খুলনা | সোমবার | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

সাতক্ষীরায় আলোচনা সভায় বক্তারা

টিআরএম দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনের একমাত্র টেকসই সমাধান

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা |
১১:৫১ পি.এম | ০৯ অক্টোবর ২০২৫


দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের নদীগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করে জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষে সাতক্ষীরার বেতনা-মরিচ্চাপ অববাহিকায় কমিউনিটি ভিত্তিক জোয়ারাধার (টিআরএম) বাস্তবায়নের দাবি উঠেছে। টিআরএম ছাড়া সাতক্ষীরার জলাবদ্ধতা মুক্তির সম্ভাবনা প্রায় ক্ষীণ। বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মোবারকপুরে উত্তরণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত “কমিউনিটি ভিত্তিক টিআরএম পরিকল্পনা” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
‘জোয়ার বদলাচ্ছে, দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলাদেশের জোয়ার নদীগুলোর প্রতিবেশভিত্তিক অভিযোজন প্রসারে জনগণের পরিকল্পনা’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। উত্তরণের পরিচালক শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, সাতক্ষীরা-১ আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ ইজ্জত উল­াহ্। বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, জেলা সেক্রেটারি আজিজুর রহমান, তালা উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মৃণাল কান্তি রায়, তালা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শেখ শফিকুল ইসলাম এবং সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)–এর পানি সম্পদ প্রকৌশলী এটিএম সামসুল আলম। 
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন শোভনালি ইউপি চেয়রম্যান আবু বকর সিদ্দিক, বল­ী ইউপি চেয়ারম্যান মহিতুর রহমান, পাখিমারা টিআরএম বিল কমিটির সহ-সভাপতি গোলদার আশরাফুল হক, সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল, গোলাম সরোয়ার প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উত্তরণের প্রকল্প সমন্বয়কারী জাহিদ আমিন শ্বাশ্বত। সভায় মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনার মাধ্যমে সিইজিআইএস-এর প্রকৌশলী সিয়াম আলম ও পরামর্শক ড. মাহমুদা মোতাহারা বেতনা-মরিচ্চাপ অববাহিকার বর্তমান অবস্থা, সীমানা নির্ধারণ, এবং টিআরএম বাস্তবায়নের সম্ভাব্য সুফল ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন।
বক্তারা জানান, টিআরএম বাস্তবায়িত হলে প্রতি বছর প্রায় ৭৫ কোটি টাকার অর্থনৈতিক সুফল পাওয়া সম্ভব। এতে জলসম্পদের উন্নয়ন, কৃষি উৎপাদন ও মৎস্য আহরণ বৃদ্ধি পাবে, পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে। শুধু কৈখালী ও তেঁতুলিয়া বিল থেকেই প্রায় ৩০ কোটি টাকার অতিরিক্ত কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন সম্ভব বলে তারা উলে­খ করেন।
তারা আরও বলেন, সা¤প্রতিক সময়ে বেতনা নদী খনন করা হলেও টিআরএম বাস্তবায়ন না হলে অল্প সময়ের মধ্যেই নদীটি আবারও পলি জমে ভরাট হয়ে যাবে। জোয়ার-ভাটার প্রাকৃতিক প্রবাহের মাধ্যমে নদীর পলি নিচু বিলাঞ্চলে সরিয়ে নদীর নাব্যতা রক্ষা ও জমির উর্বরতা বৃদ্ধি এই দুই লক্ষ্যই টিআরএম পদ্ধতির মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব। বক্তাদের মতে, সরকারের ডেল্টা প্লান অনুযায়ি ২১০০-তেও জোয়ার-ভাটার নদী ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে টিআরএম বাস্তবায়নের সুপারিশ রয়েছে। তাই শুধু খনন বা অবকাঠামো নির্মাণ নয়, টিআরএম-ই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনের একমাত্র টেকসই সমাধান।