খুলনা | রবিবার | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

সাতক্ষীরায় নির্বাচনী ইশতিহার নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা |
১১:৫২ পি.এম | ০৯ অক্টোবর ২০২৫


সাতক্ষীরায় নির্বাচনী ইশতিহার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এক সংলাপ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় তুফান কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। একশনএইড বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় এফরটি প্রকল্পের আওতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিডো এই সংলাপের আয়োজন করে। 
সিডো সংস্থার প্রধান নির্বাহী শ্যামল কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সংলাপে সাতক্ষীরার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় স্থানীয় উন্নয়নে চাহিদা নিয়ে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের আমির উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, জেলা সেক্রেটারী মাওলানা আজিজুর রহমান, জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু, যুগ্ম-আহবায়ক আবুল হাসান হাদি, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ডাঃ আবুল কালাম বাবলা, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ফরিদা আক্তার বিউটি, শহর জামায়াতের নায়েবে আমির ফকরুল হাসান লাভলু প্রমুখ। 
একশনএইড বাংলাদেশ এর ডেপুটি ম্যানেজার (প্রোগ্রাম এন্ড পার্টনারশিপ) আরিফ সিদ্দিকী কর্মসূচির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বর্ণনা করে বলেন, বাংলাদেশ বরাবরই তরুণদের ক্ষমতায়ন, গণতান্ত্রিক চর্চা ও ন্যায্য উন্নয়নের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। এই সংলাপের মাধ্যমে স্থানীয় তরুণদের মতামত জাতীয় পর্যায়ের আলোচনায় যুক্ত হবে।
যুব নেতৃত্বে জাতীয় নির্বাচনী ইশতেহারে সাতক্ষীরার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় স্থানীয় উন্নয়নে চাহিদা নিরূপণ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সাতক্ষীরা ইয়ূথ হাবের সভাপতি সাকিব হাসান। নির্বাচনী ইশতেহারের উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় পর্যায়ে এফজিডি ও কেআই আই মাধ্যমে দাবিগুলো চিহ্নিত করে ইউনিয়ন ও উপজেলা কনসালটেশন মিটিংয়ে উপস্থাপন করা। এছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ের চাহিদাগুলোর সাথে উপস্থিতিদের চাহিদা একত্রিত করে একটা শক্তিশালী চাহিদা সনদ তৈরী করে জেলা পর্যায়ে সংলাপ করা। স্থানীয় পর্যায়ে সুপারিশ সমূহ ছিল দুর্যোগ প্রস্তুতি ও জরুরি সাড়া প্রদান, নিরাপদ পানীয় জল, দুর্যোগ সহনশীল ও অন্তভর্‚ক্তিমুলক অবকাঠামো, জলবায়ু সহনশীল টেকসই কৃষি, সামাজিক সুরক্ষা ও অন্তভর্‚ক্তি, দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক সংহতি, সাইবার নিরাপত্তা, সম্পদ বন্টন ও জবাবদিহিতা, সর্বজনীন ও সমতাভিত্তিক শিক্ষা, ন্যায্য ও নবায়নযোগ্য শক্তি, স্বাস্থ্যসেবা ও ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে জরুরি রাস্তা-ঘাটের সংস্কার। 
একই সাথে সুন্দরবন কেন্দ্রিক টেকসই ইকোট্যুরিজম প্রতিষ্ঠা, সুন্দরবনের পরিবেশ ও সম্পদ সংরক্ষণ ও পর্যটন বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই ইকোট্যুরিজম ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সাতক্ষীরা বিজ্ঞান ও প্রযুুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা জেলার শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষা সুবিধা দেবে। রেল সংযোজন সাতক্ষীরা জেলা দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে বৈষম্যের শিকার। সাতক্ষীরাকে দেশের রেল নেটওয়ার্কে অর্ন্তভুক্ত করতে হবে। যা জেলা ও দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় উপক‚লীয় এলাকায় দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হবে। সাতক্ষীরায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম ও ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হোক। সীমান্তে মাদক প্রতিরোধে প্রযুক্তি নির্ভর নজরদারী ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি। স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দরে রূপান্তর, সাতক্ষীরার ভোমরাকে একটি আধুনিক আন্তর্জাতিক মানের স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসা-বানিজ্য বৃদ্ধি করতে হবে। নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পৌরসভার ব্যবস্থাপনা। সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি উন্নয়নে রাজনৈতিক প্রতিশ্র“তি সুন্দরবন বাঁচাতে জীবাশ্ম জ্বালানীকে পরিবর্তে নবায়ন যোগ্য জ্বালানী সংযোজন, জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল কৃষি ব্যবস্থাপনা, সবুজ উদ্যোক্তা তৈরী করার জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণাগার তৈরী করতে হবে। প্রাণসায়ের খালের দুই ধার সৌন্দর্যমন্ডিত করা। 
বেতনা যুব উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি মাসুদ রানার সঞ্চালনার এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রোগ্রাম অফিসার চন্দ্র শেখর হালদার, ইয়ূথ পিয়ার গ্র“প ফ্যাসিলিটেটর, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, শিক্ষক, নাগরিক কমিটির সদস্য, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, এনজিও, সাংবাদিকবৃন্দ।