খুলনা | সোমবার | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

লড়াই করেও হার বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক |
১১:৪৮ পি.এম | ০৭ অক্টোবর ২০২৫


ব্যাটাররা পুঁজিটাকে বড় করতে পারেননি। সোবহানা মোস্তারি ও রাবেয়া খাতুনের ব্যাটে মাঝারি মানের দলীয় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। বোলাররা অবশ্য সেই পুঁজি নিয়েই দুর্দান্ত লড়াই করলেন। এর মধ্যে ইংলিশ অধিনায়ক হেদার নাইট দুইবার আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে বেঁচে যান। সেই তিনি একাই বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচ বের করে নিয়ে গেলেন। ফলে সম্ভাবনা তৈরি করেও হারলো নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।
গুয়াহাটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার নারী বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। ১৭৮ রান তাড়ায় ২৩ বল রেখে জয় পায় ইংলিশরা। এ নিয়ে টানা দুই জয় পেলো ইংল্যান্ড। আর পাকিস্তানকে হারিয়ে আসর শুরু করা টাইগ্রেসরা দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম হার দেখলো।
রান তাড়ায় এদিন প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ওভারের শেষ বলে দুর্দান্ত ইনসুইংয়ে অ্যামি জোনসকে তুলে নেন মারুফা আক্তার। ৭ম ওভারে দ্বিতীয় শিকার ধরেন মারুফা। এরপর ৪০ রানের জুটি গড়ে ইংলিশরা। ২ উইকেটে ৬৯ রান হওয়ার পর আচমকা ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপে ধাক্কা দেন ফাহিমা আক্তার। ৯ রানের ব্যবধানে তুলে নেন ৩ উইকেট। ইংল্যান্ড যখন ষষ্ঠ উইকেট হারায় তখনও জয়ের জন্য প্রয়োজন ৭৫ রান প্রয়োজন। তবে এরপর বাংলাদেশের সামনে বাধা হয়ে দাড়ান নাইট। তৃতীয় আম্পায়ারের বদান্যতায় বেঁচে যাওয়া এই ব্যাটার একাই জেতান ইংলিশদের।
এর আগে  আগে ব্যাটিং করে ১৭৮ রান করে বাংলাদেশ। ৬০ রান করেন সোবহানা। আর শেষদিকে ২৭ বলে ৪৩ রানের দুর্দান্ত ক্যামিও খেলেন রাবেয়া। ইনিংসের একমাত্র ছক্কাও আসে তার ব্যাট থেকেই। ব্যাটিংয়ের শুরুটা দারুণ ইতিবাচক করেন দুই ওপেনার ঝিলিক ও শারমিন আক্তার সুপ্তা। বিশেষ করে সুপ্তা শুরু থেকেই দারুণ ছন্দে ছিলেন। প্রথম দুই ওভারে ৭ রান আসার পর তৃতীয় ওভারে তিন বাউন্ডারি হাঁকান সুপ্তা। চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে রুবায়া আক্তার ঝিলিকের বিদায়ে ভাঙে ওপেনিং জুটি। ব্যাক অফ লেন্থের ডেলিভারি এগিয়ে মারতে গিয়ে শর্ট মিড অফে তুলে দেন তিনি। তিন বল পর বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ, খালি হাতে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন অধিনায়ক জ্যোতি। এমন উইকেটে দলের সেরা ব্যাটারের রান করতে না পারা পুরো ইনিংস জুড়েই ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে। প্রতিবারই জুটিগুলো বড় হওয়ার আগেই ভেঙে গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ছিলেন সোবহানা মোস্তারি। কিন্তু সঙ্গীর অভাবে হাত খুলতে পারেননি একবারও। ২৪ রানে ২ উইকেট হারানোর পর এরপর আরেক ওপেনার শারমিন আক্তার সুপ্তা ও সোবহানা মোস্তারি মিলে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। শুরুর জোড়া ধাক্কায় স্কোরবোর্ডও স্থবির হয়ে পড়ে। প্রথম ৪ ওভারে ২৩ রান থেকে ১০ ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে রান দাঁড়ায় ২ উইকেট হারিয়ে ৩১। একাদশতম ওভারে দুই চার মেরে খোলস ছেড়ে বের হওয়ার চেষ্টা করেন সোবহানা। তবে সঙ্গীর বিদায়ে আবার খোলসে ঢুকে যেতে হয় তাকে। শুরু থেকে দারুণ ছন্দে থাকা সুপ্তার আউটে ভাঙে তাদের ৩৪ রানের জুটি। ৫২ বলে ৩০ রান করেন তিনি। এরপর স্বর্ণাকে নিয়ে নতুন করে জুটি গড়া শুরু করেন সোবহানা। তবে সেটিও বড় হয়নি। অথযা বড় শট খেলতে উইকেট ছুড়ে দেন স্বর্ণা। ২৬ রানের জুটি ভাঙে এতে, স্বর্ণা করেন ১০ রান। ইনিংস জুড়েই জুটি গড়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন সোবহানা, কিন্তু কেউ তাকে যথেষ্ট সময় সঙ্গ দিতে পারেননি। রিতু মনির সঙ্গে সোবহানার জুটি হয় ২৩ রানের। এরপর ফাহিমা আক্তারও ১৩ রানের ব্যবধানে উইকেট বিলিয়ে দেন। বাকিদের আসা যাওয়ার মিছিলে ৯২ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন সোবহানা। দুই ওভার পর তার ব্যাটে আসে চার, যেটা কিনা ৬৩ বল পর হওয়া প্রথম বাউন্ডারি। এরপর উইকেটে এসে আক্রমণ শুরু করেন রাবেয়া আক্তার। প্রথম ৫ বলেই তার ব্যাট থেকে আসে দুই চার। ৪৭তম ওভারে হাঁকান আরও দুই চার। পরের ওভারেই আউট হয়ে যান সোবহানা। ফেরার আগে করেন ১০৮ বলে ৬০ রান। রাবেয়ার ক্যামিওতে বাংলাদেশের আরন দেড়শ’ পার হয়।