খুলনা | বুধবার | ০৮ অক্টোবর ২০২৫ | ২২ আশ্বিন ১৪৩২

ভোট করার সব পথ বন্ধ হলো শেখ হাসিনার

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৪ এ.এম | ০৮ অক্টোবর ২০২৫


মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কারো বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলে তিনি আর নির্বাচন করার যোগ্য হবেন না, জনপ্রতিনিধি হয়ে থাকলে সেই পদে থাকার যোগ্যতাও তিনি হারাবেন। এর ফলে অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ভোটে অংশ নেওয়ার সব সুযোগ বন্ধ হয়ে গেল।
আইসিটি আইন সংশোধন করেছে বলে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। কারও বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলা থাকলে তিনি সংসদ সদস্য (এমপি) হওয়ার বা থাকার যোগ্যতা হারাবেন বলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আইন এক বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের মত সংশোধন করে সোমবার এই বিধান যুক্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধন করে ২০ সি নামে একটি নতুন ধারা যোগ করার প্রস্তাবে গত ৪ সেপ্টেম্বর অনুমোদন দিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। সব আনুষ্ঠানিকতা সেরে সোমবার রাতে তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছে, যার শিরোনাম ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (তৃতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে,  কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইসিটি আইন অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বা ওই পদে বহল থাকার অযোগ্য হবেন।
একই ভাবে তিনি যে কোনো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার বা বহাল থাকার অযোগ্য হবেন। এমনকি প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে নিয়োগ পাওয়ার বা অন্য কোনো সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ারও অযোগ্য হবেন তিনি। যদি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালের রায়ে অব্যাহতি বা খালাস পান, তাহলে এই অযোগ্যতা তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
এতে বলা হয়েছে, উপধারা (১)-এ যা কিছুই থাকুক না কেন, ট্রাইব্যুনালে কোনও ব্যক্তি অব্যাহতি বা খালাসপ্রাপ্ত হলে, সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হবে না।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে অভিযুক্ত কেউ যেন বিচারাধীন অবস্থায় রাষ্ট্রের কোনো দায়িত্বে থাকতে না পারেন, তা নিশ্চিত করাই আইন সংশোধনের মূল উদ্দেশ্য।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। সে দিন দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের অনেকেই গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। অনেকেই বিদেশে বা আত্মগোপনে চলে গেছেন। তাদের অধিকাংশই এখন বিভিন্ন হত্যা মামলার আসামি।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার ২০১০ সালে যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিল, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো দমন পীড়নকে ‘গণহত্যা’ বিবেচনা করে নেই আদালতেই বিচারের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে রয়েছে।