খুলনা | সোমবার | ১৩ অক্টোবর ২০২৫ | ২৮ আশ্বিন ১৪৩২

৭ বছর পর কাবার ইমাম শায়খ সালেহ আল-তালিবের কারামুক্তি

খবর প্রতিবেদন |
০৫:৪৩ পি.এম | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫


সাত বছরের দীর্ঘ কারাবাস শেষে অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন মসজিদুল হারামের সাবেক ইমাম ও বিশিষ্ট আলেম শায়খ সালেহ আল-তালিব। তবে তিনি এখনো সম্পূর্ণ স্বাধীন নন; বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন এবং তার পায়ে একটি ইলেকট্রনিক মনিটর লাগানো রয়েছে।

সৌদি আরবে আলেম ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত বিষয় পর্যবেক্ষণকারী মানবাধিকার সংস্থা প্রিজনার্স অব কনসায়েন্স সামাজিক মাধ্যমে শায়খ সালেহর মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, তিনি যদিও কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন, তবে এখনও গৃহবন্দি আছেন এবং চলাফেরায় সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে।

শায়খ সালেহ আল-তালিবকে ২০১৮ সালে এক খুতবার পর গ্রেফতার করা হয়। ওই বক্তৃতায় তিনি ইসলামি নৈতিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান এবং মিশ্র লিঙ্গের অনুষ্ঠান আয়োজন ও সৌদি জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটির কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন। এই বক্তব্যের পর থেকেই তিনি আর জনসম্মুখে দেখা দেননি। সৌদি সরকার কখনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ প্রকাশ না করলেও, ২০২২ সালে রিয়াদের বিশেষ আপিল আদালত তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে।

১৯৭৪ সালের ২৩ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া শায়খ সালেহ আল-তালিব সৌদির বিখ্যাত হুৎতাত বানী তায়মি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। এই পরিবার ইসলামি শিক্ষাবিদ, বিচারক ও গবেষকদের পরিবার হিসেবে প্রসিদ্ধ।

তিনি কোরআনের সুমধুর তেলাওয়াত ও হৃদয়গ্রাহী বক্তৃতার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেন এবং অনলাইনে লক্ষাধিক অনুসারী অর্জন করেন। কারাবাসের আগে তিনি মক্কা, রিয়াদ ও অন্যান্য শহরে বিচারক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

মুসলিম বিশ্বে স্বস্তির প্রতিক্রিয়া
তার মুক্তির খবরে বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা স্বস্তি ও আনন্দ প্রকাশ করেছেন। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করেছেন যে, একজন সম্মানিত আলেমের মুক্তি ইসলামি সমাজের জন্য আশার বার্তা।

সৌদি সরকারের সমালোচনা
২০১৭ সালের জুনে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ক্ষমতায় আসার পর থেকে সৌদি আরবে ধর্মীয় আলেম, রাজপরিবারের সদস্য এবং সরকারবিরোধী মতামত প্রকাশকারী ব্যক্তিদের গ্রেফতারের হার বেড়েছে। সরকারের এই কঠোর নীতির ফলে সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও কর্মীরা প্রায়ই মতপ্রকাশের কারণে দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ডের মুখোমুখি হচ্ছেন, যা আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে।
সূত্র: দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন; দ্য সিয়াসত ডেইলি