোস্টে আবিদুল লেখেন, সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসব, ইনশাআল­াহ। এর প্রতিফলন আপনারা পরবর্তী ডাকসুতে দেখতে পাবেন। আবিদ আপনাদের কখনো ছেড়ে যাবে না।
তিনি লেখেন, ক্ষুদ্র জীবনে আমি এতদূর আসব কোনোদিন ভাবিনি। নির্বাচনের আগের রাতে খালেদ মুহিউদ্দীন ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, পাঁচ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চাই? আমি কোনো সদুত্তর দিতে পারিনি। আসলে কখনোই জানতাম না নিজেকে কোথায় দেখতে হবে। একের পর এক আন্দোলন-সংগ্রাম এসেছে, নিজেকে রাজপথে সঁপে দিয়েছি। সেই পথই আজ আমাকে এতদূর নিয়ে এসেছে।