খুলনা | সোমবার | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সিকিম, দার্জিলিংয়ে পাহাড় ধসে নিহত ১৭

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৫ এ.এম | ০৬ অক্টোবর ২০২৫


পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলায় টানা ভারি বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃষ্টিপাত ও ধসের কারণে উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, ফলে হিমালয় সংলগ্ন রাজ্য সিকিমের সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
দার্জিলিংয়ে শনিবার রাত থেকে ভারি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। মিরিক ও সুখিয়াপোখরির মতো পাহাড়ি এলাকায় একাধিক স্থানে ধস নেমে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দার্জিলিং সফরে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স-এ শোক প্রকাশ করে বলেছেন, দার্জিলিংয়ে প্রাণহানির ঘটনায় আমি গভীরভাবে মর্মাহত। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় কেন্দ্র সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।
পাহাড় ধসে দার্জিলিং-সিলিগুড়ি মহাসড়ক ও সিকিমের সঙ্গে সংযোগকারী প্রধান রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে যান চলাচল পুরোপুরি থেমে আছে। দুর্গাপূজার ছুটিতে কলকাতা ও রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক পর্যটক দার্জিলিং ভ্রমণে গিয়েছিলেন। অনেকে এখন ওই এলাকায় আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যেকোনও দুর্ঘটনা এড়াতে গোরখাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল এ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) দার্জিলিংয়ের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র টাইগার হিল, রক গার্ডেনসহ সব পর্যটন স্থান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দার্জিলিংয়ের বিখ্যাত ‘টয় ট্রেন’ সেবাও সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
রাজ্য পুলিশ আটকে পড়া পর্যটক ও স্থানীয়দের জন্য জরুরি সহায়তা হটলাইন চালু করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাসিন্দা ও পর্যটকদের সতর্ক থাকতে ও আবহাওয়া ও সড়কের অবস্থা সম্পর্কে আপডেট তথ্য জানতে বলা হয়েছে।
দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা এক্স-এ লিখেছেন, বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মানুষের প্রাণহানি, সম্পত্তি ও অবকাঠামোগত ক্ষতি ঘটেছে। আমি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।
এদিকে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, সিলিগুড়ি ও কোচবিহারেও ভারি বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় আবহাওয়া অধিদফতর আগেই উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে ভারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছিল। সিকিমে দুই দফা ‘রেড ওয়ার্নিং’ জারি করা হয়েছে। সেখানে বজ্রপাত, ভারি বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার আশঙ্কা জানানো হয়েছিল। আগামী ৭ অক্টোবর পর্যন্ত বৃষ্টি চলতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াজনিত কারণে হঠাৎ বন্যার আশঙ্কাও রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, সেতু ভেঙে গেছে, রাস্তা ভেসে গেছে, নদীগুলোতে পানি বেড়েছে। একই আবহাওয়াজনিত দুর্যোগে প্রতিবেশী দেশ নেপালেও গত ৩৬ ঘণ্টায় অন্তত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে।