খুলনা | সোমবার | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১৩ আশ্বিন ১৪৩২

কেএমপি কমিশনারকে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ ডিসির

দৌলতপুরে চাপের মুখে মাদ্রাসার অফিস কক্ষের তালা খুললেন আ’লীগ নেতা

এন আই রকি |
০২:০২ এ.এম | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫


নগরীর দৌলতপুরের মধ্যডাঙ্গা দারুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসাটি দখলে নেওয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে অবশেষে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে ঝুলানো তালা খুললেন সেই মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঠিকাদার শেখ দাউদ হায়দার। শুক্রবার তিনি চাপের মুখে পড়ে তার লোকজন দিয়ে তালা খুলে দেন। মাদ্রাসার মুহাতামিমের লিখিত অভিযোগটি আমলে নিয়ে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক কেএমপি কমিশনারকে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করেছেন। 
জানা যায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে প্রতিষ্ঠানটির মুহতামিম মুফতি মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে বাগবিতন্ডতা হলে দাউদ হায়দার দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। ২১ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার সভাপতি দাউদ হায়দার তার অনুসারীদের দিয়ে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে দুইটি তালা মেরে দেন। এ ঘটনায় মুফতি মাহমুদুল হাসান দৌলতপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন এবং সার্বিক বিষয় নিয়ে খুলনা জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগও করেন তিনি। 
মাদ্রাসার মুহতামিম মাহমুদুল জানান, শুক্রবার অফিস কক্ষের তালা খুলে দেওয়া হয়েছে। যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশের পর এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। একটি পক্ষ আমার ব্যাপারে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। দাউদ হায়দার আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও টাকা ওয়ালা লোক। যে কারণে সাংবাদিক সামনে অনেকেই আসল সত্য প্রকাশ করতে ভয় পাচ্ছে। দৌলতপুর থানা থেকে আমাকে মাদ্রাসায় যাওয়ার জন্য বলা হলেও আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ চিন্তিত। 
মাদ্রাসার সভাপতি দাউদ হায়দার বলেন, শুক্রবার মাদ্রাসার তালা খুলে দেওয়া হয়েছে। আমার অনুসারীরা মাদ্রাসায় তালা মেরে দেয় এ কথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগা নেই। মাহমুদুল মাদ্রাসার কোনো হিসাব সঠিক ভাবে দেয় না, শিক্ষকদের নিয়োগ, বেতন বাড়ানো বিবিধ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটিকে না জানিয়ে সে একাই সিধান্ত নেয়। একটি মিটিংয়ে দুই মাদ্রাসার মাহফিলের বিষয়ে আলাপকালে তিনি উপস্থিত সকলকে অপমান করেন। 
দৌলতপুর থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, আমি ফোর্স পাঠিয়ে ছিলাম, তারা আমাকে জানিয়েছেন মাদ্রাসার মুহাতামিম অফিস কক্ষের নিজে তালা মেরে রেখেছেন। 
কেএমপির উপ-কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মাদ তাজুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসক পুলিশ কমিশনারকে মাদ্রাসার সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়মের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলেছেন। এ ব্যাপারে আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি।   
উল্লেখ্য,  ২০১৫ সাল থেকে দৌলতপুর থানার ৩নং ওয়ার্ডে অবস্থিত মধ্যডাঙ্গা দারুল-উলুম (হাফিজিয়া) মাদ্রাসার সভাপতি হিসাবে শেখ দাউদ হায়দার প্রভাব খাটিয়ে পদটি দখল করে রেখেছেন। তিনি খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের আস্থাভাজন ছিলেন। পাশাপাশি শেখ পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকার কারণে তিনি তার ‘এসএন বিল্ডার্স’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গণপূর্ত ও শিক্ষা প্রকৌশল অফিসের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার কাজ করেছেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হলেও তিনি রয়েছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। দাউদ হায়দার আরও আরেকটি মহিলা মাদ্রাসার সভাপতির পদে রয়েছেন বলে জানা গেছে।